বৃহস্পতিবার, ৩১ আগস্ট, ২০২৩ ০০:০০ টা

ঢাকার ৮৪ ভাগ মানুষ খেলার মাঠ বঞ্চিত

নগর সংলাপে বক্তারা

নিজস্ব প্রতিবেদক

ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকায় মানুষের প্রবেশাধিকার আছে মাত্র ৪২টি মাঠে। বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্সের (বিআইপি) ২০১৯ সালের গবেষণা অনুযায়ী ঢাকা সিটিতে মাত্র ১৬ ভাগ মানুষ খেলার মাঠের পরিষেবার মধ্যে বসবাস করে। বাকি ৮৪ ভাগ খেলার সুযোগসুবিধা থেকে বঞ্চিত। গতকাল রাজধানীর একটি হোটেলে ‘ঢাকা মহানগরীর খেলার মাঠ-পার্ক-গণপরিসর সুবিধাদির এলাকাভিত্তিক সুযোগের সমতা নিশ্চিত করতে টেকসই পরিকল্পনা’ শীর্ষক এক নগর সংলাপে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনে এসব তথ্য তুলে ধরেন ইনস্টিটিউট ফর প্ল্যানিং অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (আইপিডি) নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক ড. আদিল মুহাম্মদ খান। সংলাপের আয়োজন করে ইনস্টিটিউট ফর প্ল্যানিং অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (আইপিডি), সেভ দ্য চিলড্রেন বাংলাদেশ ও নগর উন্নয়ন সাংবাদিক ফোরাম বাংলাদেশ। নগর উন্নয়ন সাংবাদিক ফোরামের সভাপতি অমিতোষ পালের সভাপতিত্বে সংলাপে বক্তব্য দেন আইপিডির নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক আদিল মুহাম্মদ খান, উপদেষ্টা অধ্যাপক আকতার মাহমুদ, সেভ দ্য চিলড্রেনের মানবসম্পদ পরিচালক মোস্তাক হোসাইন, ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশের সিনিয়র অপারেশন ম্যানেজার চন্দন জেড গুমেজসহ বিভিন্ন এনজিও প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি। মূল প্রবন্ধে পরিকল্পনাবিদ আদিল মুহাম্মদ খান বলেন, নগর পরিকল্পনার মানদন্ড অনুযায়ী ঢাকা মহানগরীতে ৭৯৫টি ও চট্টগ্রামে ৫৪১টি খেলার মাঠের ঘাটতি রয়েছে। এ ছাড়া রাজশাহীতে ৩৭, খুলনায় ৬৫, সিলেটে ৪০ ও বরিশালে ৪৫টি খেলার মাঠের ঘাটতি রয়েছে।

নগর সংলাপে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অঞ্চল নগর ও পরিকল্পনা বিভাগের অধ্যাপক আকতার মাহমুদ বলেন, রাজধানীর অনেক আবাসিক এলাকার খেলার মাঠও এখন প্লটে পরিণত হয়েছে। এর মধ্যে উত্তরা আবাসিক এলাকা ও পূর্বাচল অন্যতম। উত্তরা আবাসিক এলাকার নকশা কয়েকবার পরিবর্তন হয়েছে। একই সঙ্গে পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পের লেআউটও কয়েকবার পরিবর্তন করা হয়েছে। এসব নকশা পরিবর্তন করে খেলার মাঠের জায়গায় হয়েছে প্লট। গণপরিসর বা মাঠ নিয়ে কারও কোনো উদ্যোগ নেই। শারীরিক প্রয়োজনে খাবার যেমন গুরুত্বপূর্ণ, তেমনি শারীরিক ও মানসিক প্রশান্তির জন্য মাঠও।

সভাপতির বক্তব্যে অমিতোষ পাল বলেন, দেশের অর্থনৈতিক সামর্থ্য অনেক বেড়েছে। কিন্তু গত ৫০ বছরে আমাদের খেলার মাঠ বা গণপরিসর বাড়েনি। পরিকল্পনার মানদন্ড অনুযায়ী ৩-৫ হাজার লোকের জন্য দুটি মাঠ প্রয়োজন। সে হিসেবে ঢাকা শহরের ২ কোটি জনসংখ্যার জন্য হাজারের বেশি মাঠ থাকা দরকার। একই সঙ্গে ডিটেইল এরিয়া প্ল্যানে (ড্যাপ) বলা হয়েছে, প্রতিটি ওয়ার্ডে অন্তত একটি করে মাঠ, পার্ক ও স্কুল করা হবে। ড্যাপে পরিকল্পনা থাকলেও এগুলো কোন কর্তৃপক্ষ বাস্তবায়ন করবে? নাকি ড্যাপ শুধু কাগজেই থাকবে!

বক্তারা বলেন, মাঠের ঘাটতির ফলে এসব নগর এলাকার অধিকাংশ শিশু-কিশোর খেলাধুলার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে, বঞ্চিত হচ্ছে স্বাভাবিক বিকাশ থেকে। খেলার মাঠের মতোই নগর এলাকায় তিন ধরনেরে পার্কের পরিকল্পনা করতে হয়। সেগুলো হলো নেইবারহুড পার্ক, কমিউনিটি লেভেল পার্ক ও আরবান বা সিটি পার্ক। আমাদের দেশের নগর পরিকল্পনায় এ ধরনের শ্রেণিভিত্তিক পার্ক দেখা যায় না। ফলে বিশাল জনসংখ্যার এই ঢাকা মহানগরীতে বিভিন্ন শ্রেণির পার্ক ও গণপরিসরের তীব্র সংকট আছে।

 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর