বুধবার, ২ আগস্ট, ২০২৩ ০০:০০ টা

জাবিতে লেগুনা আটকে রেখে লক্ষাধিক টাকা চাঁদা আদায়!

ছাত্রলীগ নেতার ভিডিও ফাঁস

জাবি প্রতিনিধি

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) ২৪টি লেগুনা চার দিন আটকে রেখে লক্ষাধিক টাকা চাঁদা আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। অভিযুক্ত জাবি ছাত্রলীগের ১ নম্বর সহসভাপতি সাজ্জাদুর রহমান সাজ্জাদ বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৩-১৪ শিক্ষাবর্ষের (৪৩তম ব্যাচ) সাবেক শিক্ষার্থী। ক্যাম্পাসে সাজ্জাদ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি আকতারুজ্জামান সোহেলের অনুসারী বলে পরিচিত। চাঁদা আদায়ের একটি ভিডিও ফুটেজ এই প্রতিবেদকের কাছে রয়েছে। অবশ্য অভিযুক্তরা ভিডিও ফুটেজটি পুরনো উল্লেখ করে নিজেদের নির্দোষ দাবি করেছেন। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, হেমায়েতপুর থেকে আশুলিয়া ও বিরুলিয়া রুটে চলাচলকারী লেগুনাগুলোকে এক বছর ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ের মীর মশাররফ হোসেন হল সংলগ্ন গেট দিয়ে ইউটার্ন নেওয়ার জন্য লেগুনাপ্রতি দৈনিক ২৫ টাকা করে জাবি শাখা ছাত্রলীগকে চাঁদা দিতে হতো। তবে গত দুই মাসে চাঁদা না দেওয়ায় ২৫ জুলাই ২৪টি লেগুনা আটক করেন মীর মশাররফ হোসেন হল ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। তখন তারা লেগুনাপ্রতি দৈনিক ১০০ টাকা করে চাঁদা দাবি করেন। টানা চার দিন দেনদরবার শেষে ১ লাখ ৩০ হাজার টাকায় লেগুনাগুলো ছেড়ে দেওয়ার চুক্তি হয়। এ সময় আটক ২৪টি লেগুনা ছাড়িয়ে নেওয়ার জন্য ছাত্রলীগকে ২০ হাজার টাকা নগদ দেওয়া হয় বলে জানিয়েছেন এক লেগুনা মালিক। এদিকে দুই মিনিট ১৫ সেকেন্ডের ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, মওলানা ভাসানী হলের দ্বিতীয় তলায় মসজিদের সামনে আগে থেকেই শাখা ছাত্রলীগের সহসভাপতি সাজ্জাদুর রহমান সাজ্জাদ অপেক্ষা করছিলেন। সেখানে চাঁদার টাকা নিয়ে আসেন লেগুনা চলাচল নিয়ন্ত্রণকারী মিন্টু গাজী ও ফজা। পরে মিন্টু গাজী সাজ্জাদের হাতে তিন বান্ডিল টাকা তুলে দেন। চাঁদা দেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে বিরক্ত হন লেগুনার মালিক ফজা। তিনি বলেন, ‘লেগুনা চালানো বাদ দিতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগকে টাকা দিতে হয়। তবে ভিডিওটি গত বছরের নভেম্বরের দাবি করে সাজ্জাদুর রহমান সাজ্জাদ বলেন, ‘মিন্টু গাজীর সঙ্গে আমার ব্যবসায়িক সম্পর্ক রয়েছে। সে হিসেবে সে আমাকে ওই টাকা দেয়। যার তথ্যপ্রমাণ আমার কাছে রয়েছে। এর সঙ্গে লেগুনার চাঁদা আদায়ের সম্পর্ক নেই। এ অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা।’

এস এম দিদারুল আলম দ্বীপ বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে, সেটা মিথ্যা। আমি জড়িত থাকলে তো আমারও ভিডিও ফাঁস হতো। যেহেতু সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গে আমার ভালো সম্পর্ক, সেহেতু বিতর্কিত করতে হয়তো মিথ্যা তথ্য ছড়ানো হচ্ছে।’

এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনানকে একাধিকবার কল করা হলেও তারা রিসিভ করেননি। এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ সভাপতি আকতারুজ্জামান সোহেল ও সাধারণ সম্পাদক মো. হাবিবুর রহমান লিটনের বক্তব্যও পাওয়া যায়নি।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর