রবিবার, ১ অক্টোবর, ২০২৩ ০০:০০ টা

ভাঙারির দোকানে চিকিৎসা বর্জ্য

রেজা মুজাম্মেল, চট্টগ্রাম

ভাঙারির দোকানে চিকিৎসা বর্জ্য

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) ‘চট্টগ্রাম সেবা সংস্থা’ নামের একটি প্রতিষ্ঠানকে নগরের বর্জ্য ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব দেয়। নিয়ম মতে, মেডিকেল ও সাধারণ বর্জ্য পৃথক করে প্রক্রিয়া এবং কঠিন বর্জ্যগুলো চসিকের নির্ধারিত ইনসিনারেটর মেশিনে ধ্বংস করার কথা।  কিন্তু অভিযোগ উঠেছে, ওই সেবা সংস্থা নিয়মনীতির অনুসরণ না করে মেডিকেল ও চিকিৎসার ঝুঁকিপূর্ণ বর্জ্যগুলো বাইরের ভাঙারির দোকানে বিক্রি করছে। সেখান থেকে বিপজ্জনক বর্জ্যগুলো নানাভাবে ছড়িয়ে পড়ছে। ফলে যত্রতত্র মিলছে এসব ঝুঁকিপূর্ণ চিকিৎসা বর্জ্য।   

জানা যায়, ২০২২ সালের ৩১ মার্চ পরিবেশ অধিদফতর আনন্দবাজার এলাকার একটি ভাঙারি দোকান থেকে ৩ টন মেডিকেল বর্জ্য জব্দ করে। পরে এগুলো চট্টগ্রাম সেবা সংস্থার মাধ্যমে ওই দোকানে যায় বলে প্রমাণ পায় পরিবেশ অধিদফতর। তখন পরিবেশ সেবা সংস্থার মালিক ও ভাঙারি দোকানের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে। এর আগে ২০২১ সালের ৩১ আগস্ট পরিবেশ অধিদফতর মেডিকেল বর্জ্য বিধিমালা লঙ্ঘনের অভিযোগে ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করে। সর্বশেষ ১২ সেপ্টেম্বর নগরের আনন্দবাজার টিজি কলোনির একটি ভাঙারির কারখানায় পরিবেশ অধিদফতর অভিযান চালিয়ে ১৫টি বড় ও ২৮টি ছোট, মোট ৪৩ বস্তা চিকিৎসা বর্জ্য জব্দ করে। এর মধ্যে ছিল ইনজেকশনের খালি ভায়াল, ব্যবহৃত সিরিঞ্জ ও সুই, ক্যাথেটার, রক্ত সঞ্চালন ব্যাগ, টিউব, ব্যবহৃত প্লাস্টিক ও ধাতব কৌটা। কিন্তু সংশ্লিষ্ট ওই প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে বারবার মামলা ও জরিমানা করার পরও সংস্থাটি অনিয়ম অব্যাহত রেখেছে। চসিকের প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মুহাম্মদ আবুল হাশেম বলেন, সংস্থাটি বারবার অনিয়ম করছে। চুক্তি চসিকের সঙ্গে হওয়ায় বদনামটা হচ্ছে চসিকের। তাই তাদের ডেকে সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে চসিক আগামীতে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

পরিবেশ অধিদফতর চট্টগ্রাম মহানগরের উপপরিচালক মিয়া মাহমুদুল হক বলেন, নগরের সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালগুলোর মেডিকেল বর্জ্য সংগ্রহ ও ধ্বংস করে চট্টগ্রাম সেবা সংস্থা। কিন্তু প্রতিষ্ঠানটি এসব চিকিৎসা বর্জ্য ধ্বংস করতে চসিক পরিচালিত ইনসিনারেটরে না দিয়ে অবৈধভাবে লাভবান হতে বাইরে বিক্রি করছে। এ ব্যাপারে আমাদের কাছে প্রমাণ রয়েছে। ইতোমধ্যে সংস্থাটির বিরুদ্ধে একাধিক মামলা ও জরিমানাও করা হয়। বিষয়টি আমরা তদারকি করছি।    

পরিবেশ অধিদফতর সূত্রে জানা যায়, গত ১২ সেপ্টেম্বর নগরের আনন্দবাজার টিজি কলোনির একটি ভাঙারির কারখানায় পরিবেশ অধিদফতর অভিযান চালিয়ে  ১৫টি বড় ও ২৮টি ছোট, মোট ৪৩ বস্তা চিকিৎসা বর্জ্য জব্দ করে। জনস্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ এসব বর্জ্য সেখানে অনিরাপদভাবে মজুদ ও প্রক্রিয়াকরণের জন্য রাখা হয়।  এ ঘটনায় পরিবেশ অধিদফতর বন্দর থানায় বর্জ্য ব্যবস্থাপনার দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থার মালিক, ভাঙারি কারখানার মালিক ও কর্মচারীর বিরুদ্ধে মামলা করে।

এ ছাড়া গত ১৫ সেপ্টেম্বর চান্দগাঁও থানাধীন হাজারীপুল মাইজপাড়া এলাকার খাজা ট্রেডিং (ইউনিট ১ ও ২) নামের কারখানা থেকে ১৫৯৪.৫ কেজি ঝুঁকিপূর্ণ চিকিৎসা বর্জ্য জব্দ করা হয়। অবৈধ ও ঝুঁকিপূর্ণভাবে চিকিৎসা বর্জ্য মজুদ ও প্রক্রিয়াজাতকরণের দায়ে কারখানার মালিকসহ তিনজনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়।  

 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর