বৃহস্পতিবার, ২৪ আগস্ট, ২০২৩ ০০:০০ টা

লাখ টাকার বান্ডিল বিক্রি করা হতো ২০-২৫ হাজার টাকায়

অর্ধকোটি টাকার জাল নোটসহ চারজন আটক

নিজস্ব প্রতিবেদক

গত এক বছরে ২ কোটি টাকা মূল্যমানের জাল নোট বাজারে ছড়িয়েছে তারা। ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় ছড়িয়ে দিতেন এসব নোট। দীর্ঘদিন ধরে ভয়ংকর এই অপরাধের সঙ্গে জড়িত থাকলেও ছিলেন ধরাছোঁয়ার বাইরে। তবে এবার আর শেষরক্ষা হয়নি। রাজধানীর ডেমরা, খিলগাঁও ও সবুজবাগ থেকে মঙ্গলবার অর্ধকোটি টাকার জাল নোটসহ একটি চক্রের চার সদস্যকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব। গ্রেফতার ব্যক্তিরা হলেন- মোহাম্মদ আমিনুল হক ওরফে দুলাল, আবদুর রাজ্জাক ওরফে দিদার (৩০), সুজন আলী (৪০) ও মোহাম্মদ সাকিবুল হাসান (২১)। র‌্যাব বলছে, গ্রেফতারের সময় তাদের কাছ থেকে জাল নোট ছাড়াও একটি ল্যাপটপ, একটি প্রিন্টার, ১১টি টোনার ও কার্টিজ, একটি পেনড্রাইভসহ জাল নোট তৈরির বিপুল সরঞ্জাম জব্দ করা হয়েছে। গ্রেফতার ব্যক্তিরা বেশির ভাগ জাল নোট ব্যবহার করে আসছিলেন কেনাকাটায়। নিখুঁত ফিনিশিংয়ের কারণে যে-কেউ জাল নোটগুলো আসল না নকল তা পরখে দ্বিধায় পড়ে যেতেন। গতকাল রাজধানীর কারওয়ান বাজারের র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে গণমাধ্যমকর্মীদের বিষয়টি অবহিত করেন ফোর্সটির আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন। তিনি বলেন, চক্রটি ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর, মুন্সীগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় জাল নোট সরবরাহ করত। তারা প্রতি লাখ টাকা মূল্যের জাল নোট বিক্রি করত ২০-২৫ হাজার টাকায়। চক্রের সদস্যরা মাছবাজার, লঞ্চঘাট, বাস টার্মিনালসহ বিভিন্ন মার্কেটে নানা কৌশল অবলম্বন করে জাল নোট সরবরাহ করতেন। কমান্ডার আল মঈন বলেন, চক্রের মূল হোতা আমিনুল জাল নোট তৈরির সার্বিক বিষয়ে দক্ষ হওয়ায় নিজেই সব পরিচালনা করতেন। তিনি নিজে ল্যাপটপ, প্রিন্টার, পেনড্রাইভ, কাগজ, টিস্যু পেপার ও প্রিন্টারের কালিসহ অন্যান্য সরঞ্জাম কেনাকাটা করতেন। জাল নোট প্রিন্টিং করে তিনি গ্রেফতার দিদারকে দিতেন। দিদার চক্রের অপর সদস্য সুজনকে সঙ্গে নিয়ে জাল নোট কাটিং ও বান্ডিল করতেন।

তিনি বলেন, যখন ব্যবসা রমরমা থাকে তখন চক্রটি দৈনিক ২-৩ লাখ টাকা মূল্যমানের জাল নোট তৈরি করে। মূলত তারা একটি অভিনব কায়দায় জাল নোটগুলো বিক্রি করত। তারা তাদের ফেসবুক গ্রুপ থেকে কমেন্ট দেখে তাদের সঙ্গে মেসেঞ্জারে চ্যাটিংয়ের মাধ্যমে ক্লায়েন্ট তৈরি করে অগ্রিম টাকা নিয়ে নিতেন এবং পরে তাদের সুবিধাজনক স্থানে জাল নোটগুলো সরবরাহ করতেন।

র‌্যাবের এই কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘কোরবানির ঈদকে কেন্দ্র করে চক্রটি ওই সময় দিনে ২ থেকে ৩ লাখ টাকার জাল নোট বাজারে ছেড়েছে। তারা জাল নোটগুলো তৈরির পর কয়েকদিন ঘরে রেখে দিত, যাতে কিছুটা পুরনো মনে হয়। এরপর সময় বুঝে এসব নোট দিয়ে বাজারে কেনাকাটা করতেন। তবে জাল নোটগুলো আমরাও দেখেছি, এতে অনেকটা বাস্তব মনে হয়েছে। তারা বিশেষ করে বিভিন্ন মেলা, উৎসব, পূজা ও কোরবানির পশুর হাটে বিপুল জাল নোট ছড়ায়। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিতে জাল নোট প্রিন্টিংয়ের সময় কাগজের অব্যবহৃত ও নষ্ট অংশগুলো তারা পুড়িয়ে ফেলত।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর