সোমবার, ২৮ আগস্ট, ২০২৩ ০০:০০ টা

নিজের ঘর পাইছি, এর মতো শান্তি নাই

কিশোরগঞ্জে আশ্রয়ণ প্রকল্প

সাইফউদ্দীন আহমেদ লেনিন, কিশোরগঞ্জ

নিজের ঘর পাইছি, এর মতো শান্তি নাই

কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী উপজেলার উত্তর ফেকামারা আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাসিন্দা মো. নজির হোসেন বলেন, ‘আগে অন্যের জায়গায় থাকতাম। এখন আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর পাইছি। নিজের ঘর। এর মতো শান্তি আর নাই।’ নজির হোসেন এ প্রকল্পের অধীন সমবায় সমিতির (রেজি. নম্বর-১) সভাপতির দায়িত্বও পালন করছেন। তিনি প্রায় তিন বছর হলো আশ্রয়ণ প্রকল্পে ঘর বরাদ্দ পেয়েছেন। এখানে থেকে কাঁচামালের ব্যবসা করেন। স্ত্রী, এক মেয়ে ও এক ছেলে নিয়ে বরাদ্দপ্রাপ্ত আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘরে বসবাস করেন। তার আরেক মেয়ে বিবাহিত। এর আগে জালালপুর ইউনিয়নের উত্তর চরপুক্ষীয়া গ্রামে অন্যের বাড়িতে থাকতেন।

আশ্রয়ণ প্রকল্পে ঘর বরাদ্দ পাওয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘গরিবের দুঃখ বোঝার মতো শেখ হাসিনার মতো আর কেউ নাই। আমরারে (আমাদেরকে) যেমন শান্তিতে রাখছেন, আল্লাহ যেন শেখ হাসিনাকেও শান্তিতে রাখেন।’

কটিয়াদী উপজেলার উত্তর ফেকামারা আশ্রয়ণ প্রকল্পে নজির হোসেনের মতো ১৬৭ জন ভূমিহীন পরিবারকে ঘর বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এ প্রকল্পের আরেক বাসিন্দা রহিমা (৬০)। স্বামী আবদুল আলী মারা গেছেন বেশ কয়েক বছর আগে। ফেকামারা গ্রামে অন্যের বাড়িতে তিনি কাজ করতেন। দেড় বছর আগে এখানে ঘর বরাদ্দ পেয়েছেন তিনি। এখন নিজের ঘরে শান্তিতেই আছেন বলে তিনি জানান।

বীর নোয়াকান্দি গ্রামের বৃদ্ধ আবদুুল বারিকও (৭৫) ঘর বরাদ্দ পেয়েছেন। স্ত্রীসহ এখানে থাকেন। বয়সের ভারে এখন আর কোনো কাজকর্ম করতে পারেন না। তাদের তিন ছেলে গ্রামে থেকে শুঁটকির ব্যবসা করে। তাদের দেওয়া খরচের টাকায় চলেন তারা। বারিক বলেন, ‘নিজেদের থাকার মতো আগে কোনো ঘর ছিল না। এখন বুড়া-বুড়ি দুজন আশ্রয়ণের ঘরে থাকি। খাবারের খরচ দেয় ছেলেরা। কোনো চিন্তা করতে হয় না।’

জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ জানান, জেলায় ২ হাজার ৭৫৮টি ভূমিহীন পরিবারকে চিহ্নিত করে পুনর্বাসন করা হয়েছে। প্রত্যেককেই দেওয়া হয়েছে মানসম্মত ঘর। ইটনা ও তাড়াইল ছাড়া বাকি ১১ উপজেলাকে ভূমিহীনমুক্ত ঘোষণা করা হয়েছে। আরও ২৬টি ঘরের কাজ চলমান রয়েছে। এ ছাড়া পুরাতন ব্যারাকহাউসগুলো সংস্কার করা হচ্ছে। বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগ কিংবা অন্য কোনো কারণে কেউ ভূমিহীন হয়ে থাকলে সে তালিকাও করা হচ্ছে। সে অনুযায়ী তাদের পুনর্বাসনের জন্য প্রস্তাব পাঠানো হবে।

 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর