বুধবার, ২০ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা
চট্টগ্রাম

হচ্ছে না নগর আওয়ামী লীগের সম্মেলন

জাতীয় নির্বাচনের আগে হওয়ার সম্ভাবনা নেই

আজহার মাহমুদ, চট্টগ্রাম

পাঁচ দফা প্রস্তুতি নিয়েও সম্মেলন আয়োজন করতে পারেনি চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগ। দলীয় প্রধানের জনসভা, উপনির্বাচন এবং তৃণমূলে কমিটি গঠন নিয়ে কোন্দলের কারণে বারবার সম্মেলন পিছিয়ে গেছে। চলতি বছরের শেষে জাতীয় নির্বাচনে অংশ নেওয়ার প্রস্তুতি নিয়ে এগোচ্ছে ক্ষমতাসীন দল। নির্বাচনের আগে সম্মেলনের সম্ভাবনা কমে আসছে বলে মনে করেন দলের বেশ কিছু নেতা। ফলে নগর আওয়ামী লীগের সম্মেলন আবারও দীর্ঘ সময়ের জন্য ঝুলে গেছে বলে মনে করছেন নেতা-কর্মীরা। চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাবেক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন বলেন, ‘এই কমিটির মেয়াদ শেষ হওয়ার পর থেকেই আমরা সম্মেলন আয়োজনের চেষ্টা করে যাচ্ছি। দলীয় অন্যান্য কর্মসূচি, নির্বাচনসহ নানা কারণে সম্মেলন পিছিয়েছে। আগামীতে সংসদ নির্বাচন আছে। এখন কেন্দ্র থেকে যেভাবে ভালো মনে করে সেভাবেই সবকিছু হবে। আমরা যে কোনো মুহূর্তে সম্মেলন করতে প্রস্তুত।’ জানা গেছে, ২০১৩ সালে কেন্দ্র থেকে সাবেক মেয়র এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরীকে সভাপতি ও আ জ ম নাছিরকে সাধারণ সম্পাদক করে নগর আওয়ামী লীগের সর্বশেষ কমিটি গঠিত হয়। ২০১৭ সালে মহিউদ্দিনের মৃত্যুর পর কমিটির প্রথম সহসভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরীকে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি করা হয়। চলতি বছরের আগস্টে আওয়ামী লীগের বিশেষ বর্ধিত সভায় মাহতাবকে ভারমুক্ত করে সভাপতির দায়িত্ব দেওয়া হয়। দলীয় সূত্রগুলো জানায়, ২০২২ সালের মে মাসে চট্টগ্রামে এক দলীয় অনুষ্ঠানে ১ অক্টোবর সম্মেলনের তারিখ ঘোষণা করেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ। তখন বেশ কিছু ওয়ার্ড ও থানা ইউনিটের সম্মেলন বাকি থাকায় নগর সম্মেলন হয়নি। এরপর একই বছরের ২৬ অক্টোবর আরেক অনুষ্ঠানে ডিসেম্বরে সম্মেলন আয়োজনের সিদ্ধান্ত নেন নেতারা। কিন্তু ৪ ডিসেম্বর দলীয় সভানেত্রী চট্টগ্রামের পলোগ্রাউন্ডে জনসভা আয়োজনের কারণে সম্মেলনের তারিখ আবারও পেছানো হয়। এরপর ৯ নভেম্বর আরেক সভায় দলের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন দলীয় প্রধানের নির্দেশে ১৮ ডিসেম্বর সম্মেলনের নতুন তারিখ ঘোষণা করেন। ২৬ ডিসেম্বর কেন্দ্রীয় সম্মেলনের কারণে আবারও পেছানো হয় সম্মেলন। এরপর চলতি বছরের জানুয়ারিতে চট্টগ্রাম বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাদের নিয়ে কেন্দ্রের দায়িত্বশীল নেতারা সমন্বয় সভা করেন। সেখানে জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে স্থানীয় এমপিদের সঙ্গে সমন্বয় করে মার্চের মধ্যে সম্মেলন আয়োজনের নির্দেশনা দেওয়া হয়।

সেই অনুযায়ী ফেব্রুয়ারির মধ্যে সম্মেলন আয়োজনের কথা থাকলেও তা হয়নি।

এরপর কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাদের নির্দেশমতো চলতি বছরের জুনে কার্যনির্বাহী কমিটির সভায় ৩১ জুলাই সম্মেলনের নতুন তারিখ ঠিক করা হয়। সম্মেলনের জন্য ভেন্যুও ঠিক করা হয়। কিন্তু গত ৩০ জুলাই চট্টগ্রাম-১০ আসনের উপনির্বাচনে ব্যস্ততার কারণে ওই দিনের সম্মেলন স্থগিত করা হয়। এরপর গত আগস্টে কেন্দ্র থেকে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাবকে সভাপতির দায়িত্ব দেওয়া হয়।

মাহতাবকে সভাপতির দায়িত্ব দেওয়ায় আপাতত সম্মেলন না করার ইঙ্গিত বলে মনে করেন দলের কিছু নেতা-কর্মী। এ ছাড়া আগামী নির্বাচন কেন্দ্র করে দলীয় প্রস্তুতির বিষয় থাকায় আপাতত সম্মেলন না হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি বলে মনে করেন নেতা-কর্মীরা। এ ব্যাপারে নগর আওয়ামী লীগের এক শীর্ষ নেতা বলেন, ‘মাহতাব ভাইকে ভারমুক্ত করা হয়েছে। নির্বাচনও আসন্ন। মনে হচ্ছে না এ বছর আর সম্মেলনের সম্ভাবনা আছে। তবে দল চাইলে যে কোনো মুহূর্তে তা করতে পারে।’

দলীয় সূত্র জানায়, চট্টগ্রাম নগরে আওয়ামী লীগের ওয়ার্ড ও থানা মিলিয়ে ১৩২টি ইউনিট ও ৪৩টি সাংগঠনিক ওয়ার্ড আছে। ২০২১ সাল থেকে ইউনিটগুলোর সম্মেলন শুরু হয়। ইতোমধ্যে বেশির ভাগ ইউনিটের সম্মেলন শেষ হয়েছে। ইউনিট সম্মেলন করতে গিয়ে নগর আওয়ামী লীগের দুটি পক্ষের নেতা-কর্মীদের মধ্যে বিভেদ প্রকাশ্যে আসতে দেখা গেছে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর