শুক্রবার, ৬ অক্টোবর, ২০২৩ ০০:০০ টা

নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্লান্ট অপ্রয়োজনীয় : মঈন খান

নিজস্ব প্রতিবেদক

নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্লান্ট অপ্রয়োজনীয় : মঈন খান

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান বলেছেন, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প যেন বাংলাদেশের দুঃশাসন ও দুর্নীতির এক ‘জাইগান্টিক মনুমেন্ট’। পরিবর্তিত বিশ্বে পাবনার রূপপুরে এই নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্লান্ট প্রকল্প অপ্রয়োজনীয়। তা তৈরি করে ক্ষমতাসীন সরকার বাহাদুরি নিতে চাচ্ছে। তিনি বলেন, পরিবর্তনশীল বিশ্বে বর্তমানে নিউক্লিয়ার পাওয়ারের প্রয়োজনীয়তা হারিয়েছে। আজকে নিউক্লিয়ার পাওয়ার নিয়ে বাহাদুরির কিছু নেই। বরং যারা এ নিয়ে বাহাদুরি করত, তারাও বর্তমানে নিউক্লিয়ার প্রত্যাখ্যান করছে। ইতালি আইন করে নিউক্লিয়ার প্লান্ট বন্ধ করেছে।  গতকাল দুপুরে রাজধানীর ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে বিএনপির মিডিয়া সেল আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক ও সাবেক সংসদ সদস্য জহির উদ্দিন স্বপনের সভাপতিত্বে ‘পরিবেশ ও মানব-বিপর্যয়ের আশঙ্কা উপেক্ষা করে দুর্নীতিগ্রস্ত রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ- একটি রাষ্ট্রীয় অপরিণামদর্শিতা’ শীর্ষক এ আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

ড. মঈন খান বলেন, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প বাংলাদেশের মতো জনঘনত্বপূর্ণ একটি দেশের জন্য অপরিণামদর্শিতার একটি জ্বলন্ত উদাহরণ। তিনি বলেন, ভারতে তামিলনাড়ু কুদামকুলীনে একই মডেলের ২ হাজার মেগাওয়াট পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের ব্যয় ৬.৭ বিলিয়ন ডলারে সম্পন্ন হলেও একই কোম্পানির রূপপুর প্রকল্পের ব্যয় দ্বিগুণের বেশি কেন? এটি মূলত সরকারের অব্যাহত দুর্নীতির একটি জ্বলন্ত প্রমাণ।

তিনি বলেন, কতটা মূল্য দিয়ে আমরা ২ হাজার ৪০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র পাচ্ছি, কোন কোন যুক্তির ভিত্তিতে এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে হলো? সেটি একটি ব্যাপক গবেষণার বিষয়। বিগত সময়ে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের আওতাধীন আবাসন ও বালিশকান্ডের অবিশ্বাস্য দুর্নীতিই মূল প্রকল্পে দুর্নীতির ব্যাপকতা প্রমাণ করে।

বিএনপির এই নেতা বলেন, ১২.৮০ বিলিয়ন ডলারের প্রাক্কলিত এ প্রকল্প নিশ্চিতভাবে ২০ বিলিয়ন ডলারে গিয়ে দাঁড়াবে। যার মধ্যে ১২ বিলিয়নের ওপর রাশিয়ার সাপ্লাই ক্রেডিট। আওয়ামী অর্থনৈতিক দুঃশাসনের অন্যতম মাধ্যম হলো এ সাপ্লাইয়ার্স ক্রেডিট। কীভাবে এ প্রকল্পে বিপুল ব্যয় নিরূপণ হলো, কোন অর্থনৈতিক সমীক্ষার মাধ্যমে এ ব্যয়ের বাণিজ্যিক কার্যকারিতা নিরূপণ করা হয়েছে তা কখনোই জনসম্মুখে আসেনি।

তিনি আরও বলেন, কোনো যথার্থ বৈজ্ঞানিক সমীক্ষা ছাড়াই এ প্রকল্প বাস্তবায়নের ফলে এখানে দুই ধরনের বিপর্যয় স্পষ্টভাবে পরিলক্ষিত হচ্ছে। এক. অর্থনৈতিক বিপর্যয়, যার অন্তরালে রয়েছে সীমাহীন দুর্নীতি এবং দুই. ভয়াবহ পরিবেশ বিপর্যয়ের আশঙ্কা। এনার্জি সিকিউরিটির নামে মেগা দুর্নীতির ক্ষেত্র প্রস্তুত করার মধ্য দিয়ে দেশের অর্থনীতি এবং জীববৈচিত্র্য চূড়ান্ত হুমকির সম্মুখীন করার জন্য অপরিণামদর্শী শেখ হাসিনা সরকারকে একদিন ইতিহাসের কাঠগড়ায় দাঁড়াতেই হবে, বাংলাদেশ কখনো তাদের ক্ষমা করবে না।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর