শনিবার, ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

হলে হলে জলাবদ্ধতা ভোগান্তি

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক

বৃহস্পতিবার রাতে টানা বর্ষণে জলাবদ্ধতা তৈরি হয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) বাংলাদেশ-কুয়েত মৈত্রী হল, বঙ্গমাতা ফজিলাতুন নেছা মুজিব হল, সলিমুল্লাহ মুসলিম হল এবং সার্জেন্ট জহুরুল হক হলের একটি অংশে। এতে স্বাভাবিক চলাফেরায় বিঘ্নসহ খাবার পানির সমস্যায় পড়েছেন শিক্ষার্থীরা। বিশেষ করে বাংলাদেশ-কুয়েত মৈত্রী ও বঙ্গমাতা ফজিলাতুন নেছা হলের নারী শিক্ষার্থীরা কার্যত পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। বৃহস্পতিবার রাতের বৃষ্টিতে জমা পানিতে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। গতকাল বিকাল পর্যন্ত অবস্থার খুব বেশি উন্নতি হয়নি। কুয়েত মৈত্রী ও বঙ্গমাতা হলের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বৃহস্পতিবার রাতে বৃষ্টির পর কুয়েত মৈত্রী হলের নিচতলা পর্যন্ত পানি উঠে গেছে। আজ (গতকাল) সকালনাগাদ রুম থেকে পানি নেমে গেলেও হলের অভ্যন্তরে এখনো পানি জমে আছে। পানি খুব কম গতিতে নামছে। বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে বিদ্যুৎ চলে যাওয়ার পর এখনো বিদ্যুৎ আসেনি। বিদ্যুৎ না থাকা ও পানির কারণে হলের পানির পাম্প চালু না হওয়ায় খাবার ও নিত্যব্যবহার্য পানির সংকট দেখা গেছে। অন্যদিকে, বঙ্গমাতা হলেও একই পরিস্থিতি দেখে গেছে। সেখানেও গতকাল থেকে বিদ্যুৎ নেই। খাবার পানিরও সংকট। মৈত্রী হলের আবাসিক শিক্ষার্থী নুসরাত জানান, হলের ভিতরে পানি জমে থাকায় স্বাভাবিকভাবে চলাফেরা করা যাচ্ছে না। হলের রিজার্ভ যে পানি আছে, তাও শেষের পথে। চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। বঙ্গমাতা হলের শিক্ষার্থী সিফাত তাসনীম জানান, হলের ভিতরে ও রাস্তায় পানি জমে আছে। বিদ্যুৎ না থাকায় ফোনের চার্জ শেষ হয়ে আসছে। ফোন বন্ধ হয়ে গেলে তো যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাব। অনেকেরই কাল (আজ) পরশু (কাল) পরীক্ষা আছে। তারা পড়াশোনা নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছে। মৈত্রী হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক নাজমুন নাহার বাংলাদেশ প্রতিদিনকে জানান, হলের অবস্থা আসলে খুবই খারাপ। রাতে তো মেয়েদের হলে পানি উঠেছিল। পানি নামছে তবে আমাদের দুই হল এবং সমাজকল্যাণ ইনস্টিটিউটের সব পানি একটি মাত্র চ্যানেল দিয়ে বিজিবি কোয়ার্টার হয়ে ঝিগাতলা দিয়ে বুড়িগঙ্গায় যাচ্ছে। ফলে, যে গতিতে পানি নামছে বিকাল নাগাদও পানি সরবে না। ইলেকট্রিক মেশিনে পানি উঠে আর্থিং হয়ে ব্লাস্ট হয়ে গেছে। এ জন্য উনারা লাইন বন্ধ করে রেখেছেন। পানি না কমলে সংযোগ দেওয়া যাচ্ছে না। তিনি জানান, আমরা সিটি করপোরেশন ও ওয়াসার সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। তাদের বিকল্প উপায়ে বিদ্যুৎ ও পানির ব্যবস্থা করে দিতে বলেছি। তবে, আশঙ্কার ব্যাপার হলো, আবার বৃষ্টি হলে অবস্থা আরও খারাপ হয়ে যাবে। সলিমুল্লাহ মুসলিম হল ও সার্জেন্ট জহুরুল হক হলেও জলাবদ্ধতা দেখা গেছে। বৃহস্পতিবার ভারী বর্ষণের পর থেকে হলের মাঠ, মাঠের আশপাশের অংশ এবং হল থেকে পলাশী যাওয়ার রাস্তা পানিতে ডুবে যায়। হাঁটুসমান পানি হওয়ায় হলের আবাসিক শিক্ষার্থীসহ সংশ্লিষ্ট সবার চলাচলে দুর্ভোগ সৃষ্টি হয়। হলের টিনশেড অংশের টয়লেটগুলোয় পানি উঠে যায়।

এগুলো ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। সলিমুল্লাহ মুসলিম হলের প্রবেশপথ ও খেলার মাঠ পানিতে ডুবে গেছে। জহুরুল হক হলের প্রাধ্যক্ষ মো. আবদুর রহিম জানান, আমি হল পরিদর্শন করেছি। শুধু হলে না, রাতে আমার বাংলোতেও পানি উঠে গিয়েছিল। এটা দুর্যোগ, তারপরও কী করা যায়, চিন্তা করছি। বিদ্যুতের ব্যাপারে সবাইকে সতর্ক করে দিয়েছি। যেখানে পানি জমেছে ওইসব স্থানে আমাদের কোনো ক্ষতিগ্রস্ত বিদ্যুৎ লাইন নেই। তবুও আমি কর্মচারীদের সতর্ক করে দিয়েছি। আশা করি আর বৃষ্টিপাত না হলে পানি নেমে যাবে।

হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ইকবাল মামুন জানান, এখন দুর্যোগের সময়। একটু সমস্যা তো হবেই। রাস্তার পানি নেমে গেলে হলের সামনের পানিও নেমে যাবে। হলের বিদ্যুৎ যাওয়ার ব্যাপারে কোনো অভিযোগ আমার কাছে আসেনি।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর