শুক্রবার, ৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা
ঢাবিতে তিনদিনের বিতর্ক প্রতিযোগিতা উদ্বোধন

বিতর্কে অর্জিত জ্ঞান ভালো মানুষ হয়ে ওঠার সহায়ক

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক

বিতর্কে অর্জিত জ্ঞান ভালো মানুষ হয়ে ওঠার সহায়ক

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পল্লী কবি জাতীয় বিতর্ক প্রতিযোগিতার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিন সম্পাদক নঈম নিজাম ঢাবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক নিজামুল হক ভূঁইয়াকে সম্মাননা স্মারক প্রদান করেন -বাংলাদেশ প্রতিদিন

বিতর্ক হবে বাংলাদেশের অসাম্প্রদায়িকতাকে টিকিয়ে রাখার জন্য। বিতর্ক হবে স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বের ওপর যারা আঘাত হানছে, তাদের নেতিবাচক দিক তুলে আনার জন্য। বিতর্কের মাধ্যমে অর্জিত জ্ঞান শিক্ষার্থীদের ভালো মানুষ হিসেবে গড়ে ওঠার সহায়ক। এটা তাদের প্রযুক্তি-অনুকূল স্মার্ট নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলবে। গতকাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কবি জসীমউদ্দীন হলে আয়োজিত তিন দিনের ‘চতুর্দশ পল্লীকবি জাতীয় বিতর্ক প্রতিযোগিতা’র উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তারা এই অভিমত ব্যক্তি করেন। তিন দিনব্যাপী এ প্রতিযোগিতার আয়োজক- কবি জসীমউদ্দীন হল ডিবেটিং ক্লাব।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান। অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ প্রতিদিন সম্পাদক নঈম নিজাম ছিলেন প্রধান আলোচক। আলোচনার শুরুতে নঈম নিজাম বলেন, ‘বিতর্ক হবে বাংলাদেশের অসাম্প্রদায়িকতাকে টিকিয়ে রাখার জন্য। বিতর্ক হবে স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বের ওপর যারা আঘাত হানছে, তাদের নেতিবাচক দিক তুলে আনার জন্য।’ তিনি বলেন, ‘বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগের জন্য অপরিহার্য। এখন বাংলাদেশ শব্দটির জন্য শেখ হাসিনা অপরিহার্য। বর্তমান অবস্থান ধরে রাখার জন্য, আগামীর উন্নয়নের জন্য তিনি জরুরি। আজকে শেখ হাসিনা না থাকলে নেতৃত্বটা কে দেবেন? ভারতের বিখ্যাত সাংবাদিক এম জে আকবর লিখেছেন, বাংলাদেশের জন্য, ভারতের জন্য, এই উপমহাদেশের জন্য কেন শেখ হাসিনাকে দরকার। ইতিহাসকে স্বীকার করতে হবে, একটা সময় এই উপমহাদেশের অভিভাবকের মতো পরিচিত ছিলেন ভারতের সাবেক রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জি। এই উপমহাদেশে এখন একমাত্র অভিভাবকের নাম শেখ হাসিনা, যিনি বঙ্গবন্ধুর রক্তের উত্তরাধিকার। ঢাবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান বলেন, কিছু কিছু বিষয় নিয়ে বিতর্ক অবশ্যই কাম্য নয়। তবে কিছু বিষয় নিয়ে বিতর্ক হতেই পারে। বঙ্গবন্ধু, জাতীয় পতাকা, মানচিত্র, এগুলো নিয়ে কোনো বিতর্ক নেই। তিনি বলেন, বাংলাদেশ একটি বিচারহীনতার সংস্কৃতিতে প্রবেশ করেছিল। একটি আইন করা হয়েছিল অপরাধের বিচার করা যাবে না। পঁচাত্তরের খুনিচক্র ইমডেমনিটি আইন করেছিল। এর মূল লক্ষ্য ছিল খুনিদের বিচারের আওতায় আনা থেকে রেহাই দেওয়া। আজ একটি শক্তি বলছে, কোনো একটি বিচার প্রক্রিয়া বন্ধ করে দিতে হবে। যারা ইমডেমনিটি আইন করেছিল, তারাই বিচারহীনতার সংস্কৃতির মধ্যে ছিল। আমরা আইনের শাসন নিশ্চিতের জন্য বলতে পারি। সব আন্তর্জাতিক নিয়মনীতি অনুসরণ করে বিচার পরিচালিত হবে। যেখানে অভিযুক্ত যেন আইনি সুরক্ষা পান। আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ পান। কিন্তু একটি বিচারিক প্রক্রিয়া বন্ধ করে দেওয়ার দাবি ইমডেমনিটি আইনের সঙ্গেই সাদৃশ্যপূর্ণ; যা সভ্য দেশে গ্রহণযোগ্য নয়। অনুষ্ঠানে আরও বক্তৃতা করেন সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট শামীমা আক্তার খানম, হল প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. এম শাহীন খান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক নিজামুল হক ভূইয়া, হলের আবাসিক শিক্ষক মুহাম্মদ ইহসান-উল-কবির, ঢাবি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকত ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ডিবেটিং সোসাইটির সভাপতি মাহবুবুর রহমান মাসুম প্রমুখ। সভাপতিত্ব করেন হল ডিবেটিং ক্লাবের সভাপতি এস এম ফরহাদ এবং সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক রিয়াজ উদ্দীন।

সংসদ সদস্য শামীমা আক্তার খানম বলেন, বিতর্ক চর্চা একজন শিক্ষার্থীর মেধা-মনন বিকাশে যেমন সহায়ক হয়, ঠিক তেমনি বিতর্ক শিক্ষার্থীদের সঠিক ও সৎ পথে পরিচালিত করে। তিনি আরও বলেন, বিতর্ক একজন শিক্ষার্থীর মধ্যে পরমতসহিষ্ণুতার প্রবণতা বৃদ্ধি করে যার মাধ্যমে সে একজন আদর্শ ও সহনশীল মানুষ হিসেবে গড়ে ওঠে। অধ্যাপক ড. এম শাহীন খান বলেন, বিতর্ক একজন মানুষকে সত্যানুসন্ধিৎসু মানুষ হিসেবে গড়ে তোলে। তাই একজন বিতার্কিক দেশ ও দশের কল্যাণে অন্য যে কোনো নাগরিকের তুলনায় অধিকতর শক্তিশালী ভূমিকা রাখতে পারে। বিতর্ক প্রতিযোগিতায় প্রাথমিক পর্যায়ে অনলাইনে নিবন্ধনকৃত বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের শতাধিক দলের মধ্যে ৩৬টি দল অংশগ্রহণের সুযোগ পেয়েছে। প্রতিযোগিতায় ৮ সেপ্টেম্বর মূল বিতর্ক প্রতিযোগিতা এবং ৯ সেপ্টেম্বর চূড়ান্ত পর্যায়ের বিতর্ক অনুষ্ঠিত হবে। এই আয়োজনে মূল বিতর্ক প্রতিযোগিতার পাশাপাশি সান্ধ্যকালীন ‘প্রদর্শনী বিতর্কের’ আয়োজন করা হবে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর