বরিশাল নগরীর পোর্ট রোডের শিকদার বোর্ডিং নামে একটি আবাসিক হোটেলে এক গ্রাহককে নারী দিয়ে জিম্মি করে আপত্তিকর ছবি তুলে কয়েক দফায় প্রায় অর্ধ কোটি টাকা আদায়ের অভিযোগ উঠেছে হোটেল মালিক ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে। শেষ দফায় আরও ৩ লাখ টাকার জন্য চাপ সৃষ্টির অভিযোগ করা হয়েছে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী পটুয়াখালীর বাউফলের রাজনগর গ্রামের বসিন্দা ও স্থানীয় ডাকঘরের পোস্টাল অপারেটর মো. আবদুল ওহাব বরিশাল মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হোটেল মালিকসহ তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে একটি মামলা করেছেন। আদালত নগর গোয়েন্দা পুলিশকে অভিযোগ তদন্ত করে প্রতিবেদন দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। মামলার অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, একটি কম্পিউটার প্রশিক্ষণে অংশ নিতে মো. আবদুল ওহাব ২০২১ সালের ২০ নভেম্বর ভোর ৫টায় বরিশাল এসে নগরীর পোর্ট রোডের শিকদার বোর্ডিংয়ের তৃতীয় তলার একটি কক্ষ ভাড়া নেন। ওইদিন সকালে হোটেল মালিক হাফিজুর রহমান শিকদার তৃতীয় তলার ওই কক্ষে একটি মেয়ে নিয়ে যান। এ সময় ওই মেয়েটির সঙ্গে আবদুল ওহাবকে বিভিন্ন অঙ্গভঙ্গিতে ছবি তুলতে বাধ্য করেন। পরে মেয়েটিকে ১ হাজার টাকা দিতে বাধ্য করে তাকে বিদায় দেন হোটেল মালিক। ওই ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে ওহাবের কাছে ৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। ওই ঘটনার পর থেকে চলতি বছরের ২৫ এপ্রিল পর্যন্ত আসামিরা বাদীর কাছ থেকে বিভিন্নভাবে ভয়ভীতি দেখিয়ে প্রায় অর্ধ কোটি টাকা হাতিয়ে নেন। সব শেষ গত জুলাই মাসে বাদীর কাছে আরও ৩ লাখ টাকা দাবি করে প্রধান আসামি। টাকা না দিলে তার অশালীন ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছেড়ে দেওয়াসহ প্রাণনাশেরও হুমকি দেন তিনি। এদিকে আসামিদের দাবি পূরণ করতে বিভিন্ন স্থানে ধারদেনায় জর্জরিত আবদুল ওহাব। এ কারণে ঠিকমতো অফিসও করতে পারছেন না তিনি। এ অবস্থায় হয়রানি থেকে রক্ষা পেতে ২১ আগস্ট বরিশাল মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হোটেল মালিক হাফিজুর রহমান ও তার সহযোগী পাঁচজনের বিরুদ্ধে একটি মামলা করেন মো. আবদুল ওহাব। আদালতের বিচারক ফয়সাল হোসেন নগর গোয়েন্দা পুলিশের ওসিকে অভিযোগ তদন্ত করে প্রতিবেদন দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।
বরিশাল মেট্রোপলিটনের গোয়েন্দা পুলিশের ওসি আলমগীর হোসেন জানান, আদালতের আদেশপ্রাপ্তি হলে অভিযোগ তদন্ত করে প্রতিবেদন দেওয়া হবে।