বৃহস্পতিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

নতুন মাত্রায় দক্ষিণের সড়ক নেটওয়ার্ক

♦ খুলনা জোনে ৩১৭.২২ কিমি সড়ক পুনর্নির্মাণ, ব্যয় ৭৫৬ কোটি টাকা ♦ নিরাপদ ও সময় সাশ্রয়ী যোগাযোগব্যবস্থায় গতিশীল হবে অর্থনীতি

সামছুজ্জামান শাহীন, খুলনা

নতুন মাত্রায় দক্ষিণের সড়ক নেটওয়ার্ক

পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে যোগাযোগব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন হয়েছে। এক্ষেত্রে অর্থনৈতিক সুবিধাকে কাজে লাগাতে খুলনার প্রত্যন্ত এলাকায় নিরাপদ সড়ক নেটওয়ার্ক গড়ে তুলতে ২৬টি প্যাকেজের আওতায় ৩১৭.২২ কিলোমিটার সড়ক পুনর্নির্মাণ করা হয়েছে। এতে ব্যয় হয়েছে প্রায় ৭৫৬ কোটি ৭৯ লাখ টাকা। এ ছাড়া ঘূর্ণিঝড় আম্ফানে খুলনার পাইকগাছা ও সাতক্ষীরার আশাশুনিতে ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক মেরামত ও প্রশস্তকরণ, অতিবৃষ্টিতে নড়াইল ও চুয়াডাঙ্গায় ক্ষতিগ্রস্ত সড়কে পুনর্নির্মাণ মজবুতিকরণে সংশোধিত প্রকল্প  নেওয়া হয়েছে। এতে অনুমোদিত ব্যয় ধরা হয়েছে ১০৬ কোটি ১৭ লাখ টাকা। ২০২৪ সালে জুনের মধ্যে এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করবে সড়ক ও জনপথ (সওজ) অধিদফতর। বিশ্লেষকরা বলছেন, এসব প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে নিরাপদ ও আধুনিক যোগাযোগব্যবস্থায় গতিশীল হবে অর্থনীতি। জানা যায়, আঞ্চলিক সড়ক নেটওয়ার্কে মান উন্নয়ন, সুষ্ঠু নিরাপদ ও সময় সাশ্রয়ী যোগাযোগব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হাইওয়েজ ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট (এইচডিএম) এর জরিপের আওতায় খুলনা জোনের ১০টি জেলার ৩১৭.২২ কিলোমিটার সড়কে পুনর্নির্মাণ ও প্রশস্তকরণে উদ্যোগ নেওয়া হয়। ‘জেলা মহাসড়ক যথাযথ মান ও প্রশস্ততায় উন্নীতকরণ প্রকল্প’র ২০১৮ সালের জুলাই থেকে ২০২২ সালের জুন পর্যন্ত অগ্রগতি ৯৮ শতাংশ। এর মধ্যে প্রায় ৭৩৯.৮৪ কোটি টাকা ব্যয়ে খুলনার কয়রা, তেরখাদা, দাকোপ, বাগেরহাটে মোরেলগঞ্জ, কচুয়া, মোংলা, সাতক্ষীরার সদর, দেবহাটা, কালিগঞ্জ, আশাশুনি, শ্যামনগর, যশোরে বাঘারপাড়া, চৌগাছা, মাগুরা সদর, মোহাম্মদপুর, শালিখা, নড়াইলের সদর, লোহাগড়া, কালিয়া, কুষ্টিয়ার মিরপুর, দৌলতপুর, ঝিনাইদহ কালিগঞ্জ, চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা ও মেহেরপুরের সদর, গাংনী, মুজিবনগর অঞ্চলে সড়ক পুনর্নির্মাণ ও প্রশস্তকরণ কাজ করা হয়েছে। তবে প্রকল্প চলমানকালে ঘূর্ণিঝড় আম্ফান ও অতিবৃষ্টিতে খুলনা, সাতক্ষীরা, নড়াইল চুয়াডাঙ্গার সড়ক ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এসব সড়কে পুনর্নির্মাণে সংশোধিত আকারে প্রকল্প মেয়াদ ২০২৪ সালে জুন পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়েছে। প্রকল্পের ব্যয় বৃদ্ধি পেয়েছে আরও ১০৬ কোটি ১৭ লাখ টাকা। সড়ক বিভাগ খুলনা সার্কেল অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী সৈয়দ আসলাম আলী জানান, ২০৪১ সালের মধ্যে আধুনিক সড়ক নেটওয়ার্ক ব্যবস্থা গড়ে তুলতে সড়কের ধারণ ক্ষমতা বৃদ্ধি, প্রয়োজন অনুসারে সড়কের প্রশস্ততা ফোর লেন, সিক্স লেনসহ বিভিন্ন পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে। প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে যোগাযোগব্যবস্থার যুগান্তকারী উন্নয়নের পাশাপাশি অর্থনীতি সমৃদ্ধ ও গতিশীল হবে।

তিনি বলেন, আম্ফানে খুলনার পাইকগাছা-কয়রা-নয়াবেকি রাস্তার কিছু অংশ ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এ ছাড়া সাতক্ষীরার আশাশুনি, নড়াইলের কালিয়ায় ও চুয়াডাঙ্গাতে রাস্তা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। চলমান প্রকল্পের অর্থ দিয়ে ওই রাস্তা পুনর্নির্মাণ করা সম্ভব ছিল না। এ ছাড়া প্রকল্প শুরুর পর নির্মাণসামগ্রীর মূল্যবৃদ্ধিতে চুক্তিমূল্য থেকে প্রায় ৭০ কোটি টাকা ব্যয় বৃদ্ধি পায়। ফলে মূল প্রকল্পে প্রথম সংশোধিত প্রকল্প উপস্থাপন করা হয়। ১২ সেপ্টেম্বর একনেকে ওই প্রকল্প অনুমোদন পেয়েছে।

কর্মকর্তারা বলছেন, সড়কের এ প্রকল্পের বাইরে খুলনা-যশোর মহাসড়কের যশোর অংশে, খুলনা-চুকনগর-সাতক্ষীরা মহাসড়কে খুলনা শহরাংশে চার লেন, মাগুরা-শ্রীপুর মহাসড়কে বাঁক সরলীকরণ, দর্শনা-মুজিবনগর আঞ্চলিক মহাসড়কে উন্নয়ন, যশোর-মনিরামপুর-কেশবপুর-চুকনগর সড়ক উন্নয়ন কাজ করা হয়েছে। এ ছাড়া যশোর-খুলনা-মোংলা সিক্স লেন সড়কের জন্য জমি অধিগ্রহণে প্রস্তাবনা চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। সড়কে যানবাহনে চাপ কমাতে খুলনা জিরোপয়েন্ট ও ফুলবাড়ি গেটে দুটি ফ্লাইওভার নির্মাণেরও পরিকল্পনা রয়েছে।

 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর