বৃহস্পতিবার, ১৭ আগস্ট, ২০২৩ ০০:০০ টা

মৎস্য খাতে শত কোটি টাকা ক্ষতি

চট্টগ্রামে বন্যায় ভেসে গেছে ১৩ হাজার পুকুরের মাছ

ইমরান এমি, চট্টগ্রাম

মৎস্য খাতে শত কোটি টাকা ক্ষতি

চট্টগ্রামে ভয়াবহ বন্যায় ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে প্লাবিত এলাকার বাসিন্দারা। চট্টগ্রামের ১৫ উপজেলা ও নগরীর ৪টি ওয়ার্ডে বন্যায় ভেসে গেছে ১৩ হাজার পুকুর শতাধিক চিংড়ি মাছের ঘের। অবকাঠামোগত সব মিলিয়ে ক্ষতি হয়েছে প্রায় ৭০ কোটি টাকা। চট্টগ্রাম জেলা মৎস্য অফিসের এক জরিপে এ তথ্য উঠে এসেছে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে সাতকানিয়া, লোহাগাড়া ও চন্দনাইশ উপজেলার মৎস্য চাষিরা। তবে কৃষকদের দাবি সরকারি হিসাবের চেয়ে বেসরকারি হিসাবে তা শত কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে।

চট্টগ্রাম জেলা মৎস্য অফিসের জরিপ কর্মকর্তা মাহবুবুর রহমান বলেন, বন্যায় প্লাবিত চট্টগ্রামের ১৩ হাজার ৩৭৯টি পুকুরের আয়তন ৩ হাজার ৭৪৬ হেক্টর। আর ভেসে যাওয়া ১২৬টি মাছের ঘেরের আয়তন ১৮৯ হেক্টর। এসব পুকুর ও ঘের থেকে মাছ ভেসে গেছে ৪ হাজার ১৫৪ টন। সেই হিসাবে এই বন্যায় শুধু মৎস্য খাতেই ৬৯ কোটি ৩৮ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে সাতকানিয়া উপজেলায়। এ উপজেলার মৎস্য সম্পদের ক্ষতি হয়েছে ৯ কোটি ৪৫ লাখ টাকা। বন্যায় ১৫ উপজেলার মধ্যে সীতাকুন্ড এবং ফটিকছড়ি উপজেলায় মৎস্য খাতে তেমন ক্ষতি হয়নি। জেলার বাকি সব উপজেলা এবং মহানগরীতে মৎস্য চাষে অনেক ক্ষতি হয়েছে। বন্যায় অনেক পুকুর ও মাছের ঘের পানিতে ভেসে গেছে। তবে সরকারি হিসাবের চেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে দাবি করেছেন এসব উপজেলার কৃষকরা। সাতকানিয়ার আশেকারপাড়া বির্গা পাড়া পুকুর থেকে প্রায় দেড় লাখ টাকার মাছ চলে গেছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় আব্বাস উদ্দীন। কৃষকরা বলছেন, সরকারি হিসাবের বাইরে অনেক পুকুর, প্রজেক্ট ও মাছের ঘের ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বন্যায় যে পরিমাণে ক্ষতি হয়েছে তা কাটিয়ে উঠতে অনেক সময় লাগবে। ক্ষতিগ্রস্তদের যদি সরকার প্রণোদনা দেয়, তাহলে হয়তো ঘুরে দাঁড়ানো সম্ভব হবে। জানা যায়, বন্যায় তলিয়ে গেছে জেলার ১৩ হাজার ৩৭৯টি পুকুর। ১২৩টি চিংড়ি মাছের ঘের। এর মধ্যে পুকুরের আয়তন ৩ হাজার ৭৪৮ হেক্টর ও চিংড়ি মাছের ঘেরের আয়তন ১৮৯ হেক্টর। ৪ হাজার ১৪৫ মেট্রিক টন মাছ ও ২৮ মেট্রিক টন চিংড়ি। এ ছাড়াও পটিয়া উপজেলায় মোট ৮ হাজার পুকুর রয়েছে। যেখানে বাণিজ্যিকভাবে মাছের চাষ করা হতো। এসব পুকুরের মধ্যে প্রায় ৪ হাজার পুকুরই বন্যার পানিতে ভেসে গেছে। এতে ক্ষতি হয়েছে প্রায় ১০ কোটি টাকা। চন্দনাইশ উপজেলায় বাণিজ্যিকভাবে চাষ হওয়া মাছের প্রজেক্ট রয়েছে ৪ হাজার ২৮৭টি। এর মধ্যে ভেসে গেছে ২ হাজার ৫৩৭টি। মৎস্য, পোনা ও অবকাঠামো সিলে প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি মৎস্য কর্মকর্তার। সাতকানিয়া উপজেলায় বন্যায় মৎস্য সম্পদের ক্ষতি প্রায় ১০ কোটি টাকা। এ উপজেলায় সাড়ে ৪ হাজার মাছের প্রজেক্ট বা পুকুরের বিপরীতে ক্ষতি হয়েছে প্রায় ৩ হাজার। তবে অন্য তিন উপজেলার চেয়ে তুলনামূলক কম ক্ষতি হয়েছে লোহাগাড়া উপজেলায়।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর