রবিবার, ২০ আগস্ট, ২০২৩ ০০:০০ টা

বেহাল ২১ খাল ও ১৩০০ কিলোমিটার নালা-ড্রেন

জলাবদ্ধতার খড়গ - শেষ

রেজা মুজাম্মেল, চট্টগ্রাম

চট্টগ্রাম নগরে খাল আছে ৫৭টি। এর মধ্যে ৩৬টি খনন ও সংস্কার করা হচ্ছে মেগা প্রকল্পের অধীন। কিন্তু বাকি ২১টি খালের অবস্থা এখন বেহাল। পক্ষান্তরে নগরে ড্রেন-নালা আছে ১ হাজার ৬০০ কিলোমিটার। এর মধ্যে মেগা প্রকল্পের অধীন সংস্কার করা হচ্ছে ৩০২ কিলোমিটার। বাকিগুলোর অবস্থা বেহাল। ২১ খাল ও ১ হাজার ৩০০ কিলোমিটার নালা ড্রেন নিয়মিত পরিষ্কার করা হচ্ছে না। ফলে এসব খাল ও নালা-ড্রেন দিয়ে পানি প্রবাহিত হতে পারে না। বাধাগ্রস্ত হয় প্রবাহ। ফলে অল্প বৃষ্টিতেই পানি জমে যায় যত্রতত্র। তৈরি হয় জলাবদ্ধতা। দুর্ভোগে পড়তে হয় নগরবাসীকে। বৃহত্তর চট্টগ্রাম উন্নয়ন সংগ্রাম কমিটির মহাসচিব এইচ এম মুজিবুল হক বলেন, গত সপ্তাহে যে হারে নগর প্লাবিত হয়েছে, তাতে চট্টগ্রাম বাণিজ্যিক রাজধানী কিংবা বৃহত্তর নগরের বৈশিষ্ট্য হারিয়েছে। এটিকে কোনোমতেই একটি পরিকল্পিত নগর বলা যাবে না। তাই চসিকের উচিত ছিল বর্ষা মৌসুমের আগেই নগরের খাল ও নালা-নর্দমাগুলোর মাটি ও বর্জ্য অপসারণ করা। এটি না করাতে এখন বৃষ্টি হলেই পানি জমে যাচ্ছে। নালা-নর্দমাগুলো বর্জ্যরে ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে। চসিকের অপরিকল্পিত কাজের খেসারত দিতে হচ্ছে নগরবাসীকে। চসিকের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মনিরুল হুদা বলেন, নগরের প্রধান খালগুলো বিদ্যমান ও দৃশ্যমান। কিন্তু মেগা প্রকল্পে বাইরের ২১টি খাল প্রায়ই অপরিচিত। এর মধ্যে অনেকগুলোর নাম আছে কিন্তু লোকেশনও জানা যায়নি। হয়তো এগুলো আরএস দাগে আছে। তাই খালগুলো উদ্ধার ও লোকেশন নির্দিষ্ট করতে একটি প্রতিষ্ঠানকে ফিজিবিলিটি স্টাডি করার জন্য নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। কার্যত এগুলো খুঁজে বের করেই প্রয়োজনীয় সংস্কার-উন্নয়ন কাজ করা হবে। চসিকের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি মোবারক আলী বলেন, ‘বর্ষা মৌসুম সামনে রেখে চসিক ২ কোটি ৪৫ লাখ টাকায় নগরের ৪১ ওয়ার্ডের নালা-নর্দমা ও ড্রেন পরিষ্কার করে। এ ছাড়া চসিকের পরিচ্ছন্ন বিভাগের মাধ্যমে নিয়মিতই পরিচ্ছন্ন অভিযান পরিচালিত হচ্ছে। এর পরও নগরের অনেক এলাকায় পানি জমেছে। আমরাও চেষ্টা করছি পানি দ্রুত নেমে যাওয়ার ব্যবস্থা করতে।’

জানা যায়, অতীতে নগরের খাল ও নালা-নর্দমাগুলো জানুয়ারি থেকে এপ্রিল মাসে পরিষ্কার ও সংস্কার করত চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক)। নালা ও খাল থেকে মাটি উত্তোলন করা হতো। ফলে পানিও দ্রুত নেমে যেত। কিন্তু মেগা প্রকল্পের কাজ শুরুর পর চসিক সে কাজ বন্ধ করে দেয়। তবে চলতি মৌসুম সামনে রেখে চসিক ২ কোটি ৪৫ লাখ টাকা ব্যয়ে নালা-নর্দমা পরিষ্কার করে বলে দাবি করে। একই সঙ্গে ২১ খাল সংস্কারে একটি ফিজিবিলিটি স্টাডি করার কথাও বলা হচ্ছে। কিন্তু এরই মধ্যে চলতি মৌসুমেই টানা বর্ষণে তলিয়ে গেছে নগর। অন্তহীন দুর্ভোগ সহ্য করতে হচ্ছে নগরবাসীকে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর