বুধবার, ২৩ আগস্ট, ২০২৩ ০০:০০ টা

আদালতের নির্দেশনা গুরুত্ব দেয়নি তিন সংস্থা

অ্যাপে প্রতারণা মামলা তদন্তে অগ্রগতি নেই

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী

এমটিএফই অ্যাপ ব্যবহার করে প্রতারণা ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে রাজশাহীতে হওয়া মামলার তদন্তে এক মাসেও অগ্রগতি নেই। এ সময়ে কেউ গ্রেফতারও হয়নি। এমনকি আদালত যে তিন সংস্থাকে মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব দিয়েছিলেন, তাদের কাছেও ওই অ্যাপ পরিচালনাকারীদের সম্পর্কে কোনো তথ্য নেই। বাংলাদেশ প্রতিদিনে ২২ জুলাই প্রকাশিত ‘অ্যাপের ফাঁদে নিঃস্ব মানুষ’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদনের সূত্র ধরে প্রতারক চক্র শনাক্ত ও আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে পরদিন আদালতের শরণাপন্ন হন আইনজীবী জহুরুল ইসলাম। তার আবেদন আমলে নিয়ে ওই আদালতের বিচারক জিয়াউর রহমান রাষ্ট্রের তিন তদন্তকারী সংস্থাকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের আদেশ দেন। রাজশাহীর সাইবার ট্রাইব্যুনালের পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট ইশমত আরা বেগম জানান, আগে কোনো মামলায় একটি সংস্থাকে তদন্ত করতে দায়িত্ব দেওয়া হতো। কিন্তু অ্যাপ নিয়ে প্রতারণা করে মানুষকে নিঃস্ব করার অভিযোগ যৌথ তদন্ত করতে তিন সংস্থাকে আদেশ দিয়েছিলেন আদালত। ওই আদেশে রাজশাহী মহানগরীর রাজপাড়া থানা পুলিশ, সিআইডি ও পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছিল। আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী মামলাটি রাজপাড়া থানার উপপরিদর্শক নূর ইসলাম, পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) উপপরিদর্শক মোস্তাফিন ও পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) উপপরিদর্শক শিমুল তদন্ত করছেন। আদালতের আদেশে বলা হয়েছিল, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন-২০১৮ এর ৩৯(২) ধারা অনুযায়ী অপরাধের গুরুত্ব বিবেচনায় সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে রাজপাড়া থানা, সিআইডি ও পিবিআই রাজশাহীর সাইবার বিষয়ে চৌকশ একজন করে সাব-ইন্সপেক্টর বা তার ওপরের কর্মকর্তার সমন্বয়ে তদন্ত দল গঠনের আদেশ দেওয়া হলো। তিন সদস্যের এই তদন্ত দল অপরাধ বিষয়ে ডিজিটাল সাক্ষ্যগ্রহণ, প্রতারক চক্রের অফিস ও অ্যাপভিত্তিক প্রতারণা কার্যক্রম বন্ধসহ তদন্ত কর্মকর্তার আইনগত সব দায়িত্ব পালন করবে এবং তদন্ত শেষে আদালতে রিপোর্ট দাখিল করবে। কিন্তু এক মাসেও তিন সংস্থা আদালতে কোনো প্রতিবেদন দেয়নি।

রাজপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল হক বলেন, তদন্ত চলছে। যতটুকু জানা গেছে, কয়েকটি লেভেলে প্রতারণা হয়েছে। রাজশাহীতে জড়িতরা প্রকৃতপক্ষে একজন আরেকজনের মাধ্যমে প্রতারণার শিকার হয়েছেন। এ পর্যন্ত এ মামলায় কাউকে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি। পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) উপপরিদর্শক শিমুল জানান, মামলাটির তদন্তের দায়িত্ব পাওয়ার পর কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলেছেন তিনি। এ ছাড়া আর কোনো অগ্রগতি নেই। এ বিষয়ে সিআইডির তদন্ত কর্মকর্তা মোস্তাফিনের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

অ্যাডভোকেট জহুরুল ইসলাম বলেন, অ্যাপের মাধ্যমে প্রতারণা আগেও হয়েছে। এখনো চলছে। কিন্তু মানুষ সচেতন হচ্ছে না, প্রতারক চক্রও কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। নাগরিকদের সচেতন করতে তিনি মামলাটি করেছিলেন। আদালতের আদেশ অনুযায়ী আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বিষয়টিতে গুরুত্ব দিলে এমটিএফইর প্রতারণা সম্ভব হতো না। তার আগেই নাগরিকদের সচেতন করা যেত। কিন্তু তারা গুরুত্বই দেয়নি। এমটিএফইর প্রতারণার জন্য এই তিন সংস্থাকে জবাবদিহির আওতায় নিয়ে আসা উচিত।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর