রবিবার, ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে নামেই ক্র্যাশ প্রোগ্রাম

প্রতিদিনই আক্রান্ত ও মৃত্যু

রেজা মুজাম্মেল, চট্টগ্রাম

ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে নামেই ক্র্যাশ প্রোগ্রাম

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) নগরের নালা-নর্দমা ও ড্রেন পরিষ্কার করে। একই সঙ্গে ওষুধ ছিটিয়ে ক্র্যাশ প্রোগ্রামের মাধ্যমে এডিস মশা উৎপাদন নিয়ন্ত্রণ রাখে। কিন্তু চসিক কাজ দুটি নিয়মিত করছে বলে দাবি করলেও এর ইতিবাচক প্রভাব দেখা যায় না। নামেই চলে ক্র্যাশ প্রোগ্রাম। তথ্য বলছে, চট্টগ্রামে এডিস মশা নিয়ন্ত্রণহীন। ফলে প্রতিদিনই মৃত্যু ও আক্রান্ত দুটোই হচ্ছে। গতকালও ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে দুজন মারা যান। চসিক চলতি মৌসুমে গত মে মাসে একবার এবং গত ৪ ও ২২ জুন দুইবার আনুষ্ঠানিকভাবে ক্র্যাশ প্রোগ্রাম করে। 

অভিযোগ আছে, চসিক নানাভাবে বলে আসছে ক্র্যাশ প্রোগ্রাম পরিচালনার কথা। কিন্তু বাস্তবে ওষুধ ছিটাতে দেখা যায় না। অনুষ্ঠানস্থল বা ঘোষিত কর্মসূচির বাইরে তাদের দেখা কমই মেলে। ¯ন্ডেপ্রম্যানদের কাজ অনেকটা অনুষ্ঠাননির্ভর। মাঝে মাঝে এলেও গলি বা এলাকায় না গিয়ে সড়কের পাশের নালায় নামমাত্র স্প্রে করে চলে যায়।     

ঘাটফরহাদবেগ এলাকার বাসিন্দা ইরশাদুল আলম বলেন, সাধারণ সময়ে কখনো স্প্রেম্যানদের দেখা যায় না। তা ঠিক আছে। কিন্তু এখন ডেঙ্গুর প্রকোপের সময়েও কাউকে ওষুধ ছিটাতে দেখা যায় না। অথচ বিভিন্ন সময় আমরা ক্র্যাশ প্রোগ্রাম চলার কথা শুনি। কোথায় ওষুধ ছিটানো হয় তা জানি না। চসিক এডিস মশা নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ। 

চসিকের অতিরিক্ত প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা মোরশেদুল আলম চৌধুরী বলেন, নিয়মিত ওষুধ ছিটানোর কাজ হয়। নিয়ম করে প্রতিটি ওয়ার্ডেই দুজন স্প্রেম্যান ওষুধ ছিটাচ্ছেন। এ সব কাজ তদারক করছেন একজন সুপারভাইজার। তবে মশা প্রজননস্থল ও নালা-নর্দমার তুলনায় ওষুধ কম। তাই হয়তো এর প্রভাবও কম। 

চসিক সূত্রে জানা যায়, বর্তমানে পরিচ্ছন্ন বিভাগে স্প্রে মেশিন আছে ২০০টি, ফগার মেশিন আছে ১২০টি ও মশক নিধনে জনবল আছেন ৩৬০ জন। চসিক নগরের ৪৩৩টি মশা প্রজননের হটস্পট চিহ্নিত করে। তাছাড়া ডেঙ্গু শনাক্ত হয়েছে এমন ৫৭টি স্পট চিহ্নিত করে। একই সঙ্গে চট্টগ্রাম বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালকের কার্যালয়ের উদ্যোগে পরিচালিত এক জরিপে নগরের ৩০ শতাংশ বাসায় ডেঙ্গুর জীবাণুবাহী এডিস মশার লার্ভা পাওয়া গেছে। তাছাড়া, ২১টি ওয়ার্ডে মশার ঘনত্ব বেড়ে হয়েছে ৪৬ শতাংশ।    

সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, চট্টগ্রামে প্রতিদিনই ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত ও মৃত্যু হচ্ছে। সর্বশেষ গত শুক্রবার সকাল থেকে গতকাল সকাল পর্যন্ত চট্টগ্রামে দুজন মারা যান এবং   নতুন করে আক্রান্ত হন ১২৪ জন। ইতোমধ্যে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মারা যান ৬৫ জন এবং মোট আক্রান্ত হন ৭ হাজার ৬৭৭ জন। ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৩২৯ জন। এর মধ্যে চমেক হাসপাতালে ১৪১ জন, জেনারেল হাসপাতালে ৩৫ জন এবং ১৪ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে ভর্তি আছেন ১৫৩ জন। এ বছর চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৭ হাজার ৩৪৮ জন।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর