বৃহস্পতিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

রাশিয়া থেকে ৩ লাখ টন গম কেনা হচ্ছে

মন্ত্রিসভা কমিটির সভায় ২৩ হাজার কোটি টাকার ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন

নিজস্ব প্রতিবেদক

রাশিয়া থেকে ৩ লাখ মেট্রিক টন গম আমদানি এবং স্বল্পমূল্যে বিক্রির জন্য ৩ কোটি ৮০ লাখ লিটার সয়াবিন তেল ক্রয়ের দুটি প্রস্তাবসহ ১৪ ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে সরকারি ক্রয়-সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি। এতে মোট ব্যয় হবে ২৩ হাজার ৮২ কোটি ৪৬ লাখ টাকা। গতকাল অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সভাপতিত্বে কমিটির এক ভার্চুয়াল সভায় প্রস্তাবগুলো অনুমোদন দেওয়া হয়। সভা শেষে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব সাঈদ মাহবুব খান বলেন, সরকারি ক্রয়-সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির ৩০তম সভা হয়েছে। ক্রয় কমিটির অনুমোদনের জন্য ১৪টি প্রস্তাব উপস্থাপন করা হয়। প্রস্তাবগুলোর মধ্যে বিদ্যুৎ বিভাগের চারটি, কৃষি মন্ত্রণালয়ের চারটি, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের তিনটি, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের একটি, সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের একটি এবং খাদ্য মন্ত্রণালয়ের একটি প্রস্তাব ছিল। অনুমোদিত ১৪টি প্রস্তাবে মোট অর্থের পরিমাণ ২৩ হাজার ৮২ কোটি ৪৬ লাখ ৮২ হাজার ৫৪৬ টাকা। সভায় ‘যশোর বিমানবন্দর, সৈয়দপুর বিমানবন্দর ও শাহ মখদুম বিমানবন্দর, রাজশাহীর রানওয়ে সারফেসে অ্যাসফল্ট কংক্রিট ওভারলেনকরণ’-এর পূর্ত কাজ ক্রয়ের প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে কমিটি। এতে মোট ব্যয় হবে ৭৭২ কোটি ৭৪ লাখ ৯৭ হাজার ১০৫ টাকা। অতিরিক্ত সচিব বলেন, ‘হাতিরঝিল-রামপুরা সেতু-বনশ্রী-শেখের জায়গা-আমুলিয়া-ডেমরা মহাসড়ক চার লেনে উন্নীতকরণ’ প্রকল্পের আওতায় পরামর্শক প্রতিষ্ঠান নিয়োগের ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে কমিটি। এতে ব্যয় হবে ৫৩ কোটি ৩০ লাখ ১৪ হাজার ৭২১ টাকা।

তিনি বলেন, রাশিয়ান ফেডারেশন থেকে জি-টু-জি পদ্ধতিতে ৩ লাখ মেট্রিক টন গম আমদানির প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে কমিটি। জি-টু-জি ভিত্তিতে ৩ লাখ মেট্রিক টন গম আমদানিতে ব্যয় হবে ৯ কোটি ৩৯ লাখ মার্কিন ডলার সমপরিমাণ বাংলাদেশি মুদ্রায় ১ হাজার ৩২ কোটি ৯০ লাখ টাকা। প্রতি কেজি গমের মূল্য ৩৪.৪৩ টাকা। সভায় ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে স্থানীয়ভাবে উন্মুক্ত দরপত্র পদ্ধতিতে ৬ হাজার (+৫%) মেট্রিক টন মসুর ডাল ক্রয়ের একটি প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে কমিটি। প্রতি কেজি ৯৬.৮৫ টাকা হিসাবে মোট ব্যয় হবে ৫৮ কোটি ১১ লাখ টাকা। অতিরিক্ত সচিব বলেন, টিসিবি কর্তৃক ৩ কোটি ৩০ লাখ লিটার সয়াবিন তেল ক্রয়ের জন্য আন্তর্জাতিক সরবরাহ সংস্থা মালয়েশিয়ার ব্রিজো মেরিন এসডিএন বিএইচডি (স্থানীয় এজেন্ট : সেনা এডিবল অয়েল ইন্ডাস্ট্রিজ, বাংলাদেশ) ৩ কোটি ৩০ লাখ লিটার সয়াবিন তেল সরবরাহ করবে। ১৫৫.৯৩৩ টাকা হিসাবে ৩ কোটি ৩০ লাখ লিটার সয়াবিন তেল ক্রয়ে ব্যয় হবে ৪৩৩ কোটি ৬২ লাখ টাকা। অন্যদিকে, স্থানীয় দরপত্রের মাধ্যম ক্রয় করা হবে ৫০ লাখ লিটার সয়াবিন তেল। স্থানীয় দরপত্রে মোট চারটি প্রতিষ্ঠান অংশ নেয়। এতে সর্বনিম্ন দরদাতা হিসেবে বসুন্ধরা মাল্টি ফুড প্রডাক্ট লিমিটেড এ সয়াবিন তেল সরবরাহ করবে। প্রতি লিটার সয়াবিন তেলের দাফতরিক প্রাক্কলিত দর ধরা হয় ১৭১.৩২ টাকা। বসুন্ধরা প্রতি লিটার সয়াবিন তেল সরবরাহ করবে ১৫৯.৮৫ টাকায়। টিসিবির গোডাউন পর্যন্ত দুই লিটার পেট বোতলে এই সয়াবিন পৌঁছে দিতে মোট খরচ হবে ৭৯ কোটি ৯২ লাখ ৫০ হাজার টাকা। অতিরিক্ত সচিব বলেন, রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে চুক্তির আওতায় কানাডা থেকে ১৩তম লটে ৫০ হাজার মেট্রিক টন মিউরেট-অব-পটাশ (এমওপি) সার আমদানির একটি প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে কমিটি। কানাডা থেকে ৫০ হাজার (+১০%) মেট্রিক টন এমওপি সার বর্তমান আন্তর্জাতিক বাজার মূল্যে সর্বমোট ১ কোটি ৬১ লাখ ৫০ হাজার ডলার সমপরিমাণ বাংলাদেশি মুদ্রায় ১৭৭ কোটি ৬৫ লাখ টাকা। প্রতি মেট্রিক টন এমওপি সার ৩২৩ ডলার।

তিনি বলেন, রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে চুক্তির আওতায় কানাডা থেকে ১৪তম লটে ৫০ হাজার মেট্রিক টন মিউরেট-অব-পটাশ (এমওপি) সার আমদানির আরও একটি প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে কমিটি। প্রতি মেট্রিক টন এমওপি সারের দাম ৩২৩ ডলার।

সভায় রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে চুক্তির আওতায় মরক্কো থেকে ষষ্ঠ লটে ৪০ হাজার মেট্রিক টন ডিএপি সার আমদানির একটি প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে কমিটি। প্রতি মেট্রিক টন ডিএপি সারের দাম ৫২৬ ডলার।

অতিরিক্ত সচিব জানান, রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে চুক্তির আওতায় মরক্কো থেকে সপ্তম লটে ৩০ হাজার মেট্রিক টন টিএসপি সার আমদানির প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে কমিটি।

তিনি বলেন, টার্নকি ভিত্তিতে ইউনিফাইড প্রিপেইড সিস্টেমের আপগ্রেডেশনসহ উন্নত মিটারিং পরিকাঠামোর ডিজাইন, সরবরাহ, ইনস্টলেশন, টেস্টিং কমিশনিং কাজের ক্রয় প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছে কমিটি। এতে ব্যয় হবে ৪৬০ কোটি ৫০ লাখ ৪৫ হাজার ৭২০ টাকা।

সভায় দিনাজপুর জেলার বোচাগঞ্জ ও ঠাকুরগাঁও জেলার পীরগঞ্জ উপজেলায় ১০০ মেগাওয়াট (এসি) ক্ষমতার সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের ট্যারিফ অনুমোদন দিয়েছে ক্রয় কমিটি। ট্যারিফ ভিত্তিতে বিদ্যুৎ ক্রয় করা হলে ২০ বছর মেয়াদে উক্ত কোম্পানিকে প্রতি কিলোওয়াট ঘণ্টা ১০.৮৭৮২ টাকা হিসাবে আনুমানিক ৩ হাজার ৫২৫ কোটি ৬০ লাখ টাকা পরিশোধ করতে হবে।

কক্সবাজার জেলার সদর উপজেলায় ১০০ মেগাওয়াট (এসি) ক্ষমতার সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের ট্যারিফ নির্ধারণের প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছে কমিটি। এ ছাড়া কক্সবাজারের চকরিয়ায় ২২০ মেগাওয়াট ক্ষমতার বায়ুবিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের ট্যারিফ অনুমোদন দিয়েছে কমিটি।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর