সোমবার, ১৪ আগস্ট, ২০২৩ ০০:০০ টা

চট্টগ্রামে ক্ষতিগ্রস্ত সড়কে দুর্ভোগ

ছোট-বড় যানবাহনকে চলতে হচ্ছে ঝুঁকি নিয়ে, ঘটছে দুর্ঘটনা

রেজা মুজাম্মেল, চট্টগ্রাম

চট্টগ্রামে ক্ষতিগ্রস্ত সড়কে দুর্ভোগ

টানা বৃষ্টির পানি জমে জলাবদ্ধতায় ক্ষতবিক্ষত হয়ে গেছে চট্টগ্রামের বেশির ভাগ সড়ক -বাংলাদেশ প্রতিদিন

চট্টগ্রাম নগরের মুরাদপুর এলাকায় একটি অটোরিকশা পড়ে যায় গর্তে। গর্তে পড়ে সামনের চাকাটি বাঁকা হয়ে যায়। উপুড় হয়ে পড়ে গিয়ে হাতে আঘাত পান চালক। তবে অক্ষত ছিলেন যাত্রীরা। এভাবে নগরের অধিকাংশ সড়ক-উপসড়ক বৃষ্টির পানিতে ক্ষত-বিক্ষত হয়ে যায়। ফলে ছোট-বড় যানবাহনগুলোকে চলতে হচ্ছে ঝুঁকি নিয়ে। ঘটছে দুর্ঘটনা। ক্ষত-বিক্ষত ও দগদগে সড়ক দিয়ে চলতে গিয়ে ক্ষত হচ্ছে জীবন। নগরের সড়কগুলো সংস্কার করে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক)। চসিকের প্রকৌশল বিভাগ সূত্রে জানা যায়, টানা পাঁচ দিনের বৃষ্টিতে এবার নগরের ৪০ শতাংশ এলাকা ডুবে যায়। অনেক এলাকায় পানি ১০ থেকে ১২ ঘণ্টা পর্যন্ত জমে ছিল। পানির নিচে থাকায় নগরের প্রায় ৫১ কিলোমিটার সড়ক নষ্ট হয়। এর সঙ্গে ক্ষতি হয় আরও ২ দশমিক ১৯ কিমি নর্দমা এবং ১ দশমিক ৯৯ কিমি ফুটপাত। ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক, ফুটপাত ও নর্দমা সংস্কারে চসিক ৫৯ কোটি ৯৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা দরকার বলে মনে করছে। চসিকের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মুনিরুল হুদা বলেন, ৬ আগস্ট থেকে নগরের ক্ষতিগ্রস্ত সড়কগুলো পরিদর্শন করে একটি তালিকা করা হয়। বৃষ্টিতে প্রায় ৫১ কিমি সড়ক নষ্ট হয়। ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক মেরামতে প্রায় ৬০ কোটি টাকা খরচ হতে পারে। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের কাছে এ বরাদ্দ চাওয়া হবে। তবে জরুরি ভিত্তিতে সড়ক সংস্কারে রুটিন ওয়ার্ক চলমান আছে। সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, নগরের বহদ্দারহাট থেকে মুরাদপুর পর্যন্ত মধ্যবর্তী সড়ক উঁচু করা হয় ইটের টুকরো ও বালি দিয়ে। কিন্তু সেখানে এখন তৈরি হয়েছে ছোট-বড় গর্ত। সড়কজুড়ে কাদামাটি। হাঁটাও দায়। যানবাহন চলছে হেলেদুলে। এবারের বর্ষায় বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় কেবি আমান আলী সড়ক, জামাল খান সড়ক, শহীদ সাইফুদ্দিন খালেদ রোড, রয়েল রোড, কে সি দে রোড, খাজা রোড, চান মিয়া সড়ক, বায়েজিদ বোস্তামী সড়ক, হাটহাজারী (মুরাদপুর-অক্সিজেন) সড়ক, সার্সন সড়ক, ডিসি সড়ক, ওমর আলী মাতব্বর সড়ক, মাইজপাড়া সড়ক, পিলখানা সড়ক, জাকির হোসেন সড়ক, সুন্নিয়া মাদরাসা সড়ক, মোহাম্মদপুর সড়ক ও খতিবের হাট সড়ক। জানা যায়, প্রতি বছরই বর্ষা মৌসুমে নষ্ট হয় সড়ক। ২০২০ সালে বর্ষা মৌসুমে ক্ষতি হয় ১৭০ কিমি সড়ক। এগুলো সংস্কারে চাহিদা ছিল ৭০ কোটি টাকা। ২০২১ সালের বর্ষার প্রথম ১৭ দিনে ৩৬ দশমিক ২৭ কিলোমিটার সড়ক ক্ষতি হয়। এসব সড়ক সংস্কারে চাহিদা ছিল ৯১ কোটি ৭৫ লাখ টাকা।

২০২২ সালে ক্ষতিগ্রস্ত হয় প্রায় ১০০ কিমি সড়ক। সবচেয়ে বেশি সড়ক নষ্ট হয়েছিল ২০১৭ সালে, প্রায় ৩০০ কিমি। চসিক নিজস্ব অ্যাসপল্ট প্লান্টে তৈরি মিকশ্চার (ইট, বালি, সিমেন্ট, বিটুমিনের মিশ্রণ) দিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত সড়কের ছোট গর্ত ভরাট করে থাকে। চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটে চসিক এ কাজের জন্য বরাদ্দ রাখে ৭০ কোটি ৫০ লাখ টাকা। ২০২২-২৩ অর্থবছর এ খাতে খরচ করে ২৪ কোটি ৫৭ লাখ টাকা।

 

 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর