বৃহস্পতিবার, ২৪ আগস্ট, ২০২৩ ০০:০০ টা

হারিয়ে যাচ্ছে সেই হাতে তৈরি রুমাল

নজরুল মৃধা, রংপুর

হারিয়ে যাচ্ছে সেই হাতে তৈরি রুমাল

একসময় মানুষের জীবনযাত্রায় রুমাল ছিল অনুষঙ্গ। সামাজিক অনুষ্ঠানসহ অনেক ক্ষেত্রে রুমালের ব্যবহার ছিল সচরাচর। আধুনিকতার ছোঁয়ায় রুমাল এখন সমাজ জীবন থেকে বিতাড়িত হতে বসেছে। রুমালের স্থান দখল করে নিয়েছে টিস্যু পেপার। প্রবীণদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বিয়েশাদি থেকে আরম্ভ করে প্রতিটি ক্ষেত্রে রুমালের ব্যবহার ছিল। বিয়েবাড়িতে বর রুমাল দিয়ে মুখ ঢেকে রাখত। এখন বিয়েবাড়িতে বর মুখ ঢাকতে ব্যবহার করছে টিস্যু পেপার। অনেকে প্রিয়জনকে উপহার দিত হাতে তৈরি কাপড়ের রুমাল। সেখানে লেখা থাকত ‘মায়ের দোয়া’, ‘ভুলনা মোরে’, ‘সুখে থেকো’ ইত্যাদি। এখন কাপড়ের ওপর হাতে লেখা রুমাল চোখেই পড়ে না। একসময় প্রায় প্রতিটি ঘরে গৃহিণীরা হাতে রুমাল তৈরি করে স্বামী-সন্তান অথবা প্রিয়জনকে উপহার দিত। সে সব এখন অতীত হয়ে গেছে। এ ছাড়া বিভিন্ন কাপড়ের দোকানে হরেক রকম রুমাল বিক্রি হতো। রুমালের দামের হেরফেরে বুঝা যেত কার কতটা আভিজাত্য। এখন সারা শহর ঘুরলেও রুমাল পাওয়া দুষ্কর। রুমাল হাত-মুখ মোছার চারকোনা কাপড়ের ঠুকরো হলেও এই কাপড়ের টুকরো ছাড়া সামাজিক অনুষ্ঠানে উপস্থিত হওয়া অনেকের কাছে বেমানান ছিল। এখন রুমালের পরিবর্তে মানুষ টিস্যু পেপার ব্যবহার করছে। ফলে অগের মতো রুমালের প্রয়োজনীতা নেই মানুষের কাছে। তবে দুই-একটি পরিবার এখনো ধরে রেখেছে রুমালের ঐতিহ্য। ইতিহাস লেখক জুবায়ের আলী জুয়েল বলেন, অভিজাতসহ বিভিন্ন শ্রেণির মানুষ ব্যবহার করত রুমাল।

একসময় ভারতবর্ষে ঠগিরা যখন লুটতরাজ করতে আসত তখন ঠগিরা লুটের উদ্দেশে মানুষের শ্বাসরোধ করার জন্য রুমাল ব্যবহার করত। রুমালের এক প্রান্তে একটি মুদ্রা অথবা ভারী কিছু দিয়ে  গেরো দিয়ে বাঁধা হতো, তারপর সেটি দুলিয়ে লক্ষ্যবস্তুর দিকে ছুড়ে দেওয়া হতো। সেটি শিকারের গলায় জড়িয়ে যেত। এরপর তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হতো। তার মতে রুমাল শব্দটি বাংলা ভাষা ছাড়াও হিন্দি, উর্দু ও নেপালি ভাষায় ব্যবহার হয়।

সর্বশেষ খবর