শুক্রবার, ৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

লোডশেডিংয়ে অতিষ্ঠ চট্টগ্রাম

দিন-রাত সমানতালে বিদ্যুৎ বিভ্রাটে ভোগান্তি

ইমরান এমি, চট্টগ্রাম

চট্টগ্রামে বিদ্যুতের লোডশেডিংয়ে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে জীবন। সারা দিনের ক্লান্তি শেষে বাসায় ফিরে বিশ্রাম নেওয়ার সুযোগ মিলছে না নগরবাসীর। হঠাৎ চলে যাচ্ছে বিদ্যুৎ, ফিরছে ঘণ্টা দেড়েক পর। রাত ১০টার পর থেকে প্রায় ২-৩টা পর্যন্ত এভাবে বিদ্যুতের লোডশেডিংয়ে নিদ্রা হারাম হয়ে উঠেছে বাকলিয়ার বাসিন্দাদের। শুধু বাকলিয়া নয় নগরের প্রায় সব এলাকায় এভাবে সমানতালে রাত-দিন ২৪ ঘণ্টা চলছে লোডশেডিং। দিনেও ঘণ্টার পর ঘণ্টা লোডশেডিংয়ে কলকারখানার কাজে স্থবিরতা নেমে আসছে। বিদ্যুতের আসা-যাওয়ায় বেশি ভোগান্তিতে পড়েছেন এইচএসসি পরীক্ষার্থীরা। লোডশেডিংয়ের কারণে তাদের পড়াশোনায় ব্যাঘাত ঘটছে। বুধবার চট্টগ্রামে লোডশেডিং করা হয়েছে ২৫৭ মেগাওয়াট বলে জানিয়েছে পিডিবি। পিডিবি চট্টগ্রামের প্রধান প্রকৌশলী রেজাউল করিম বলেন, এখন বিদ্যুতের কিছুটা সমস্যা হচ্ছে। এরই মধ্যে এসএস পাওয়ার প্ল্যান্ট বন্ধ হয়ে গেছে। সেটা চালু করার বিষয়েও আলাপ হচ্ছে। আশা করি দ্রুত সময়ে চাহিদা অনুযায়ী বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হবে। নগরের বাকলিয়া সৈয়দ শাহ রোড এলাকার বাসিন্দা সালমান আহমেদ বলেন, সারা দিন পর রাতে বাসায় আসার পরও শান্তি মিলছে না। দিনের ক্লান্তি শেষে যে একটু বিশ্রাম নিব সে সুযোগ নেই। ঘুম লেগে আসতেই বিদ্যুৎ চলে যাচ্ছে। বাসার ছোট বাচ্চারা ঘুমাতে পারছে না, ঘুম ভেঙে যাচ্ছে। পিডিবির কর্মকর্তারা জানান, বুধবার চট্টগ্রামে বিদ্যুতের চাহিদা ছিল ১ হাজার ৩৩৭ মেগাওয়াট। বিপরীতে বিদ্যুৎ সরবরাহ হয়েছে ১ হাজার ৮০ মেগাওয়াট। যার কারণে এদিন লোডশেডিং করতে হয়েছে ২৫৭ মেগাওয়াট। গরমে এসির ব্যবহার বেড়েছে। একটি এসির বিদ্যুৎ দিয়ে ১০টি ফ্যান চালানো সম্ভব। কিন্তু বিনা প্রয়োজনে অফিসে-বাসায় এসি ব্যবহার হচ্ছে। এটি এড়ানো গেলে বিদ্যুৎ সাশ্রয় হবে। পাশাপাশি অপ্রয়োজনীয় লাইট, ফ্যান বন্ধ রাখতে হবে গ্রাহকদের। অহেতুক বিদ্যুৎ অপচয় না করে সাশ্রয়ী হওয়ার আহ্বান জানান তারা। দেশে যে পরিমাণ বিদ্যুৎ উৎপাদন হয় তার চার ভাগের এক ভাগ আসে জ্বালানি তেলচালিত বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো থেকে। জ্বালানি স্বল্পতার কারণে এখন এসব বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোর অধিকাংশ প্রায় বন্ধ থাকছে। এতে উৎপাদন কমে গেছে। জাতীয় গ্রিড থেকে চাহিদা অনুযায়ী বিদ্যুৎ পাওয়া যাচ্ছে না। এর মধ্যে গত মঙ্গলবার পরীক্ষামূলকভাবে বিদ্যুৎ উৎপাদনে থাকা এসএস পাওয়ার প্ল্যান্ট বন্ধ থাকায় সংকট আরও বেড়েছে।

গত এক যুগে কেবল ক্যাপাসিটি চার্জ বাবদই ১ লাখ কোটি টাকা ব্যয়ের খবর নিয়ে যখন নানা প্রশ্ন উঠছে- তখন জ্বালানি সংকটের কারণে ভয়াবহ লোডশেডিং হওয়া নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে প্রতিবাদও জানাচ্ছেন অনেকে। দ্রুত জ্বালানি তেল আমদানি করে বিদ্যুৎ উৎপাদন ও সরবরাহ স্বাভাবিক করার দাবি জানিয়েছেন তারা।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর