শিরোনাম
শনিবার, ২ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

সাম্মাম চাষে চমক

পাথরঘাটা (বরগুনা) প্রতিনিধি

সাম্মাম চাষে চমক

ছোটবেলা থেকেই বাবাকে সহযোগিতা করেছেন, পাশে থেকে কৃষি কাজ শিখেছেন। লেখাপড়ার পাশাপাশি বাবার কাজে সহযোগিতা করেও উচ্চ শিক্ষা অর্জন করেছেন। ইংরেজিতে স্নাতকোত্তর শেষ করে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ইংরেজি বিষয়ে শিক্ষকতা করছেন। এত ব্যস্ততার মধ্যেও কৃষিকাজ করে চমক দেখালেন তিনি।

উপকূলীয় উপজেলা পাথরঘাটার চরদুয়ানী ইউনিয়নের ছোট টেংরা গ্রামের সিরাজুল ইসলামের ছেলে তরিকুল ইসলাম। পাথরঘাটায় তাসলিমা মেমোরিয়াল একাডেমির ইংরেজির সহকারী শিক্ষক। শিক্ষকতা পেশায় থেকেও কৃষিকাজ করে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন তিনি। অসময়ে সাম্মাম আর তরমুজ চাষ করে চমক দেখিয়েছেন। তরিকুল ইসলাম বলেন, বাবা কৃষিকাজ করে আমাদের লেখাপড়া করিয়েছেন। প্রতিদিন বিদ্যালয়ের কাজ শেষ করে বাড়িতে এসে কৃষিকাজ করি। আমার কাজে বাবাও সহযোগিতা করেন। তিনি বলেন, প্রথমে ধান, তরমুজ ও বিভিন্ন রবিশস্য চাষ করতাম। পরে অনলাইনে সাম্মাম চাষ দেখে রংপুর থেকে বীজ সংগ্রহ করে পরীক্ষামূলকভাবে চার বছর আগে চাষ করেছি। প্রথম চাষ করার পর অনেকেই বলেছিলেন, সাম্মাম এ এলাকায় ভালো হবে না। আমি টার্গেট নিয়ে আবার চাষ করেছি। পরের বছর থেকে অসময়ই সাম্মাম চাষ করে লাভের মুখ দেখেছি। এখন মাছের ঘেরের চারপাশে পরিত্যক্ত জমিতে ৫০০ বীজ রোপণ করেছি। মূলত সাম্মাম চাষ হয় মরুভূমিতে। তবে আমি চাষ করছি অসময়ে। সাম্মাম চাষের মৌসুম হলো ফেব্রুয়ারি থেকে এপ্রিল পর্যন্ত। আমি চাষ করেছি মে থেকে জুলাইয়ে। এখন পর্যন্ত ৫০ হাজার টাকার বেশি বিক্রি করেছি। অল্প জমিতে সাম্মাম চাষ করা যায়, খরচ কম, তবে বেশি যত্ন নিতে হয়। সাম্মাম প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১৩০ টাকায়। একেকটির ওজন আধা কেজি থেকে দুই কেজি পর্যন্ত। তরমুজ কেজি বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ টাকায়, একেকটির ওজন আধা কেজি থেকে তিন কেজি পর্যন্ত হচ্ছে। এ ফল খুলনা, রাজশাহী, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় বিক্রি করছি। তরমুজ ও সাম্মাম মিলিয়ে প্রতি বছর ৫ থেকে ৬ লাখ টাকা আয় হয়। কৃষকরা যাতে ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত না হন, সে জন্য শিক্ষিতদের এ পেশায় আসা উচিত। সাম্মাম সুস্বাদু ও মিষ্টি জাতের ফল। এরই মধ্যে সাম্মাম এলাকার মানুষের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। তার জমিতে দুই জাতের সাম্মাম রয়েছে। এর মধ্যে এক জাতের সাম্মামের বাইরের অংশ দেখতে ক্ষীরার মতো খসখসে আর ভেতরে  পেঁপের রং। আরেক জাত হচ্ছে বাইরে সবুজ ভেতরে সাদা। তবে দুটি ফলই খেতে মিষ্টি, রসালো ও সুস্বাদু। সাম্মাম ফলের ভেতরটা দেখতে ও খেতে বাঙ্গির মতো। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শওকত হোসেন বলেন, সাম্মাম মরুভূমি ও পাহাড়ের ফল। তবে আমরা বুঝতে পারছি, উপকূলীয় অঞ্চলে লবণাক্ততায়ও চাষ করা যায়। এ অঞ্চলে এ ফল নতুন, তাই এ ফলের স্বাদ বা উপকারিতা এবং বাজারজাত নিয়ে প্রচারণা দরকার।

 

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর