বৃহস্পতিবার, ৩ আগস্ট, ২০২৩ ০০:০০ টা

স্মার্ট সিটির পথে চট্টগ্রাম

জেলা প্রশাসনের উদ্যোগ

রেজা মুজাম্মেল, চট্টগ্রাম

শিক্ষার্থীদের দেওয়া হবে একটি স্মার্টকার্ড। ওঠা-নামার সময় সেটি বাসে থাকা ডিজিটাল হাজিরা ডিভাইসে প্রদর্শন করতে হবে। স্বয়ংক্রিয়ভাবেই অভিভাবকের কাছে চলে যাবে খুদে বার্তা ‘আপনার সন্তান বাসে উঠেছে/নেমেছে’। এর মাধ্যমে অভিভাবকরা অবগত থাকবে নিজের সন্তানের অবস্থান।

এভাবে স্মার্ট চট্টগ্রাম রূপান্তরের অংশ হিসেবে ‘স্মার্ট স্কুল বাস’ চালু করা হচ্ছে। শিক্ষার্থীদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠিয়ে অভিভাবকদের দুশ্চিন্তা নিরসনে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন স্মার্ট স্কুল বাস চালুর উদ্যোগ নেয়। প্রাথমিকভাবে নগরের শিক্ষার্থীদের যাতায়াতে প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া ১০টি দ্বিতল বাস ব্যবহার করা হবে। বাসগুলোকে রূপান্তর করা হবে স্মার্ট বাসে। পরে বাড়ানো হবে বাসের সংখ্যা। এর মাধ্যমে স্মার্ট সিটি বাস্তবায়নের পথে এগোচ্ছে চট্টগ্রাম। একই সঙ্গে বাস্তবায়নের পথে আছে আরও নানা উদ্যোগ। চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান বলেন, কথা নয়, কাজ দিয়েই আমরা চট্টগ্রামকে দেশের প্রথম স্মার্ট সিটি হিসেবে বাস্তবায়ন করব। নগরে শিগগিরই চালু হবে স্মার্ট স্কুল বাস, চলছে পর্যটক বাস সার্ভিস ও হাফ ডে-ফুল ডে পর্যটক মাইক্রো বাস সার্ভিস, ১৯১ ইউনিয়নে চলছে খেলার মাঠ বাস্তবায়নের কাজ, ২০২৩ সালকে কেন্দ্র করে লাগানো হচ্ছে ২৩ লাখ গাছ, ফৌজদারহাটে মাদকের আস্তানা উচ্ছেদ করে ফুল উৎসব ও ডিসি পার্ক নির্মাণ, আউটার স্টেডিয়ামের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে মাঠটি খেলার জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়, পরিবেশ রক্ষায় পলিথিন বন্ধে নিয়মিত চলছে অভিযান, স্মার্ট স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতে পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের সঙ্গে সমন্বয়ে মা’দের জন্য নেওয়া হচ্ছে নানা পরিকল্পনা। এসব উদ্যোগের মাধ্যমে চট্টগ্রামকে দেশের প্রথম স্মার্ট সিটিতে রূপান্তর করা হচ্ছে। জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, স্মার্ট স্কুল কার্ডে শিক্ষার্থীদের দেওয়া কার্ডে টাকা রিচার্জ করা যাবে। সেখান থেকেই স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভাড়া কেটে নেওয়া হবে। বাসের আইপি ক্যামেরার অ্যাড্রেস অভিভাবকদের দেওয়া হবে। অভিভাবকরা নিজেই বাসে তাদের সন্তানদের দেখতে পাবেন। বাসে থাকবে জিপিএস ট্র্যাকার, জিআইএস প্রযুক্তি, ডিজিটাল হাজিরা ডিভাইস ও আইপি ক্যামেরা। চলতি মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে পরীক্ষামূলকভাবে বাসগুলো চালুর কথা। অন্যদিকে, গত ১০ জুন থেকে চালু করা হয় পর্যটক বাস। নগরের নিউমার্কেট থেকে ফৌজদারহাট ডিসি পার্ক হয়ে পতেঙ্গা সমুদ্রসৈকত পর্যন্ত চলাচল করছে বাসগুলো। বাসে আছে ওয়াইফাই সংযোগ ও সিসিটিভি ক্যামেরা। প্রতিদিন দুটি বাস থাকলেও প্রতি শুক্র-শনিবার বেড়ে যায় পর্যটকের সংখ্যা। তাই বিআরটিসির দ্বিতল স্কুল বাসও পর্যটক পরিবহন করে। তাছাড়া, চট্টগ্রামের ১৫ উপজেলার ১৯১টি ইউনিয়নে চলছে খেলার মাঠ তৈরির কাজ। ইতোমধ্যে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও সহকারী কমিশনাররা (ভূমি) খেলার মাঠের জায়গা নির্ধারণ করেছেন। পর্যায়ক্রমে সেখানে ইউনিয়ন স্পোর্টস ও কালচারাল সেন্টার নির্মাণ করা হবে। ফলে আগামী এক বছরে ইউনিয়নে ১৯১টি খেলার মাঠ তৈরি হবে। অন্যদিকে, চট্টগ্রামেই প্রথম বাস্তবায়ন করা হচ্ছে স্মার্ট আশ্রয়ণ প্রকল্প। পটিয়ার হাইদগাঁও আশ্রয়ণকে নির্বাচন করে সেখানে সোলার প্যানেল, ট্যাপড ওয়াটার, পুকুর খনন, বৃষ্টির পানি সংরক্ষণ, সবুজায়ন, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, শতভাগ স্যানিটেশনসহ নানা উদ্যোগ বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। তাছাড়া, চালু করা হয়েছে ফুল ডে ও হাফ ডে ট্যুর সার্ভিস। এ সার্ভিসের মাধ্যমে পর্যটকরা পরিবার নিয়ে নির্দিষ্ট প্যাকেজে চট্টগ্রামের সীতাকুন্ড ইকোপার্ক (সুপ্তধারা ও সহস্রধারা ঝরনা), গুলিয়াখালী সমুদ্রসৈকত, মহামায়া লেক এবং ডিসি পার্কে ভ্রমণ করছেন। আছে দুপুর ও রাতের খাবার। প্রাথমিকভাবে চারটি মাইক্রোবাস সপ্তাহে দুই দিন নগরের স্টেশন রোডের মোটেল সৈকতের সামনে থেকে ছাড়বে।

 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর