সোমবার, ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

মৃত্যুফাঁদ রেলক্রসিং

আবদুর রহমান টুলু, বগুড়া

মৃত্যুফাঁদ রেলক্রসিং

বগুড়ার ৭০ কিলোমিটার রেল সড়কের ৪৮টি রেলক্রসিং যেন মৃত্যুফাঁদ। প্রায়ই কোনো না কোনো রেলক্রসিংয়ে কেউ না কেউ দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন। বগুড়ায় মিটারগেজ রেল সড়কে লেভেল ক্রসিং অরক্ষিত থাকলেও এ ব্যাপারে আজও নেওয়া হয়নি কোনো কার্যকর ব্যবস্থা।

রাজশাহী, রংপুর ও খুলনা বিভাগ নিয়ে গঠিত পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ে। প্রায় ১ হাজার ৫০০ ক্রসিংয়ে রেলের নিয়োগপ্রাপ্ত আছেন ১৮৯ জন। তবে পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ বলছে, অস্থায়ীভাবে ৭০০ জন গেটম্যান আছেন। বাকিগুলোতে কোনো গেটম্যান নেই। রেলওয়ে সূত্রমতে, পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের বিভাগ দুটি। একটি পাকশী ও আরেকটি লালমনিরহাট। পাকশী বিভাগের আওতাধীন অনুমোদিত রেলক্রসিং রয়েছে ৮০৮টি এবং অননুমোদিত বা অবৈধ গেট রয়েছে ১২৩টি। পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের ১ হাজার ৫৬৮ কিলোমিটার পথ রয়েছে। এর মধ্যে রেলক্রসিং রয়েছে ১ হাজার ৪৩৯টি। এর প্রায় অর্ধেকই এখন মৃত্যুফাঁদ। গুরুত্বপূর্ণ ও জনবহুল স্থান ছাড়া বেশির ভাগ রেলক্রসিংয়েই নেই গেটম্যান। লালমনিরহাট বিভাগে অনুমোদিত বা বৈধ রেলক্রসিং আছে ৪১৭টি এবং অননুমোদিত বা অবৈধ গেট ৯৯টি। এ হিসাবে পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের আওতায় ১ হাজার ৪৩৯টি লেভেল ক্রসিং গেটের ২২২টি অননুমোদিত বা অবৈধ। এসব অননুমোদিত গেটের মধ্যে এলজিইডির ১৮৪টি।

সড়ক ও জনপথ অধিদফতর সওজের পাঁচটি। বাকিগুলো ইউনিয়ন পরিষদ, জেলা পরিষদ ও সিটি করপোরেশনের অধীনে। ১ হাজার ৪৩৯টি রেলক্রসিংয়ের জন্য মঞ্জুরিকৃত গেটম্যান ছিলেন ১৮৯ জন। এদের মধ্যে ১১৯ জন গেটম্যান স্বপদে কর্মরত। বাকি ৭০ জনকে অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। মঞ্জুরিকৃত ১৮৯ জন ছাড়াও প্রায় ৭০০ জন গেটম্যান প্রকল্পের মাধ্যমে কাজ করছেন। ৬২০টি রেলক্রসিংয়ে কোনো গেটম্যান না থাকায় গেটগুলো অরক্ষিত। পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়েতে বৈধ ও অবৈধ এসব লেভেল ক্রসিংয়ের মধ্যে ৮১৯টিতে গেটম্যান থাকার কথা বলা হলেও এসব গেটম্যানের বিরুদ্ধে দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগ আছে।

লালমনিরহাট রেলওয়ের একটি দায়িত্বশীল সূত্রে জানা গেছে, পশ্চিম বগুড়ার সান্তাহার থেকে পূর্বে সোনাতলা পর্যন্ত প্রায় ৭০ কিলোমিটার দীর্ঘ রেল সড়কে বিভিন্ন ধরনের ৪৮টি লেভেল ক্রসিং রয়েছে। বগুড়া জেলায় ৭০ কিলোমিটার রেলপথে প্রতিদিন ১৪টি ট্রেন যাতায়াত করে। এ পথে অনুমোদিত রেলক্রসিং ৪৮টি। এর মধ্যে গেটম্যান বা ব্যারিয়ার রয়েছে ৩০টিতে। বাকি ১৮টিসহ অননুমোদিত আরও ২৫টি রেলক্রসিং এখনো অরক্ষিত। এর মধ্যে ১০টি রেলক্রসিং খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। এ ছাড়া শহরের সঙ্গে পূর্ব বগুড়ার যোগাযোগ রক্ষাকারী করতোয়া রেলসেতু দিয়ে অধিকাংশ জনগণ পায়ে হেঁটে চলাচল করায় প্রায় দুর্ঘটনা ঘটে। বগুড়ার সোনাতলা থেকে সান্তাহার পর্যন্ত রেলওয়ের প্রকৌশল ও ট্রাফিক বিভাগের চারটি ক্যাটাগরিতে যে ৪৮টি স্থানে লেভেল ক্রসিং রয়েছে এর মধ্যে ‘স্পেশাল’ এবং ‘এ’ ক্যাটাগরির ৮টি ক্রসিং সুরক্ষিত। ‘স্পেশাল’ ক্যাটাগরির ৬টি ক্রসিংয়ে ২৪ ঘণ্টায় তিনজন করে গেটম্যান ও ‘এ’ ক্যাটাগরির ২টি ক্রসিংয়ে দুজন গেটম্যান দায়িত্ব পালন করেন।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর