শিরোনাম
শনিবার, ২৬ আগস্ট, ২০২৩ ০০:০০ টা

লতিরাজ কচু চাষে ঝুঁকছেন কৃষক

আলপনা বেগম, নেত্রকোনা

লতিরাজ কচু চাষে ঝুঁকছেন কৃষক

নেত্রকোনার একটি গ্রাম এখন লতিরাজ গ্রাম হিসেবে পরিচিত। এ গ্রামের কৃষকরা ধানের বদলে লতিরাজ কচুর চাষ করছেন। এ গ্রামের কৃষকদের সফলতা দেখে এখন বেশ কয়েকটি গ্রামে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে লতিরাজ কচু চাষ। অনেকে ধানের আবাদ বাদ দিয়েছেন একেবারেই। এলাকার চাহিদা মিটিয়ে এখানকার লতি এখন কিশোরগঞ্জের ঈশ্বরগঞ্জ, ঢাকা, চট্টাগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে পাঠাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। এর সঙ্গে কৃষক ছাড়াও সম্পৃক্ত হচ্ছেন এলাকার বিশাল জনগোষ্ঠী। মৌসুমের প্রতি মাসে প্রায় কোটি টাকার বাণিজ্য হয় শুধু এই লতিরাজ কচু থেকে। ফলে কৃষকরা ঝুঁকছেন এই কচু চাষে। ক্ষতির সম্ভাবনা না থাকায় এখন গ্রামে গ্রামে এর আবাদ বাড়ছে। গ্রামের নাম মহিষ আটি। নেত্রকোনা সদর উপলোর দক্ষিণ বিশিউড়া ইউনিয়নে অবস্থিত। এই গ্রামের প্রায় শতভাগ মানুষ গত কয়েক বছর ধরে লতিরাজ কচুর চাষ করে আসছে। একজনের দেখাদেখি অন্যজন আগ্রহী হয়ে করছেন এই চাষাবাদ। দক্ষিণ বিশিউড়া গ্রামেও শুরু হয়েছে এই চাষ। পরবর্তীতে পলাশ আটিসহ অন্যান্য গ্রামেও বাড়তে থাকে। এখন এই অঞ্চলের বেশির ভাগ কৃষকই ধানের পাশাপাশি অথবা ধানের বিকল্প এই লতিরাজ কচুর আবাদে যুক্ত হচ্ছেন। এখানকার কৃষকরা লতিরাজ কচুর চাষ করে নিজেরাও যেমন আয়রনের চাহিদা মেটাচ্ছেন। তেমনি প্রত্যেকেই আয় করে সংসার চালাচ্ছেন। এখন পর্যন্ত কারোর ক্ষতি হয়েছে এমনটি শোনা যায়নি। প্রতি সোম এবং শুক্রবার দেখা যায় লতিরাজ কচু তুলে জমির আইলে অথবা বাড়িতে রাখছেন চাষিরা। পাইকার বা ছোট-মাঝারি-বড় ধরনের ব্যবসায়ীরা তা মাপঝোঁক করে নিয়ে যাচ্ছেন অনায়াসে।  ফলে স্থানীয় কয়েকজন মিলে মহিষ আটি এলাকায় কচুর বাজার করেছেন। কেউ কেউ কিছু বেশি লাভের আশায় বাজারে এনে বিক্রি করেন। যেখান থেকে মণপ্রতি কচু ৮০০ থেকে ১৩০০ টাকা বা তারও অধিক দামে বিক্রি হয়।

প্রথম কৃষক তোতা মিয়াসহ অন্য কৃষকরা জানান, এই অঞ্চলে প্রায় আড়াইশর মতো চাষি রয়েছেন, যারা লতি চাষ করেন। এই লতি সময়ে সময়ে ২২০০ টাকা পর্যন্ত মণ বিক্রি হয়। স্থানীয়ভাবে ৩০ থেকে ৪০ টাকা কেজি দরে পাওয়া যায়। পুরনো জমিতে কাঠাপ্রতি লতি ২ থেকে ৩ মণ ফলে। আবার নতুন জমিতে ১ থেকে দেড় মণ পাওয়া যায়। এলাকায় প্রায় ৫০০ কাঠা জমিতে ফলে এখন লতি। বছরে ছয়-সাত মাস চাষ হলেও মূলত ৯ মাসই এর আবাদ থাকে। বাকি তিন মাস অন্যান্য রবি ফসল চাষ করা হয়।

বাজার মালিক রমজান মিয়া জানান, প্রতি মাসে প্রায় কোটি টাকার বেচাকেনা হয় এই লতিরাজ। কৃষকরা ধানের চেয়ে লাভবান এই কচু চাষ করে। যার জমি নেই তিনিও অন্যের জমিতে কাজ করতে পারেন। অল্প খরচে কৃষকরা ফলন ভালো পাচ্ছে এবং ক্ষতির সম্ভাবনা নেই, তাই এটিতে মনোযোগ দিয়েছেন তারা।

কৃষি অধিদফতরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মোহাম্মদ নুরুজ্জামান জানান, এবার ৫ হাজার ৫০ মেট্রিক টন কচুর আবাদ হয়েছে। হেক্টরপ্রতি ৩০ মেট্রিক টন কচুর ফলন হয়।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর