মঙ্গলবার, ২৫ জুলাই, ২০২৩ ০০:০০ টা

অবশেষে অ্যাকশনে সিলেট মেয়র

দায়িত্ব পালনের শেষ দিন পর্যন্ত নগরবাসীর সেবা করার ঘোষণা

শাহ্ দিদার আলম নবেল, সিলেট

চলতি বছরের নভেম্বর মাসে দায়িত্ব ছাড়বেন সিলেট সিটি করপোরেশনের বর্তমান মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। তাঁর স্থলাভিষিক্ত হবেন নবনির্বাচিত মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী। শেষ সময়ে এসে কিছুটা ঢিলেঢালাভাব পরিলক্ষিত হচ্ছিল মেয়র আরিফের। পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা, হকার উচ্ছেদ, যানজট নিরসন ও ফুটপাত দখলমুক্ত রাখাসহ নাগরিক সেবা নিয়ে আগের মতো কঠোর হতে দেখা যায়নি তাঁকে। ফলে নির্বাচনের পর থেকে সিলেট পরিণত হয় জঞ্জালের নগরীতে। বাড়তে থাকে জনদুর্ভোগ। তবে অবশেষে হকার উচ্ছেদ করে ফুটপাত দখলমুক্তকরণের মাধ্যমে যানজট নিরসনে ‘অ্যাকশনে’ নেমেছেন আরিফ। গতকাল থেকে তিনি শুরু করেছেন অভিযান। নাগরিক সেবা নিশ্চিতে অভিযান অব্যাহত রাখারও ঘোষণা দিয়েছেন তিনি।

সিলেট সিটি নির্বাচনে অংশ নেননি বর্তমান মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। নির্বাচনে মেয়র নির্বাচিত হন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী। ইতোমধ্যে আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী মেয়র হিসেবে শপথও নিয়েছেন। তবে বর্তমান পরিষদের মেয়র থাকায় তিনি এখনো দায়িত্ব নিতে পারেননি। আগামী নভেম্বর মাসের শুরুতে তাঁর মেয়রের দায়িত্ব নেওয়ার কথা রয়েছে। এর আগ পর্যন্ত মেয়র হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন বর্তমান মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী।

নির্বাচনের পর থেকে আরিফুল হক চৌধুরী অনেকটা গাছাড়াভাব নিয়ে নগর ভবন পরিচালনা করছিলেন। এই সুযোগে সিলেট নগরীর ব্যস্ততম সব সড়কের পাশের ফুটপাত ও রাস্তার অর্ধেক পর্যন্ত দখল করে নেন হকাররা। এতে যানজট নগরবাসীর নিত্যদিনের ভোগান্তিতে পরিণত হয়। গত ঈদুল আজহায় বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের লাগানো ব্যানার, ফেস্টুন ও বিলবোর্ডে নগরী ছেয়ে গেছে। এ ছাড়া বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কর্মসূচিকে কেন্দ্র করেও বিপুল পরিমাণ ব্যানার ফেস্টুন টানানো হয়। রাস্তার পাশ ও ডিভাইডারের মধ্যকার খাম্বাগুলোতে ঝুলছিল প্রচার সামগ্রী। সবমিলিয়ে পুরো সিলেট জঞ্জালের নগরীতে পরিণত হয়। নগরীর এই বিশৃঙ্খল অবস্থা নিয়ে নগরবাসীর মধ্যে ক্ষোভের সঞ্চার হয়। অনেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। শেষ সময়ে এসে মেয়র আরিফ নগরীর হাল ছেড়ে দিয়েছেন এমন সমালোচনাও চলতে থাকে ফেসবুকে। তবে শেষ পর্যন্ত সব সমালোচনা উড়িয়ে দিয়ে গতকাল নগরীতে হকার এবং ব্যানার-ফেস্টুন উচ্ছেদ শুরু করেন মেয়র আরিফ। দুপুরে আরিফুল হক চৌধুরী নিজেই নগর ভবনের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিয়ে মাঠে নামেন। নগরীর সুরমা মার্কেট পয়েন্ট (নাগরী চত্বর) থেকে শুরু করেন উচ্ছেদ কার্যক্রম।

 প্রথমে ফুটপাত ও রাস্তা থেকে হকার উচ্ছেদ করেন। এ সময় জিন্দাবাজারসহ কয়েকটি স্থানে দোকানের সামনের ফুটপাত ব্যবসায়ীরা দখল করে রেখেছেন দেখে ক্ষোভ প্রকাশ করেন মেয়র আরিফ। এ নিয়ে কয়েকজন ব্যবসায়ীর সঙ্গে তাঁর বাকবিতন্ডাও হয়। সুরমা মার্কেট পয়েন্ট থেকে চৌহাট্টা পর্যন্ত তিনি হকার উচ্ছেদ করেন। দীর্ঘদিন পর নগরীর ব্যস্ততম এই সড়ক থেকে হকার উচ্ছেদ হওয়ায় গতকাল ওই সড়কে যানজটও ছিল না। এরপর তিনি ব্যানার- ফেস্টুন ও বিলবোর্ড খোলার কাজ শুরু করেন। বিকাল পর্যন্ত চলে এই কার্যক্রম।

এ প্রসঙ্গে সিলেট সিটি মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, ‘১১ দিন আমি সিলেট ছিলাম না। সিলেটের বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প নিয়ে ঢাকায় অবস্থান করছিলাম। ফিরে এসে দেখি সিলেট নগরী বিশৃঙ্খল অবস্থায় আছে। আমি না থাকলেও নগর ভবনের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা নাগরিক দুর্ভোগ লাঘবে কাজ করতে পারতেন। প্রয়োজনে তাঁরা ফোনে আমার পরামর্শ নিতেন। কিন্তু তাঁরা তা করেননি। ফলে নগরবাসীকে অনেক দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে। এখন থেকে নিয়মিত উচ্ছেদ অভিযান চলবে। দায়িত্ব পালনের শেষ দিন পর্যন্ত নগরবাসীর সেবা করে যাব।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর