বৃহস্পতিবার, ২১ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা
শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল

একবেলা খাবারে বরাদ্দ ৪৪ টাকা

নিম্নমানের খাবারই ভরসা রোগীদের, বরাদ্দ বাড়ানোর সুপারিশ পুুষ্টিবিদদের

রাহাত খান, বরিশাল

একবেলা খাবারে বরাদ্দ ৪৪ টাকা

বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের রোগীদের তিন বেলা খাবারে সরকারি বরাদ্দ মাত্র ১৭৫ টাকা। এর মধ্যে সাড়ে ১৪ ভাগ ভ্যাট এবং ১০ ভাগ অফিস খরচ বাদ দিয়ে ১৩২ টাকা ১৩ পয়সায় ভালো খাবার জোটে না তাদের কপালে। সকালের নাস্তায় রুটি-কলা এবং দুপুরে ও রাতে ভাত, সবজি, ডাল, ব্রয়লার মুরগি কিংবা পাঙ্গাশ মাছ খেয়েই দিন পার করছেন রোগীরা। গ্রামাঞ্চলের নিরুপায় হতদরিদ্ররা নিম্নমানের খাবার গ্রহণ করলেও বিত্তবানরা চেখেও দেখেন না। নিম্নমানের খাবারে দায় নেই বলে দাবি পথ্য ঠিকাদারের। মাত্র ১৫০ টাকায় তিন বেলা মানসম্পন্ন খাবার খাওয়ানো অসম্ভব বলে দাবি পুষ্টিবিদদের। অপ্রতুল বরাদ্দের পরও রোগীদের মানসম্পন্ন খাবার খাওয়ানোর চেষ্টা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন পরিচালক। শের-ই-বাংলা মেডিকেলের রোগীদের সকালের নাস্তায় দেওয়া হয় একটি পাউরুটি, একটি কলা আর একটি ডিম।  দুপুরে এবং রাতে এক প্লেট ভাত, সামান্য সবজি, এক টুকরো পাঙ্গাশ কিংবা তেলাপিয়া মাছ অথবা এক টুকরো ব্রয়লার মুরগি দেওয়া হয়। সামান্য খাবারে পেট ভরে না অনেক রোগীর। খাবার অত্যন্ত নিম্নমানের। তরকারি, মাছ ও মাংসে গন্ধ। রান্নাও যাচ্ছেতাই। হতদরিদ্র রোগীরা বাধ্য হয়ে এ খাবার গ্রহণ করলেও সচ্ছল রোগীরা নিম্নমানের খাবার গ্রহণ করেন না। তারা বাইরে থেকে কিনে  খান। রাতের খাবার বিকালে দেওয়ায় অনেক সময় নষ্ট হয়ে যায়। এ কারণে ওই খাবার ফেলে দেন অনেক রোগী। অখাদ্য দেওয়ায় হাসপাতাল কর্তৃক্ষের অব্যবস্থাপনার সমালোচনা করেছেন তারা। হাসপাতালে একজন রোগীর জন্য আগে ৩ বেলা খাবারে বরাদ্দ ছিল ১২৫ টাকা। ভ্যাট-আয়কর এবং অফিস খরচ বাদ দিয়ে রোগী পেত না ১০০ টাকার খাবার। সম্প্রতি রোগীপ্রতি ৫০ টাকা বাড়লেও সব খরচ বাদ দিয়ে ১৩৩ টাকার খাবারও জোটে না তাদের। এ কারণে খাবারের মান বাড়েনি। শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের একটি ওয়ার্ডের ইনচার্জ সেবিকা মোসাম্মৎ নাসিমা জানান, পথ্য বিভাগ থেকে সরবরাহ করা খাবার ওয়ার্ডের রোগীদের মাঝে রুটিনমাফিক বণ্টন করেন তারা। এর বাইরে রোগীর খাবারের বিষয়ে কোনো দায় নেই তাদের। শেরে-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ঠিকাদার জোটের প্রতিনিধি মো. সাইফুল আজম শাহিন জানান, তারা দরপত্র অনুযায়ী খাদ্যপণ্য কর্তৃপক্ষকে বুঝিয়ে দেন। রান্না এবং বিতরণ করেন হাসপাতালের কর্মচারীরা। খাবার নিম্নমানের হলে তার দায় ঠিকাদারের ওপর বর্তায় না। মাত্র ১৩২ টাকায় রোগীদের তিন বেলা পুষ্টিকর খাবার খাওয়ানো সম্ভব নয় বলে দাবি করেছেন নগরীর বেসরকারি রাহাত-আনোয়ার হাসপাতালের কনসালট্যান্ট ডায়েটেশিয়ান পুষ্টিবিদ ডা. সাবিহা নূর। রোগীদের পুস্টিগুণসমৃদ্ধ খাবার খাওয়াতে বরাদ্দ আরও বাড়ানো উচিত বলে মন্তব্য করেন তিনি।

 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর