বৃহস্পতিবার, ২৭ জুলাই, ২০২৩ ০০:০০ টা

ডেঙ্গু পরীক্ষায় কমিশন বাণিজ্য, নানা ভোগান্তি

নিজস্ব প্রতিবেদক, খুলনা

খুলনার সরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা রোগীদের ডেঙ্গু পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয় বেসরকারি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে। খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসকরা ডেঙ্গু ও রক্তের প্লাটিলেট পরীক্ষার জন্য শর্টস্লিপে ডায়াগনস্টিক সেন্টারের নাম মোবাইল নম্বর লিখে রোগীদের দিচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এতে বাইরে থেকে অতিরিক্ত অর্থ ব্যয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষায় ভোগান্তিতে পড়ছেন রোগী ও তাদের স্বজনরা। খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রতিনিয়ত ভর্তি করা ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। জানা যায় যে, এসব রোগীকে জিম্মি করে পরীক্ষা-নিরীক্ষার কমিশন বাণিজ্যে জড়িয়েছেন চিকিৎসকরা। হাসপাতালে সব ধরনের প্যাথলজির সুযোগ থাকলেও রোগীদের বেসরকারি ক্লিনিক ডায়াগনস্টিক থেকে পরীক্ষা-নিরীক্ষায় বাধ্য করা হয়।

গতকাল খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রোগীদের কাছে রেডিয়েন্স, জেনারেল, আনোয়ারাসহ বিভিন্ন ডায়াগনস্টিক সেন্টারের ডেঙ্গু পরীক্ষার রিপোর্ট দেখা যায়। রোগীরা জানান, চিকিৎসক যখন রাউন্ডে আসেন তখন টেস্ট স্লিপ লিখে দেন। ওই সময় আলাদা শর্টস্লিপে ডায়াগনস্টিক সেন্টারের নাম ও মোবাইল নম্বর লিখে সেখান থেকেই পরীক্ষা করার জন্য বলা হয়।

সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন)-এর জেলা সম্পাদক অ্যাডভোকেট কুদরত-ই খুদা জানান, দীর্ঘদিন ধরেই খুলনায় সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসকরা পরীক্ষা-নিরীক্ষায় কমিশন বাণিজ্যে জড়িয়েছেন। এতে রোগীরা সরকারি হাসপাতালের সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত হয়। সেই সঙ্গে অতিরিক্ত অর্থ ব্যয়ে ভোগান্তিতে পড়েন। অন্যদিকে খুলনায় হঠাৎ ডেঙ্গু রোগী বৃদ্ধি ও চিকিৎসায় ভোগান্তিতে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন নাগরিক সংগঠন বৃহত্তর খুলনা উন্নয়ন সংগ্রাম সমন্বয় কমিটির নেতারা। সংগঠনের সভাপতি শেখ আশরাফ-উজ্জামান মশার প্রজননস্থান ধ্বংস, এডিস মশার লার্ভা নির্মূলসহ পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা বজায় রেখে মশক নিধনে ফগার মেশিন ব্যবহারের জন্য সিটি করপোরেশনের প্রতি আহ্বান জানান। তবে কেসিসির কনজারভেন্সি অফিসার আনিসুর রহমান জানান ডেঙ্গুর প্রকোপ কমাতে বিশেষ অভিযানে সিটি করপোরেশনের স্বাস্থ্য বিভাগ, ভেটেরিনারি, এস্টেট, এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট ও কনজারভেন্সি শাখা যৌথভাবে কাজ করছে। মশার প্রজনন স্থল পাওয়া গেলে সঙ্গে সঙ্গেই ধ্বংস করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, বিশেষ অভিযানে ৯ নম্বর ওয়ার্ডের বাস্তুহারা এলাকা, ১৩ নম্বর ওয়ার্ডে খ্যামা বস্তি ও ২২ নম্বর ওয়ার্ডের নতুন বাজার বস্তি মশার উৎপত্তি স্থল হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। পর্যায়ক্রমে বিভিন্ন ওয়ার্ডে অভিযান চালানো হবে।

জানা যায়, খুলনায় এবার ভয়াবহ আকারে ডেঙ্গু ছড়িয়ে পড়েছে। বিভাগে ১০ জেলায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে এ পর্যন্ত হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ১ হাজার ৩৫৬ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন রোগী ভর্তি হন ১০৩ জন। ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে এ পর্যন্ত মারা গেছেন চারজন।

 

 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর