বুধবার, ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত লক্ষাধিক সহায়তা পেলেন ৮ হাজার কৃষক

ইমরান এমি, চট্টগ্রাম

সাম্প্রতিক বন্যায় চট্টগ্রাম জেলায় কৃষি খাতে ১৮৪ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। এর মধ্যে আউশ ও আমন আবাদে ক্ষতি হয়েছে প্রায় ৭১ কোটি ৮২ লাখ টাকার। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন প্রায় ১ লাখ ১৫ হাজার ৪৪০ কৃষক। আর্থিক ক্ষতির পাশাপাশি যথাসময়ে আমান আবাদ নিয়েও তৈরি হয়েছে শঙ্কা। এরই মধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের ধানবীজ দিয়ে সহায়তা করার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। চট্টগ্রামের তিন উপজেলা ও কক্সবাজারের দুই উপজেলা মিলে মাত্র ৮ হাজার কৃষককে ধানবীজ দেওয়া হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকের তুলনায় তা অত্যন্ত অপ্রতুল্য হলেও আগামী মৌসুমে আরও কৃষককে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্টরা। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর চট্টগ্রাম অঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালক ড. অরবিন্দ কুমার রায় বলেন, আমরা ৭৫ হাজার কৃষককে সহায়তা করার জন্য অবেদন করেছিলাম। এরপর ৫০ হাজার কৃষককে সহায়তার জন্য বললেও পর্যাপ্ত না থাকার কারণে পায়নি। তবে এ মৌসুমে যেসব ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক সহায়তা পাননি তারা আগামী মৌসুমে সহায়তা পাবেন। আমরা চেষ্টা করছি ক্ষতিগ্রস্ত সব কৃষককে সহায়তা দেওয়ার। চট্টগ্রাম জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্র জানায়, চট্টগ্রাম জেলার মধ্যে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সাতকানিয়া, লোহাগাড়া ও চন্দনাইশ উপজেলায়। এ ছাড়া ক্ষতিগ্রস্ত কক্সবাজার জেলার চকরিয়া ও পেকুয়া উপজেলা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

এ পাঁচ উপজেলায় আউশের আবাদ, রোপা আমন ও আমনের বীজতলা পানিতে তলিয়ে যায়। বিভিন্ন এলাকায় আমানের বীজতলা নষ্ট হওয়ায় সৃষ্টি হয় চারা সংকট। ফলে পিছিয়ে গেছে আমনের আবাদ। কৃষি অফিস থেকে চট্টগ্রামের তিন উপজেলায় ৩০ টন ধানবীজ বিতরণ করা হয়েছে। এ তিন উপজেলায় ৬ হাজার কৃষককে পাঁচ কেজি করে ধানবীজ প্রদান করা হয়। এ উদ্যোগের মাধ্যমে প্রতি উপজেলায় ২ হাজার কৃষক ধানবীজ পেয়েছে। অন্যদিকে কক্সবাজার জেলার চকরিয়া উপজেলার ১ হাজার ও পেকুয়া উপজেলার ১ হাজার কৃষককে ধানবীজ সহায়তা দেওয়া হয়েছে।

কৃষকরা বলেছেন, ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকের তুলনায় উপকারভোগী কৃষকের সংখ্য খুবই নগন্য। জেলায় আউশ-আমন আবাদকারী ৪০ হাজার ৭৫৫ কৃষক বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর মধ্যে তিন উপজেলায় ধানবীজ পেয়েছে মাত্র ৬ হাজার কৃষক, যা খুবই নগন্য। আউশ-আমন আবাদ ছাড়াও বন্যায় আমাদের হাজার হাজার টাকার ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতির তুলনায় পাঁচ কেজি বীজ ধান খুুবই অপ্রতুল। আমাদের আর্থিক প্রণোদনা প্রদানের জন্য সরকারের কাছে আমরা দাবি জানাচ্ছি।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক মোহাম্মদ আবদুচ ছোবহান বলেন, বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত তিন উপজেলার কৃষকদের ধানবীজ প্রদান করা হয়েছে। একজন কৃষককে পাঁচ বিঘা জমির জন্য বীজ প্রদান করা হয়েছে। চট্টগ্রাম অঞ্চলে এখন আউশ আবাদ পুরোদমে শুরু হয়নি। এ ছাড়া কৃষকদের যে বীজ দেওয়া হয়েছে তা কম সময়ে ফলন আসবে। তাই আমরা আশা করছি- আমাদের দেওয়া বীজ থেকে চারা তৈরি করেই তারা আমন আবাদ করতে পারবে।

সর্বশেষ খবর