শিরোনাম
রবিবার, ১০ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

দিশাহীন খুলনার উন্নয়ন

সামছুজ্জামান শাহীন, খুলনা

দিশাহীন খুলনার উন্নয়ন

কাগজে-কলমে পুকুর-জলাশয় সংরক্ষণের কথা বলা হলেও খুলনা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের পাশে রেলওয়ের বড় একটি জলাশয় রাতারাতি ভরাট করা হয়েছে। সিটি করপোরেশনের দুই কাউন্সিলরের নেতৃত্বে সেখানে বহুতল ভবন তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ খালিশপুর থানায় জিডি করলেও জলাশয় ভরাটের কাজ বন্ধ হয়নি। একইভাবে মুজগুন্নী মহাসড়কে নতুন রাস্তার মোড় থেকে বিজিবি ক্যাম্প পর্যন্ত সড়কের মাঝে সৌন্দর্যবর্ধনের নামে পুরনো গাছ কাটা হচ্ছে। পরিবেশ রক্ষায় পুরনো দৃষ্টিনন্দন গাছগুলো রেখেই সেখানে সৌন্দর্যবর্ধনের কাজ করার দাবি জানিয়েছে পরিবেশ সংগঠক ও নাগরিক নেতারা। বিশ্লেষকরা বলছেন, শহরের দুই পাশে  ভৈরব ও রূপসা নদীর তলদেশ উঁচু হওয়ায় সমন্বয় করে সড়ক-ড্রেন উঁচু করার কথা বলা হচ্ছে। কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রেই অপরিকল্পিত উন্নয়নে ভোগান্তি বাড়ছে। সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) জেলা সম্পাদক অ্যাডভোকেট কুদরত-ই খুদা বলেন, পরিবেশ সংরক্ষণের নামে পরিবেশ নষ্ট করা হচ্ছে। সৌন্দর্যবর্ধনের নামে যে গাছ ক্ষতিকারক নয় তা কাটা যাবে না। তিনি বলেন, ‘বিগত দিনে নদীর তলদেশ কতখানি উঁচু হয়েছে, সে জরিপের সঙ্গে আগামী ৫০ বছর পর নদী কতটুকু উঁচু হতে পারে সে পরিকল্পনা করেই ড্রেন করা উচিত। কিন্তু এখানে অপরিকল্পিত ড্রেন নির্মাণ করা হচ্ছে। এর আগে গল্লামারীতে নদীর উচ্চতার সঙ্গে সমন্বয় ছাড়া অপরিকল্পিত ব্রিজ তৈরি করা হয়। ব্রিজের নিচ দিয়ে নৌকা বা ট্রলার যাওয়ার পথ নেই। যিনি এটা করেছেন তাকে শোকজ বা বরখাস্ত করা হয়নি। জনগণের কাছে দায়বদ্ধতা না থাকায় দুরবস্থা বাড়ছে।’  জানা যায়, জলাবদ্ধতা নিরসনে প্রায় ৮২৩ কোটি টাকার মেগা প্রকল্প বাস্তবায়িত হলেও সুফল পায়নি নগরবাসী। সামান্য বৃষ্টিতে নগরীর এক-তৃতীয়াংশ এলাকায় জলাবদ্ধতা তৈরি হয়। শহরের বিভিন্ন স্থানে অপরিকল্পিত রাস্তা উঁচু করায় কয়েক হাজার বাড়িঘর রাস্তার তুলনায় নিচে চলে গেছে। মনিটরিং না থাকায় বহুতল ভবনের নিচতলায় কার পার্কিংয়ের জায়গায় অবৈধ স্থাপনা করে ভাড়া দেওয়া হয়। এতে মূল সড়কে যানবাহনের চাপ বাড়ছে। নিয়ন্ত্রণহীন ইজিবাইকে বাড়ছে যানজট।

এদিকে খুলনা নগরীর পরিবেশ রক্ষায় আজ নতুন রাস্তার মোড়ে মানববন্ধন ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করবে বেসরকারি সংগঠন টিআইবি, সুজন, পরিবেশ রক্ষা মঞ্চ, বেলা, বাপা, নিজেরা করিসহ বিভিন্ন পরিবেশ ও নাগরিক সংগঠন। বিশ্লেষকরা বলছেন, সর্বশেষ সিটি নির্বাচনে মেয়র পদে জয় পেলেও এখনো দায়িত্ব না পাওয়ায় সাড়ে ৩ মাসের বেশি ক্ষমতার বাইরে রয়েছেন সিটি মেয়র তালুকদার আবদুল খালেক। ফলে নগরীর উন্নয়ন কর্মকান্ড অনেকটাই দিশাহীন হয়ে পড়েছে। সিটি মেয়র তালুকদার খালেক বলেন, ‘দায়িত্ব গ্রহণ না করলেও নগরবাসীর সমস্যা-দুর্ভোগের কথা শুনছি। প্রতিদিনই নগরের বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে মানুষজনের সঙ্গে কথা বলছি। নতুন রাস্তার মোড়ে রোড ডিভাইডারের গাছ খুব বেশি বড় হওয়ার কথা নয়, তারপরও বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখছি।’

 

 

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর