মঙ্গলবার, ১ আগস্ট, ২০২৩ ০০:০০ টা

শ্রমিক লীগ নেতার ফ্ল্যাটেই গুলিবিদ্ধ মানিক

ধামাচাপা দিতে ছিনতাইয়ের নাটক

নিজস্ব প্রতিবেদক

রাজধানীর শান্তিনগরে কর্ণফুলী গার্ডেন সিটির সামনে রবিবার বিকালে মানিক (৪৫) নামে সাবেক শ্রমিক লীগ নেতা গুলিবিদ্ধ হন বলে অভিযোগ পাওয়া যায়। তবে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) তদন্তে দেখা গেছে, মানিক শ্রমিক লীগ নেতা ইসমাইল হোসেন বাচ্চুর ফ্ল্যাটে গুলিবিদ্ধ হয়েছিলেন। এ ঘটনা ধামাচাপা দিতে ইসমাইল হোসেন বাচ্চু ও তার বাসার কর্মী মহিউদ্দিন রুবেল ছিনতাইয়ের নাটক সাজান। গতকাল তাদের তিনদিন করে রিমান্ডে নিয়েছেন তদন্ত কর্মকর্তা। ডিবি সূত্র বলছে, মানিক গুলিবিদ্ধ হওয়ার ঘটনা ছিনতাই ছিল না। মানিক গুলিবিদ্ধ হন শ্রমিক লীগ নেতা ইসমাইল হোসেন বাচ্চুর বাসায়। বাসা থেকে গুলিবিদ্ধ মানিককে হাসপাতালে নিয়ে যান ইসমাইল।

ডিবি রমনা বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) হুমায়ুন কবীর বলেন, আসল ঘটনা ধামাচাপা দিতে ছিনতাইয়ের নাটক সাজানো হয়। এ ঘটনায় আমরা ইসমাইল হোসেন ও তার বাসার কর্মী মহিউদ্দিন রুবেলকে গ্রেফতার করেছি। তাদের তিনদিন করে রিমান্ডে আনা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদের পর আসল ঘটনা বেরিয়ে আসবে। তবে প্রাথমিকভাবে তারা জানিয়েছেন, পিস্তল নাড়াচাড়া করতে করতে গুলি বেরিয়ে মানিকের শরীরে লেগেছে।

পুলিশ জানায়, ইসমাইল হোসেন বাচ্চু ঢাকার শাহবাগ থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সহসভাপতি। তিনি আগামী কমিটিতে সভাপতি পদপ্রার্থী। এ ছাড়া তিনি পরিবহন মালিক শ্রমিক ঐক্যলীগের সভাপতি। রবিবার বিকালে রমনা এলাকায় গুলির খবর পায় পুলিশ। তখন ইসমাইলই পুলিশকে বলেন, কর্ণফুলী গার্ডেন সিটির সামনে গুলির ঘটনা ঘটেছে।

ডিবির তদন্ত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ইসমাইল হোসেনের বাসার নিরাপত্তাকর্মী ও আশপাশের লোকজনকে জিজ্ঞাসা করে প্রাথমিকভাবে এ ঘটনা সম্পর্কে জানা গেছে। নিরাপত্তাকর্মী পুলিশকে জানায়, ইসমাইলই মানিককে কোলে করে বাসার নিচে নিয়ে আসেন। গাড়িতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নিয়ে যান। রমনার বেইলি রোডের পাশে লেক ভিউ অ্যাপার্টমেন্টে ইসমাইলের বাসা। পুলিশ ইসমাইলের পিস্তল ও গুলি জব্দ করেছে। যে গাড়িতে গুলিবিদ্ধ মানিককে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছিল তাও জব্দ করা হয়েছে। শুরুতে পুলিশকে বিভ্রান্ত করতে চাইলেও গ্রেফতারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ইসমাইল দাবি করেন, তার লাইসেন্স করা পিস্তল পরিষ্কার করছিলেন মহিউদ্দিন। এ সময় অসাবধানতাবশত ঘটনাটি ঘটে। মহিউদ্দিনও একই বক্তব্য দিয়েছেন।

লেক ভিউ অ্যাপার্টমেন্টের তত্ত্বাবধায়ক রমজান আলী গতকাল গণমাধ্যমকে জানান, তিনি গুলির শব্দ শোনেননি। তবে মানিককে আহত অবস্থায় নিয়ে যেতে দেখেছেন। ইসমাইলের পরিবারের সদস্যরা থাকেন যুক্তরাষ্ট্রে। ইসমাইলের পরিবহন ব্যবসা দেখাশোনা করতেন মানিক। তিনি প্রায় প্রতিদিনই ইসমাইলের ফ্ল্যাটে আসতেন।

 

 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর