রবিবার, ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

দুর্লভ পারুল গাছের চারা

আবদুর রহমান টুলু, বগুড়া

দুর্লভ পারুল গাছের চারা

দুর্লভ পারুল ফুল গাছের চারা তৈরি হলো বগুড়ায়। আর এ অসাধ্য কাজটি করেছেন জেলার সোনাতলা উপজেলার পৌর সদরের গড়ফতেপুর গ্রামের মৃত আবদুল লতিফ আকন্দের কনিষ্ঠ পুত্র বৃক্ষপ্রেমী সদানন্দ সজল। বিভিন্ন গাছের চারা তৈরিতে পারদর্শী সদানন্দ সজল দীর্ঘ ১০ বছর সাধনার পর পারুলের বীজ থেকে এবং অঙ্গ প্রজনন পদ্ধতিতে চারা তৈরিতে সফল হয়েছেন। সফলতার পর তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. অপূর্ব রায়ের কাছে একটি চারা বিক্রিও করেছেন। বগুড়ার সোনাতলা উপজেলার সরকারি নাজির আকতার কলেজের অধ্যক্ষের কার্যালয়সূত্রে জানা যায়, তৎকালীন সম্ভ্রান্ত সৈয়দ পরিবারের সৈয়দ নূরুল হুদার বসতবাড়ি ছিল বর্তমান কলেজের জায়গাটিতে। তিনি ছোটবেলায় গাছ লাগানো পছন্দ করতেন। তাই নিজ বাড়ির পাশের ফাঁকা জায়গায় অন্যান্য গাছের চারা রোপণের পাশাপাশি এই পারুল গাছের চারাও রোপণ করেছিলেন। গাছটি একসময় বড় হয়ে ওঠে। এরপর তিনি এলাকার ছেলেমেয়েদের উচ্চশিক্ষার জন্য বসতবাড়ির ভিটায় ১৯৬৭ সালে কলেজ প্রতিষ্ঠা করেন। কলেজ প্রতিষ্ঠার সময় তিনি বলেছিলেন তার মৃত্যু হলে কলেজের পারুল গাছের নিচে যেন তাকে কবর দেওয়া হয়। ১৯৮৯ সালের ১ ডিসেম্বর ঢাকায় ইন্তেকাল করেন তিনি। তার কথা অনুযায়ী পরদিন ঢাকা থেকে লাশ এনে পারুল গাছের নিচেই তার কবর দেওয়া হয়।পারুল গাছ সম্পর্কে বিস্তারিত জানার জন্য ঢাকা, দিনাজপুর ও রাজশাহীর উদ্ভিদবিশেষজ্ঞ প্রবীণ ব্যক্তিরা জানান, প্রায় ৭০ বছর ধরেই পারুল গাছ বলে জেনে আসছেন এবং দেখে আসছেন। শুষ্ক মৌসুমে গাছের সব পাতা ঝরে পড়ে যায়। বর্ষা মৌসুমে সবুজ পাতায় ঢেকে যায়। এপ্রিল ও মে মাসে গাছে ছোট ছোট অসংখ্য সাদা ফুল ফোটে। বাতাসে গাছ থেকে ফুল ঝরে পড়ে। মৌমাছির মতো অসংখ্য প্রাণী এবং নানা প্রজাতির পাখি বিভিন্ন স্থান থেকে উড়ে এসে এ গাছে আশ্রয় নেয়। এ সময় মৌমাছির গুঞ্জন ও পাখির কিচিরমিচিরে কলেজ চত্বরে অনন্য পরিবেশ সৃষ্টি করে।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রফেসর ড. অপূর্ব কুমার রায় এ পারুল গাছ দেখতে যান। তিনি পারুল গাছের চারা দেখে নিশ্চিত হয়েছেন এটি দুর্লভ প্রজাতির পারুল গাছ। এখন সারা দেশে দুর্লভ প্রজাতির পারুল গাছকে ছড়িয়ে দিতে কাজ করবেন।

 

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর