শুক্রবার, ৬ অক্টোবর, ২০২৩ ০০:০০ টা

ফ্রিতেও সাড়া নেই ডেঙ্গু পরীক্ষায়

ঢাকার দুই সিটিতে ৪৯ পরীক্ষা কেন্দ্র, প্রচারের অভাবে সাড়া কম

হাসান ইমন

ফ্রিতেও সাড়া নেই ডেঙ্গু পরীক্ষায়

ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন বিনামূল্যে নগরবাসীর ডেঙ্গু পরীক্ষা করছে। এর মধ্যে উত্তর সিটি কয়েক বছর ধরে ৪৬টি মাতৃসদনে এ কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে। কিন্তু দক্ষিণ সিটি গত ১৮ আগস্ট তিনটি হাসপাতালে এ কার্যক্রম শুরু করে। গত মাসের ২৬ দিন উত্তর সিটির প্রতিটি কেন্দ্রে গড়ে ডেঙ্গু পরীক্ষা করেছেন ৩ দশমিক ৯০ জন। একই সঙ্গে দক্ষিণ সিটির তিন হাসপাতালে প্রতিদিন গড়ে পরীক্ষা হয়েছে ২৭ জনের। প্রচারের অভাবে নগরবাসীর সাড়া মিলছে না বলে জানান সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন ২০২০ সালে ২৭টি কেন্দ্রে বিনামূল্যে ডেঙ্গু পরীক্ষা কার্যক্রম শুরু করে। বর্তমানে সংস্থাটির বিভিন্ন ওয়ার্ডে ৪৬টি নগর স্বাস্থ্য কেন্দ্র ও মাতৃসদনে বিনামূল্যে ডেঙ্গু পরীক্ষা করা হচ্ছে। সংস্থাটি এসব কেন্দ্রে ১ থেকে ২৬ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৩ হাজার ৯৪৮ জনের পরীক্ষা করে। এর মধ্যে ১ হাজার ২৯৪ জনের ডেঙ্গু পজিটিভ শনাক্ত হয়। এ ৪৬ কেন্দ্রে গড়ে প্রতিদিন ৩ দশমিক ৯০ অর্থাৎ প্রায় চারজন ডেঙ্গু পরীক্ষা করেছেন। সংস্থাটির স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা জানান, ডিএনসিসির বড় কেন্দ্রগুলোয় রোগী বেশি যাচ্ছেন, ছোটগুলোয় কম। তবে প্রচার অনেক বেশি ছিল বলেও জানান কর্মকর্তারা। এদিকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) আওতাধীন ঢাকা মহানগর জেনারেল হাসপাতাল, মহানগর শিশু হাসপাতাল ও নাজিরাবাজার মাতৃসদন হাসপাতালে ১৮ আগস্ট থেকে চলছে বিনামূল্যে ডেঙ্গু পরীক্ষা। এর মধ্যে ঢাকা মহানগর জেনারেল হাসপাতালে ২৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ডেঙ্গু পরীক্ষা করা হয় ১ হাজার জনের। সাপ্তাহিক ছুটি শুক্রবার বাদ দিলে দৈনিক গড়ে ৩৩ জন পরীক্ষা করিয়েছেন। গত রবিবার হাসপাতালের পরিচালক ডা. আম্মাতে নূর ওয়াহিদা সুলতানা এই প্রতিবেদককে বলেন, রোগী এখন কম আসছেন। কারণ ডেঙ্গু রোগী অনেকটা কমে গেছে।

একই অবস্থা মহানগর শিশু হাসপাতালের। হাসপাতালটিতে ১ হাজার ২৭১ জন ডেঙ্গু পরীক্ষা করিয়েছেন। গড়ে প্রতিদিন ৩৮ জন। মহানগর শিশু হাসপাতালের পরিচালক ডা. আহমেদ কুদরতে খোদা বলেন, ‘প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে বেলা ২টা পর্যন্ত এ সেবা দেওয়া হয়। এ পর্যন্ত ৩৮ শতাংশ রোগীর ডেঙ্গুর নমুনা পরীক্ষা করা হয়। রোগীর অধিকাংশ কামরাঙ্গীর চর ও কেরানীগঞ্জের বাসিন্দা। তারা জ্বরের বিষয়ে তেমন সচেতন নন। ফলে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে যখন জটিল আকার ধারণ করে, তখন হাসপাতালে ভর্তি হন। আমাদের হাসপাতালে রোগী ভর্তির সুবিধা নেই।’ তিনি বলেন, চিকিৎসক সংকটের কারণে ডেঙ্গু রোগী ভর্তি রেখে চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।

 তবে সবচেয়ে কম ডেঙ্গু পরীক্ষা করেছে নাজিরাবাজার মাতৃসদন। এখানে মোট পরীক্ষা হয়েছে ২৭৭টি, যা দৈনিক গড়ে নয়জন। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, মেডিকেল কলেজ হাসপাতালগুলোয় ডেঙ্গু পরীক্ষাসহ প্রয়োজনীয় চিকিৎসার ব্যবস্থা থাকায় রোগীরা সেখানেই ছোটেন।

জানতে চাইলে ডিএসসিসির প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. ফজলে শামসুল কবির বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ১৮ আগস্ট ডিএসসিসির তিন হাসপাতালে বিনামূল্যে ডেঙ্গু পরীক্ষা কার্যক্রম শুরু হয়। প্রথম দিকে বেশি রোগী পরীক্ষা করালেও এখন কমে গেছে। কারণ ডিএসসিসি এলাকায় ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা অনেক কম। গড়ে প্রতিদিন ৫০ জন ডেঙ্গু শনাক্ত হন ডিএসসিসি এলাকায়।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর