মঙ্গলবার, ২২ আগস্ট, ২০২৩ ০০:০০ টা

বাঁশের সাঁকোই ভরসা

মাদারীপুর প্রতিনিধি

বাঁশের সাঁকোই ভরসা

মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলার সাহেবরামপুর ইউনিয়নের নতুন আন্ডারচর ও চরফতে বাহাদুর ইউনিয়নের নতুন চরদৌলাত খান গ্রামের মধ্যবর্তী আড়িয়াল খাঁ নদের একটি খালের ওপর সেতু নেই। প্রাচীন এ খালটির ওপর নির্মিত বাঁশের সঁাঁকো দিয়ে ওই এলাকার পাঁচ-ছয়টি গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে। বর্ষা এলে বাড়ে চরম দুর্ভোগ। ঝড়বৃষ্টিতে বিপজ্জনক হয়ে ওঠে সাঁকো পারাপার। একদিকে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয় স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের। এবং অপরদিকে ওই ওই এলাকায় অবস্থিত কৃষকসহ হাজার হাজার মানুষ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বাঁশের সাঁকো দিয়ে পারাপার হচ্ছে। ফলে মানুষের যাতায়াত, মৎস্য ঘেরে খাবার পৌঁছানো, মাছ এবং কৃষিপণ্য পরিবহনে মারাত্মক ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। বছরের পর বছর একটি সেতুর অপেক্ষায় ভুক্তভোগীরা। গতকাল সকালে সরেজমিন দেখা গেছে, আড়িয়াল খাঁ নদের শাখা খাল পারাপারের জন্য কয়েক হাজার মানুষের একমাত্র ভরসা একটি বাঁশের সাঁকো। দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে কয়েকজন এলাকাবাসীর সহযোগিতায় নির্মিত বাঁশের সাঁকো দিয়ে ওই খাল পারাপার হয় পথচারীরা। এরপর থেকে নষ্ট হলে চাঁদা তুলে নিজেদের উদ্যোগে সাঁকোটির সংস্কার ও পুননির্মাণ করে আসছে এলাকাবাসী। প্রতিদিন এ পথে চিঠিরচর, নতুন আন্ডারচর ও নতুন চরদৌলাত খানসহ পাঁচ-ছয়টি গ্রামের মানুষ ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে। এ ছাড়া এ সাঁকোর ওপর দিয়ে চলাচল করছে স্কুল-কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থী, কিষাণ-কিষাণি, ব্যবসায়ীসহ হাজার হাজার মানুষ। খালের ওপর পাকা সেতু না থাকায় স্থানীয় কৃষকদের মাছ, ধান ও কৃষিপণ্য আনতে দুর্ভোগ হচ্ছে। এ ছাড়া বাঁশের সাঁকোর ওপর দিয়ে কৃষিপণ্য পরিবহন সম্ভব না হওয়ায় উভয় পারের কৃষকরা তাদের উৎপাদিত কৃষিপণ্য পার্শ্ববর্তী হাটবাজারে নিতে পারেন না। প্রায় ১২০ থেকে ১৫০ ফুট দীর্ঘ সাঁকোটিতে চলার সময় সেটি দোলে, থরথর করে কাঁপতে থাকে। আবার অনেক স্থানে বাঁশ-খুঁটি পচে নষ্ট হয়ে গেছে। ভগ্নপ্রায় বাঁশের সাঁকোটির ওপর দিয়ে অতি কষ্টে ও সাবধানতা অবলম্বন করে পারাপার হচ্ছে মানুষ। অনেকে সাইকেল মাথার ওপর তুলে একহাত দিয়ে বাঁশ ধরে ঝুঁকিপূর্ণভাবে পারাপার হচ্ছেন। একাধিক শিক্ষার্থী বলেন, সাঁকো পার হয়ে স্কুল-কলেজে যেতে হয়। অনেকে প্রায়ই সাইকেল নিয়ে যাওয়ার সময় পানিতে পড়ে যায়। আবু আলেম সরদার, নজরুল ইসলাম, মিজানুর রহমান, খোকন বেপারী ও লোকমান ঢালীসহ কয়েকজন স্থানীয় ভুক্তভোগী বলেন, এ খালের ওপর আমাদের ব্রিজ নির্মাণের দাবি দীর্ঘদিনের। নির্বাচন এলেই এলাকার জনপ্রতিনিধিরা এখানে সেতু নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দেন। ভোটে পাস করার পর আর প্রতিশ্রুতির কথা মনে থাকে না। এ খালের ওপর ব্রিজ না থাকায় আমাদের অনেক ধরনের সমেস্যায় পরতে হচ্ছে। আমরা কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি যানাই আমাদের খালের ওপর যেন দ্রুত একটি ব্রিজ নির্মাণ করা হয়। ইউপি সদস্য শহিদুল ইসলাম বলেন, ওই স্থানে সেতু না থাকায় দীর্ঘদিন ধরে মানুষকে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। সাহেবরামপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মাহবুবুর রহিম মুরাদ সরদার বলেন, সেতু নির্মাণের জন্য স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরে (এলজিইডি) আবেদন করা হবে। উপজেলা প্রকৌশলী মো. রেজাউল করিম বলেন, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে এবং খোঁজখবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর