শনিবার, ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

সিন্ডিকেটের কবলে নিত্যপণ্য

নিজস্ব প্রতিবেদক, রংপুর

সিন্ডিকেটের কবলে নিত্যপণ্য

বর্তমানে আলু, পিঁয়াজ, ডিম, ভোজ্য তেল, চাল-আটা, শাক-সবজিসহ প্রতিটি পণ্যের মূল্য অস্বাভাবিক বেড়েছে। মূল্যবৃদ্ধির এই প্রতিযোগিতায় সবখানে ব্যবহার হচ্ছে একটি বহুল প্রচলিত শব্দ ‘সিন্ডিকেট’। অবৈধ সুযোগ নিয়ে অর্থ হাতিয়ে নিতে সিন্ডিকেটের জুড়ি নেই। চেষ্টা করেও এই সিন্ডিকেট ভাঙতে পারছে না সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগ ও মন্ত্রণালয়। সরকার আলু, ডিম ও পিঁয়াজের মূল্য নির্ধারণ করে দিয়েছে। এই দামে কোথাও ওই তিনটি পণ্য পাওয়া যবে কি না এ নিয়ে সন্দিহান রয়েছেন ভোক্তারা। সিন্ডিকেটের কারসাজিতে মূল্যবৃদ্ধির জাঁতাকলে সবচেয়ে বেশি পিষ্ট হচ্ছেন রংপুর অঞ্চলের সাধারণ মানুষ। সিন্ডিকেট প্রসঙ্গে গতকাল সকালে রংপুর সফরে এসে জাপা চেয়ারম্যান জি এম কাদেরও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। রংপুরসহ বিভিন্ন স্থানে চালের বাজারে অস্থিরতা দেখা যাচ্ছে। ৫৫ টাকা থেকে ৭৫ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে চাল। সয়াবিন তেলের দাম সরকার নির্ধারণ করে দিলেও তা মানছেন না অনেক ব্যবসায়ী। যথেষ্ট চাল আছে, কিন্তু চাল ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে মজুদ করে রেখেছেন। ফলে চালের বাজারের পুরো নিয়ন্ত্রণ অসাধু ব্যবসায়ীদের হাতে। চালের বাজারে এই অস্থিরতার পেছনে আমদানিকারক, পাইকারি ব্যবসায়ী ও মিলারদের হাত রয়েছে বলেও  ধারণা করা হচ্ছে। বড় বড় অটো রাইস মিল মালিক ও ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন হাটবাজার থেকে হাজার হাজার টন ধান-চাল ক্রয় করে মজুদ রেখে  নিজেদের ইচ্ছামতো মূল্য নির্ধারণ করে বাজার নিয়ন্ত্রণ করছে। ফলে বাজারে চালের দাম কমছে না। শাক-সবজির কৃষক পর্যায়, খুচরা বাজার ও পাইকারি বাজারের বিস্তর ফাঁরাক সিন্ডিকেটের কারণে। বাজারে আলুর দাম প্রতি কেজি ৫০ টাকার ওপর। হিমাগারে রাখা আলু একটি সিন্ডিকেট  নিজেদের ইচ্ছামতো তুলে বাজার নিয়ন্ত্রণ করছে। তবে হিমাগার মালিকরা বলছেন সিন্ডিকেটের সঙ্গে তারা জড়িত নন। ডিমের বাজারও সিন্ডিকেটের কবজায়। স্থানীয় ব্যবসায়ী ও খামারিদের সঙ্গে কথা হলে তারা বলেন, ডিমের মূল্য নির্ধারণ হয় ঢাকা থেকে। সেখান থেকে যে দর বেঁধে দেয় এর বাইরে যাওয়ার উপায় নেই। নিত্যপণ্যের পাশাপাশি আরও অনেক সিন্ডিকেট রয়েছে। সিন্ডিকেট প্রসঙ্গে গতকাল দুপুরে রংপুরের পল্লী নিবাসে সাংবাদিকদের জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের বলেছেন, সিন্ডিকেট সরকারকে কোনো পাত্তা দিচ্ছে না। যেখানে সরকারের ইন্টারফেয়ার করার কথা, সরকারের কিছু দায়িত্ব থাকে। সেসব জায়গায় তারা সঠিকভাবে কিছু করছে, এ ধরনের কোনো প্রমাণ আমরা পাই না। সেই কারণে দ্রব্যমূল্য সরকার যাই বেঁধে দিয়ে থাকুক, বাজারে এর চেয়ে মূল্য  বেশি। কৃষকরা অনেক সময় কম দামে দিচ্ছে, শহরে তা অনেক বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। সেটা করা হচ্ছে অযৌক্তিকভাবে। তা নিয়ন্ত্রণে সরকারের  কোনো বন্দোবস্ত বা পদক্ষেপ জনগণের চোখে পড়ছে না। দ্রব্যমূল্যের চাপে মানুষ অত্যন্ত খারাপ অবস্থায় আছে। রংপুর পৌরসভার সাবেক চেয়ারম্যান কাজী মো. জুননুন বলেন, দেশে সিন্ডিকেট ও মজুদদারি প্রতিরোধে আইন হয়েছে। এ আইনের সুষ্ঠু প্রয়োগ করে সিন্ডিকেট ও মজুদদারদের দৌরাত্ম্য রোধ করা হলে মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্তের মাঝে কিছুটা স্বস্তি ফিরে আসবে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর