শুক্রবার, ৬ অক্টোবর, ২০২৩ ০০:০০ টা

কোচিং ব্যবসা পরিহার করতে হবে : রাষ্ট্রপতি

প্রতিদিন ডেস্ক

রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন বলেছেন, দেশের শিক্ষার মান উন্নয়নে সবাইকে কোচিং ব্যবসা পরিহার করতে হবে। শিক্ষার্থীদের বিশ্বমানের আনুষ্ঠানিক শিক্ষার পাশাপাশি নৈতিক শিক্ষায় সুশিক্ষিত করে গড়ে তোলারও তাগিদ দেন।

রাষ্ট্রপ্রধান গতকাল রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে বিশ্ব শিক্ষক দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনায় প্রধান অতিথির ভাষণে এ কথা বলেন। বাসস

রাষ্ট্রপতি বলেন, একশ্রেণির অসাধু ব্যক্তি ও কতিপয় বিপথগামী শিক্ষক প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে কোচিং সেন্টারের নামে রমরমা ব্যবসা করছেন। শিক্ষার মানোন্নয়নে এ কোচিং ব্যবসা পরিহার করতে হবে। প্রশ্নপত্র ফাঁস জালিয়াতির উত্তরণ ঘটাতে সরকার, মন্ত্রণালয়, শিক্ষক, অভিভাবক ও সংশ্লিষ্ট সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। শিক্ষাদান পদ্ধতি আন্তর্জাতিক মানসম্মত করার পদক্ষেপ নিতে হবে, যাতে শিক্ষার্থীরা বিশ্ব প্রতিযোগিতায় সাফল্যের সঙ্গে এগিয়ে যেতে পারে। তিনি বলেন, আমরা চাই দেশের প্রতিটি শিক্ষার্থী সুশিক্ষিত ও সুনাগরিক হিসেবে গড়ে উঠুক এবং জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে দেশকে এগিয়ে নিতে অবদান রাখুক। ছেলেমেয়েদের প্রতিভা বিকাশের পথ দেখাতে সব শিক্ষক ও অভিভাবককে সচেষ্ট হতে হবে। ছেলেমেয়েদের জিপিএ-৫ পাইয়ে দেওয়ার অসুস্থ প্রতিযোগিতা এবং জিপিএ-৫ পেয়েও মেডিকেল, ইঞ্জিনিয়ারিং বা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির ন্যূনতম যোগ্যতা অর্জন করতে না পারারও কঠোর সমালোচনা করেন রাষ্ট্রপতি। রাষ্ট্রপতি বলেন, দেশের সমাজব্যবস্থায় এখনো শিক্ষকদের সম্মান ও মর্যাদা অন্য যে কোনো পেশার তুলনায় অনেক ঊর্ধ্বে। কিন্তু এই সামাজিক অবক্ষয়ের যুগে কিছুসংখ্যক বিপথগামী শিক্ষকের জন্য গোটা শিক্ষকসমাজের সম্মান ও মর্যাদা ক্ষুণ্ন হতে পারে না। তিনি সম্মাননাপ্রাপ্ত সব গুণী শিক্ষককে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, শিক্ষকরা আধুনিক, বিজ্ঞানমনস্ক এবং উন্নত জীবনবোধ ও নেতৃত্বগুণসম্পন্ন নাগরিক তৈরির মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণে অবদান রেখে যাবেন। সমাজ গঠনে ও দেশের সার্বিক উন্নয়নে আপনাদের কার্যকর ভূমিকা অপরিহার্য। আপনারা কোমলমতি শিক্ষার্থীদের ন্যায়-অন্যায় ও সত্য-মিথ্যার পার্থক্য বোঝাবেন, মানবসেবা ও দেশপ্রেম এবং পিতা-মাতার প্রতি দায়িত্বশীল হওয়ার শিক্ষা প্রদান করবেন।

শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পিতা-মাতা তুল্য আচরণ করবেন। শাসন করবেন, কিন্তু শাস্তি নয়। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান শিক্ষকদের প্রতি গভীর মমত্ববোধ এবং দেশের উন্নয়নে শিক্ষার গুরুত্ব অনুধাবন করে ১৯৭৩ সালে এক দিনে একযোগে ৩৬ হাজার ১৬৫টি বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়কে জাতীয়করণ করেছিলেন।

রাষ্ট্রপতি সরকারের পাশাপাশি শিক্ষক, অভিভাবক ও সুধীজনদের দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে লেখাপড়ার মানোন্নয়ন এবং শিক্ষাব্যবস্থায় শহর-গ্রামের বৈষম্য নিরসনে সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ নেওয়ারও আহ্বান জানান।

শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনির সভাপতিত্বে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন, শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী, ইউনেসকো ঢাকা অফিসের প্রতিনিধি ড. সুসান ভাইজ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. লাফিফা জামান, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব সোলেমান খান প্রমুখ।

‘কাক্সিক্ষত শিক্ষার জন্য শিক্ষক : শিক্ষকস্বল্পতা পূরণে বৈশ্বিক অপরিহার্যতা’ এ বাস্তবতা সামনে রেখে বিশ্বের সব শিক্ষকের প্রতি সম্মান জানাতে প্রতি বছরের মতো এবারও পালিত হচ্ছে বিশ্ব শিক্ষক দিবস। এই দিনে বিশ্বের সব শিক্ষককে আন্তরিক কৃতজ্ঞতা ও শ্রদ্ধা জানান রাষ্ট্রপতি। অনুষ্ঠানে বিশ্ব শিক্ষক দিবস ২০২৩-এর একটি তথ্যচিত্র প্রদর্শিত হয়। অনুষ্ঠানে সাতজন কৃতী শিক্ষককে সম্মাননা দেওয়া হয়।

 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর