শিরোনাম
বৃহস্পতিবার, ২৪ আগস্ট, ২০২৩ ০০:০০ টা

বন্যায় বেহাল ৫২৪ কিমি সড়ক

এসব সড়ক এখন মরণফাঁদ

ইমরান এমি, চট্টগ্রাম

বন্যায় বেহাল ৫২৪ কিমি সড়ক

ভয়াবহ বন্যায় চট্টগ্রামের ১৫ উপজেলা ও মহানগরে ৫২৪ দশমিক ৮৭৮ কিলোমিটার সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এসব সড়ক এখন যাত্রী, চালক ও পথচারীদের মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে। যা সংস্কারে তিন সংস্থা সম্ভাব্য ব্যয় ধরেছে ৪০৯ কোটি ৫০ লাখ ৭৫ হাজার টাকা। এ তিন সংস্থার মধ্যে আছে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক), স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর এবং সড়ক ও জনপথ অধিদফতর (সওজ)। জানা গেছে, বন্যায় চট্টগ্রামে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের অধীনে ৩৬১ দশমিক ৭৯৯ কিলোমিটার সড়কের ক্ষতি হয়েছে। এতে ৩১৯ কোটি ৯৫ লাখ ৭৫ হাজার টাকার ক্ষতি হয়েছে। ব্রিজ ও কালভার্ট ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ১৪টি, যার দৈর্ঘ্য ১০১ দশমিক ১৫ মিটার। এতে ক্ষতি ৮ কোটি ১১ লাখ টাকা। সড়ক, কালভার্ট ও ব্রিজ বাবদ ৩২৮ কোটি ৬ লাখ ৭৬ হাজার টাকার ক্ষতি হয়েছে। এর মধ্যে ফটিকছড়ির ১৩টি সড়কের ১.১৬৮ কিলোমিটার অংশ, হাটহাজারীর ৪৪টি সড়কের ৩৪.৫৯৭ কিলোমিটার এবং ৩০০ মিটার দৈর্ঘ্যরে একটি ব্রিজ। মিরসরাইয়ে ২০টি সড়কের ২৩.৩ কিলোমিটার, রাঙ্গুনিয়ায় ৪৭টি সড়কের ৬২.৮৩৬ কিলোমিটার এবং একটি কালভার্ট। সীতাকুন্ডে চারটি সড়কের ১৩.৬ কিলোমিটার ক্ষতিগ্রস্ত হয়। আনোয়ারার ১০টি সড়কের ৫.৮৫৬ কিলোমিটার, বাঁশখালীতে ২৯টি সড়কের ৫৯.১৯ কিলোমিটার, বোয়ালখালীতে ৪৪টি সড়কের ৩৬.৮৯৪ কিলোমিটার ও ৮ মিটারের তিনটি কালভার্ট। চন্দনাইশে ১১টি সড়কের ৮.৩৫৬ কিলোমিটার ও ২৫ মিটারের একটি ব্রিজ, পটিয়ায় ১৮টি সড়কের ১৩.৪৬২ কিলোমিটার, সাতকানিয়ায় ২৯টি সড়কের ৬৭.১ কিলোমিটার, রাউজানে ২১টি সড়কের ১০.৫ কিলোমিটার এবং লোহাগাড়ায় ৪৩টি সড়কের ২৪.৯৪ কিলোমিটার এবং ৮টি ব্রিজ-কালভার্টের ৪৯.৩ মিটার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সড়ক ও জনপথ অধিদফতরের চট্টগ্রামের সহকারী প্রকৌশলী সেগুন প্রসাদ বড়ুয়া জানান, সওজের আওতাধীন সড়ক আছে ৫৮৬.৪৭ কিলোমিটার। এর মধ্যে জাতীয় মহাসড়ক ১৪৩ দশমিক ৪৮ কিলোমিটার, আঞ্চলিক মহাসড়ক ১৩৮ দশমিক ৬৩ কিলোমিটার ও জেলা মহাসড়ক রয়েছে ৩০৪ দশমিক ৩৬ কিলোমিটার। বন্যায় ক্ষতি হয়েছে জাতীয় মহাসড়ক ২০ দশমিক ৮৩ কিলোমিটার, আঞ্চলিক মহাসড়ক ৫৮ দশমিক ৩ কিলোমিটার ও জেলা মহাসড়ক ৩৪ দশমিক ৭৭ কিলোমিটার। সব মিলে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ১১৩ দশমিক ৯ কিলোমিটার সড়ক। এসব সড়ক সংস্কার করতে স্বল্প মেয়াদি খরচ হবে ১১ কোটি ৯০ লাখ ও দীর্ঘ মেয়াদি হলে খরচ হবে ২৯ কোটি ৫৫ লাখ টাকা। জলাবদ্ধতায় নগরীতে ১ হাজার ৩০০ কিলোমিটার সড়কের মধ্যে ৫০.৭০ কিলোমিটার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ২.১৯৯ কিলোমিটার ড্রেন ও ১.৯৯৩ কিলোমিটার ফুটপাত। এসব সড়ক, ড্রেন এবং ফুটপাত মেরামতে ৬০ কোটি টাকা ব্যয় হবে। চসিকের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মুনিরুল হুদা বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক সংস্কারে মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে।

তাছাড়া বর্তমানে চসিকের উদ্যোগে নিয়মিতই সড়ক মেরামত করা হচ্ছে। সরেজমিনে দেখা গেছে, নগরীর মুরাদপুর বহদ্দারহাট পর্যন্ত সড়কটি খানাখন্দে ভরা। সড়কটিতে যান চলাচল অনুপযোগী হয়ে পড়েছে বৃষ্টির পর থেকে। মুরাদপুর সুন্নিয়া মাদরাসা থেকে বহদ্দারহাট সড়কের অবস্থাও বেহাল। আগে থেকে খানাখন্দ ছিল অক্সিজেন-কুয়াইশ সড়কে। বন্যার পর এ সড়কের অবস্থা অত্যন্ত নাজুক। এ ছাড়া মোহরা, রাস্তারমাথা, শুলকবহর, মোহাম্মদপুর, কাতালগঞ্জ, চকবাজার, বাদুরতলা, বাকলিয়া মিয়াখান নগর, ডিসি রোড, ষোলশহর, আগ্রাবাদ কমার্স কলেজ সংলগ্ন এলাকা, আগ্রাবাদ সিডিএ আবাসিক এলাকা, হালিশহর, পতেঙ্গা, গোসাইলডাঙ্গা সড়কের অবস্থা খুবই খারাপ।

সর্বশেষ খবর