সোমবার, ৭ আগস্ট, ২০২৩ ০০:০০ টা

ডেঙ্গু প্রতিরোধে শুভেচ্ছাদূত

নিজস্ব প্রতিবেদক, সিলেট

ডেঙ্গু প্রতিরোধে শুভেচ্ছাদূত

প্রতিদিন আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী। সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে চলছে সচেতনতামূলক প্রচারণা। কিন্তু এরপরও তৈরি হচ্ছে না জনসচেতনতা। বাসাবাড়িতে মিলছে এডিস মশার লার্ভা। রাস্তাঘাটে জমে আছে ময়লা-আবর্জনার স্তূপ। এ অবস্থায় ব্যতিক্রমী উদ্যোগ নিয়েছে ‘সিলেট এসএসসি মিলেনিয়াম ব্যাচ’ নামের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। সিলেট সিটি করপোরেশন ও সিলেট জেলা প্রেস ক্লাবের সহযোগিতায় তারা ডেঙ্গু প্রতিরোধ ও পরিচ্ছন্নতার ব্যাপারে জনসচেতনতা সৃষ্টির কাজে ‘শুভেচ্ছা দূত’ হিসেবে নিযুক্ত করেছে স্কুলের কোমলমতি শিক্ষার্থীদের। পাইলট প্রকল্প হিসেবে তারা বেছে নিয়েছে সিলেট মহানগরীর ২০ নম্বর ওয়ার্ডকে। গতকাল দুপুরে ওই ওয়ার্ডের সৈয়দ হাতিম আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নিয়ে তারা শুরু করেছে সচেতনতামূলক কার্যক্রম। শুরুতে ডেঙ্গু প্রতিরোধ ও পরিচ্ছন্নতার ব্যাপারে সচেতন করা হয় স্কুলের ১৩০০ শিক্ষার্থীকে। এরপর শিক্ষার্থীরা দায়িত্ব নেন তিন দিনের মধ্যে নিজেদের বাসাবাড়ি ও আঙিনা পরিচ্ছন্ন করার। এডিস মশা ডিম পাড়তে পারে এমন সব স্থান পরিচ্ছন্ন করে তারা নিজেদের বাসার দরজায় লাগাবেন ‘আবর্জনামুক্ত আমার আঙিনা, নির্মূল করেছি ডেঙ্গুর আস্তানা’ লেখা স্টিকার। শিক্ষার্থীরা দায়িত্ব নেয়, এখন থেকে তাদের বাসার কোনো ময়লা ছড়া-খাল, ড্রেন অর্থাৎ নির্ধারিত স্থানের বাইরে ফেলতে দেবে না। ছোটদের এই বড় দায়িত্ব গ্রহণের বিষয়টিকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন সচেতন মহল।

এ ব্যাপারে পরিবারের বড়দের নিজেরাই বুঝাবে, সচেতন করবে। শিক্ষার্থীদের নিয়ে সমাবেশ শেষে সৈয়দ হাতিম আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের আঙ্গিনা পরিচ্ছন্ন ও মশক নিধনের মাধ্যমে শুরু হয় পাইলট প্রকল্পের কাজ। এসময় স্কুলের পাশের একটি বাসার দেয়ালের ভেতর পাওয়া যায় এডিস মশার লার্ভা। পরে সিটি করপোরেশনের পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা সেগুলো ধ্বংস করেন।

এ প্রসঙ্গে ‘সিলেট এসএসসি মিলেনিয়াম ব্যাচ’র সমন্বয়ক আমজাদ হোসেইন চৌধুরী বলেন, ‘সিটি করপোরেশন ও জেলা প্রেসক্লাবের সহযোগিতায় আমরা পাইলট প্রকল্প হিসেবে ২০নং ওয়ার্ডে কাজ শুরু করেছি। আগামী ৩ মাস আমরা এই ওয়ার্ডে কাজ করবো। সপ্তাহের ৫ দিন ওয়ার্ডের প্রতিটি পাড়া-মহল্লায় পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম ও ২ দিন মশক নিধনের ঔষধ ছিটানো হবে। শিশুরাই আমাদের ভবিষ্যত। তাদেরকে সচেতন করা গেলে আমরা একটি সচেতন প্রজন্ম পাব। এই উদ্দেশ্য থেকে আমাদের এই কার্যক্রমে শিশুদের শুভেচ্ছা দূত হিসেবে নিযুক্ত করেছি। পাইলট প্রকল্প সফল হলে আমরা সিটি করপোরেশনকে এই পদ্ধতি অনুসরণের লিখিত প্রস্তাব দেব।

২০নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আজাদুর রহমান আজাদ বলেন, ‘নগরবাসীকে অনেকভাবেই সচেতন করার চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু যত্রতত্র ময়লা ফেলার মানসিকতা পরিবর্তন করা যাচ্ছে না। শিশুদের দিয়ে তাদের পরিবারকে সচেতন করার পরিকল্পনাটি খুবই চমৎকার ও কার্যকর হবে বলে আমি মনেকরি।’

সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘একটি পরিবারে সবচেয়ে বেশি স্পর্শকাতর সদস্য হচ্ছে শিশুরা। তারা যখন কোন বিষয়ে বায়না ধরে তখন পরিবারের বড়রা তা মানতে বাধ্য হন। আজকে যেসব শিশু শুভেচ্ছা দূতের দায়িত্ব নিয়েছে তারা যখন পরিবারে গিয়ে পরিস্কার পরিচ্ছন্নতার ব্যাপারে সবাইকে সচেতন থাকতে বলবে তখন অবশ্যই এর ইতিবাচক ফল আসবে।’

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর