বৃহস্পতিবার, ১৭ আগস্ট, ২০২৩ ০০:০০ টা

শিক্ষার্থী-ব্যবসায়ী দ্বন্দ্বের অবসান হয়নি, বিপাকে রোগীরা

নিজস্ব প্রতিবেদক, খুলনা

খুলনা মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থী ও হাসপাতালের সামনে ওষুধ ব্যবসায়ীদের মধ্যে দ্বন্দ্বের অবসান হয়নি তিন দিনেও। দুই পক্ষই পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি পালনে অনড় রয়েছে। গতকাল খুলনায় মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তৃতীয় দিনের মতো কর্মবিরতি পালন করেন ইন্টার্ন চিকিৎসকরা। একইভাবে শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে পাল্টা হামলা ও ভাঙচুরের অভিযোগ তুলে হাসপাতালের সামনের সব ওষুধের দোকান বন্ধ রেখে বিক্ষোভ করেছেন ওষুধ ব্যবসায়ীরা। এদিকে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় অভিযুক্তরা গ্রেফতার না হওয়ায় ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা গতকাল কলেজের প্রশাসনিক ভবনের গেটে তালা ঝুলিয়ে দেন। ইন্টার্ন চিকিৎসকদের দাবির পক্ষে সমর্থন জানিয়ে ক্লাস বর্জন ও ক্যাম্পাসে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন শিক্ষার্থীরা। ইন্টার্ন চিকিৎসক, শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে একাত্মতা জানিয়েছেন বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েন (বিএমএ) খুলনার নেতারা। ইন্টার্ন চিকিৎসকরা হাসপাতালের মধ্যেই দ্রুত দুটি মডেল ফার্মেসি চালুর জন্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি জানিয়েছেন। দুই পক্ষের কর্মসূচিতে বিপাকে পড়েছেন হাসপাতালে ভর্তি রোগীরা। হাসপাতালে প্রায় দেড়শ ইন্টার্ন চিকিৎসক রোগী দেখা বন্ধ রেখেছেন। হাসপাতালের সামনের ওষুধের দোকান বন্ধ থাকায় ওষুধ কিনতে পারছেন না রোগীর স্বজনরা। গতকাল দুপুরে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন খুলনা মেডিকেল কলেজের উপাধ্যক্ষ ডা. মেহেদী নেওয়াজ। তিনি শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেন, ‘হামলার পর থেকে তোমাদের সঙ্গে আছি আমরা। তোমাদের চিকিৎসা করিয়েছি। থানায় মামলা করার জন্য সঙ্গে ছিলাম। পরবর্তী সময় তোমরা যেভাবে আমাদের চাইবে সেভাবে তোমাদের সঙ্গে থাকব।’

দুপুরে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে একাত্মতা জানিয়ে বিএমএ খুলনার সভাপতি ডা. বাহারুল আলম বলেন, যেহেতু থানায় লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়েছে আমরা চাই পুলিশ অচিরেই শিক্ষার্থীদের ওপর হামলায় জড়িতদের গ্রেফতার করবে। অপরদিকে হাসপাতালের সামনের দোকান বন্ধ রেখে পাল্টা সমাবেশে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছেন ওষুধ ব্যবসায়ীরা। শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে হামলা ও ভাঙচুরের অভিযোগ তুলে অবিলম্বে দোষীদের গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। তারা বলেন, হামলাকারীরা ব্যবসায়ী ও কর্মচারীদের মারধর করেছে। দোকান ভাঙচুর করেছে। হামলাকারীরা গ্রেফতার না হলে প্রশাসনকে এর জবাব দিতে হবে। জানা যায়, পরিস্থিতি শান্ত করতে দুই পক্ষের সঙ্গে বৈঠকে আগ্রহ দেখিয়েছেন স্থানীয় খুলনা-২ আসনের সংসদ সদস্য সেখ সালাউদ্দিন জুয়েল। গতকাল বিকালে হাসপাতালে ভর্তি আহত শিক্ষার্থীদের দেখার জন্য তার আসার কথা থাকলেও তিনি শেষ পর্যন্ত আসেননি। তবে রাতে দুই পক্ষকে নিয়ে বৈঠকের কথা রয়েছে। ইন্টার্ন চিকিৎসকদের সংগঠনের সভাপতি ডা. সাইফুল ইসলাম অন্তর জানান, সংসদ সদস্য বৈঠকের আহ্বান জানিয়েছেন। কিন্তু আমরা চাই আগে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলাকারীরা গ্রেফতার হোক। তারা গ্রেফতার হলে তারপর আমরা বৈঠকে বসতে রাজি। জানা যায়, সোমবার রাতে মেডিকেল কলেজের কে-৩২ ব্যাচের এক শিক্ষার্থী হাসপাতালের সামনে ওষুধ কিনে ব্যবসায়ীকে দাম থেকে কমিশন (১০ শতাংশ) বাদ দিতে বলেন। এ নিয়ে শিক্ষার্থী ও ব্যবসায়ীদের বাগবিতন্ডা হয়। এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থী ক্যাম্পাসে ফিরে গিয়ে অন্য শিক্ষার্থীদের জানালে তারা একত্রিত হয়ে ঘটনাস্থলে এলে দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে ওষুধের দোকানের মালিক-কর্মচারী, শিক্ষার্থীসহ ১৫-২০ জন আহত হন।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর