রবিবার, ২০ আগস্ট, ২০২৩ ০০:০০ টা

তারিমের পর আরও চার চিকিৎসক আটক

নিজস্ব প্রতিবেদক, খুলনা

তারিমের পর আরও চার চিকিৎসক আটক

মেডিকেল কলেজে ভর্তি পরীক্ষায় প্রশ্ন ফাঁসে জড়িত অভিযোগে খুলনার থ্রি ডক্টরস কোচিং সেন্টারের মালিক ডা. ইউনুচ খান তারিমকে আটকের পর আতঙ্কে রয়েছেন চক্রের বাকি সদস্যরা। এরই মধ্যে খুলনা থেকে আরও চার চিকিৎসককে আটক করা হয়েছে। এ ছাড়া খুলনা মেডিকেল কলেজের বিভিন্ন শিক্ষাবর্ষের ১১ জন শিক্ষার্থীর তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। যাদের মধ্যে আটজনই মেডিকেল কলেজ থেকে পাস করে চিকিৎসা পেশায় রয়েছেন। ফাঁস করা প্রশ্নপত্রে তারা পরীক্ষা দিয়েছিলেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। এদিকে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ছাড়া চিকিৎসকদের এভাবে আটকের ঘটনায় উদ্বেগ জানিয়েছে বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ) খুলনার নেতৃবৃন্দ। গতকাল সংগঠনের জরুরি বৈঠক শেষে তারা বলেন, যেভাবে চিকিৎসকদের তুলে নেওয়া হয়েছে তা উদ্বেগজনক। তবে প্রশ্ন ফাঁসের ঘটনায় অপরাধী হলে তাদের শাস্তি প্রদানের বিষয়ে আপত্তি থাকবে না বলে জানানো হয়। গতকাল যারা আটক হয়েছেন- জেনারেল প্র্যাকটিশনার ডা. লামিয়া (কে-২৫), অনারারি চিকিৎসক ডা. নাজিয়া মেহেজাবিন তৃষা (কে-২৫), ইন্টার্ন চিকিৎসক ডা. শর্মিষ্ঠা মন্ডল (কে-২৫) ও ডা. লুইস সৌরভ সরকার। খুলনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাসান আল মামুন জানান, মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগে শুক্রবার ডা. তারিমকে খুলনা থেকে আটক করেন অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) ঢাকার সদস্যরা। তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ঢাকায় নেওয়া হয়েছে। তার আটকের পর খুলনায় আরও কয়েকজনকে আটক করা হয়। বিএমএ খুলনার সভাপতি ডা. বাহারুল আলম বলেন, ডা. তারিমকে আটকের পর খুলনা থেকে আরও চার চিকিৎসককে আটক করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ আছে কি না জানি না। তবে তাদের যেভাবে তুলে নেওয়া হয়েছে তা উদ্বেগজনক। পুলিশের একটি সূত্র জানায়, ডা. ইউনুচ খান তারিম মেডিকেল কলেজের ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁসের সঙ্গে জড়িত। তার পরিচালিত খুলনার থ্রি ডক্টরস কোচিং সেন্টার প্রশ্নপত্র দিয়ে জনপ্রতি ৩৫ থেকে ৪০ লাখ টাকা আয় করত। ভর্তি বাণিজ্যের মাধ্যমে অযোগ্য ছাত্রছাত্রীদের মেডিকেলে ভর্তির সুযোগ করে দেওয়া হতো। ডা. তারিম স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ (স্বাচিপ) খুলনার সাংগঠনিক সম্পাদক, বিএমএর সেন্ট্রাল কাউন্সিলর, মেডিকেল কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও ফাতেমা ক্লিনিকসহ একাধিক ক্লিনিকের অংশীদার। এর আগে ২০১৯ সালের ১০ অক্টোবর আটক হয়েছিলেন তারিম। কিন্তু তথ্যপ্রমাণ না থাকায় তিনি ছাড়া পান। এদিকে মেডিকেল কলেজের সূত্র জানিয়েছে, ঢাকা থেকে ১১ জনের নামের তালিকা পাঠিয়ে বিস্তারিত তথ্য দিতে বলা হয়েছে। এরা সবাই কলেজের বিভিন্ন বর্ষের শিক্ষার্থী। যাদের মধ্যে আটজনই পাস করে কলেজ ছেড়েছেন। বাকি তিনজন এখনো অধ্যয়নরত। খুলনা মেডিকেল কলেজের উপাধ্যক্ষ ডা. মেহেদী নেওয়াজ বলেন, কে-২৫ ব্যাচে এই কলেজ থেকে পাস করা তিনজন শিক্ষার্থী আটকের খবর শুনেছি যারা সবাই এখন চিকিৎসক। কিন্তু তাদের কারা আটক করেছে সে সম্পর্কে নিশ্চিত হতে পারিনি।

উল্লেখ্য, মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগে ১৩ আগস্ট ঢাকায় সাতজন চিকিৎসকসহ ১২ হন গ্রেফতার হন। তাদের দেওয়া তথ্যে খুলনা থেকে ডা. তারিমকে আটক করে অপরাধ তদন্ত বিভাগ।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর