সোমবার, ৭ আগস্ট, ২০২৩ ০০:০০ টা

স্যালাইন সংকট কাটাতে বরাদ্দ পাচ্ছে হাসপাতালগুলো

নিজস্ব প্রতিবেদক

ডেঙ্গু জ্বরের চিকিৎসায় সবচেয়ে বেশি ব্যবহার করা হচ্ছে তরল স্যালাইন। অনেক হাসপাতালে এ স্যালাইনের সংকট দেখা দিয়েছে। এ পরিস্থিতি মোকাবিলায় হাসপাতালগুলোকে নতুন করে অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এ বি এম খুরশিদ আলম। গতকাল রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে বিশ্ব মাতৃদুগ্ধ সপ্তাহ ২০২৩-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ডা. এ বি এম খুরশিদ আলম বলেন, সরকারি কোম্পানি ইডিসিএল আমাদের স্যালাইন সরবরাহ করার কথা। কিন্তু বর্তমানে বাজারে চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় ইডিসিএল তা সম্পূর্ণভাবে সরবরাহ করতে পারছে না। আমরা এ বিষয়ে প্রতিটি হাসপাতালকে নির্দেশনা দিয়েছি এবং অর্থ বরাদ্দ দিয়ে দিয়েছি। হাসপাতালগুলো এখন লোকাল মার্কেট থেকে স্যালাইন কেনার ব্যবস্থা নেবে। বাজার নিয়ন্ত্রণ করার দায়িত্ব তো আর আমাদের নয়। বাজার নিয়ন্ত্রণ করার দায়িত্ব যাদের তারাই করবে।’ ডেঙ্গু পরীক্ষার কিটের দামও বেড়েছে, এ বিষয়ে কী বলবেন- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বেশি দাম দিয়ে কারা কোথা থেকে কিনছে এ তথ্য আমার জানা নেই। কিন্তু আমাদের পর্যাপ্ত কিট রয়েছে। আমরা সব জায়গায় ডেঙ্গু পরীক্ষার ব্যবস্থা রেখেছি। আমাদের প্রতিটি হাসপাতালে যথেষ্ট পরিমাণে কিট দেওয়া হয়েছে এবং পর্যাপ্ত পরিমাণ কিট মজুদ আছে। লোকজনকে তো আমাদের কাছে আসতে হবে।’

স্বাস্থ্যসেবা সচিব ড. মু. আনোয়ার হোসেন হাওলাদার বলেন, এবার ডেঙ্গু আশঙ্কাজনকভাবে বেড়েছে। ডেঙ্গু যে বাড়তে পারে তা আগে থেকেই আমরা আশঙ্কা করেছিলাম। তাই পর্যাপ্ত প্রতিরোধ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য আগে থেকে স্থানীয় কর্তৃপক্ষকে বলেছি। তারা অনেকগুলো ব্যবস্থা নিয়েছে। লক্ষ্য করা গেছে, ডেঙ্গু অনেক জেলায় ছড়িয়ে পড়েছে। অতি মাত্রায় ছড়িয়ে যাওয়ার কারণে রোগীর সংখ্যাও বৃদ্ধি পেয়েছে। বিগত বছরগুলোতে দেখা যেত এটা মহানগরকেন্দ্রিক বেশি ছিল। কিন্তু এখন গ্রাম-গঞ্জেও ঢুকে পড়েছে। এটিই হচ্ছে বড় সমস্যা।

সে কারণে রোগীর সংখ্যাটা বেশি।

তিনি বলেন, ঢাকায় কিছু কিছু জায়গা রয়েছে যেখানে ডেঙ্গুর প্রকোপ বেশি। বিশেষ করে মুগদা অঞ্চলে ডেঙ্গুর প্রকোপ অনেক বেশি। এ বিষয়টি নিয়ে সিটি করপোরেশনের সঙ্গে আমাদের অনেকবার বসা হয়েছে। অন্য সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে মিলে আমরা ডেঙ্গু প্রতিরোধে কাজ করে যাচ্ছি। এ ছাড়া হাসপাতালে আমরা ডেঙ্গুর চিকিৎসা দিয়ে যাচ্ছি। তবে মুগদা হাসপাতালে চাপ একটু বেশি। কারণ মুগদা এলাকায় ডেঙ্গুর প্রকোপও বেশি। প্রতিদিন ডেঙ্গু আক্রান্ত অনেক রোগী আসছেন, আবার অনেক রোগী সুস্থ হয়ে রিলিজ নিয়ে চলে যাচ্ছেন। তবে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা আরও বাড়লে সমস্যা হয়ে যাবে।

ডেঙ্গুর বর্তমান পরিস্থিতি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় কীভাবে সামাল দেবে, বেশ কিছু হাসপাতালে অপ্রীতিকর ঘটনাও ঘটেছে- এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, অপ্রীতিকর ঘটনাগুলো ঘটে ধৈর্যহীন কিছু লোকের কারণে। যেমন মুগদা হাসপাতালে আমাদের ধারণক্ষমতার বাইরে লোকজন চলে এসেছে। তাদের খালি হাসপাতালগুলোয় যেতে বলা হয়েছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ রোগীদের বা স্বজনদের অন্য হাসপাতালে যেতে বললেই ঝামেলা ঘটে। রোগীরা তখন বলে মুগদা হাসপাতাল তাদের বাড়ির পাশে, এখানেই তারা ভর্তি হতে চান। সবাই যদি পরিস্থিতি বুঝে ব্যবস্থা ও চিকিৎসা নেন তাহলে কোনো সমস্যা হবে না।

হাসপাতালের সক্ষমতা বৃদ্ধির বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক বলেন, হাসপাতালের সক্ষমতা বৃদ্ধি করার জন্য ইতোমধ্যে বিভিন্ন জায়গায় দেড় হাজার বেড তৈরি করা হয়েছে। সমস্যা হচ্ছে, যে হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়ার সক্ষমতা ১ হাজার, সেখানে তো ২ হাজার করতে পারছি না।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর