শনিবার, ৭ অক্টোবর, ২০২৩ ০০:০০ টা

উঠতি বয়সীদের হাতে আগ্নেয়াস্ত্র

আধিপত্য বিস্তার, মাদক কারবার, চাঁদাবাজিতে বেপরোয়া

নিজস্ব প্রতিবেদক, খুলনা

উঠতি বয়সীদের হাতে আগ্নেয়াস্ত্র

খুলনা নগরে মাদক নির্মূল, কিশোর গ্যাং ও উঠতি বয়সী অপরাধীদের নিয়ন্ত্রণে হিমশিম খাচ্ছে পুলিশ। পাড়া-মহল্লায় জালের মতো ছড়িয়ে থাকায় কোনো একটি এলাকায় পুলিশ অভিযান চালালে অন্য আরেক এলাকায় জড়ো হচ্ছে অপরাধীরা। অনেক ক্ষেত্রে অভিযানে গ্রেফতার হলেও কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যদের বয়স কম হওয়ায় মানবিক বিবেচনায় থানা থেকেই ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে তাদের। কিছুদিন গা ঢাকা দেওয়ার পর সুযোগ বুঝে আবারও মাদক বিক্রিতে জড়াচ্ছে অপরাধীরা। তবে বরাবরের মতোই নেপথ্যের গডফাদাররা থেকে যাচ্ছে আড়ালেই।

বিশ্লেষকরা বলছেন, মাদক বিক্রিতে অর্থ উপার্জন, চাঁদাবাজি ও প্রভাব বিস্তারের নেশায় বিভিন্ন স্থানে অপরাধীদের আধিপত্য বাড়ছে। এ ছাড়া উঠতি বয়সী অপরাধীদের হাতে আগ্নেয়াস্ত্র থাকায় নতুন করে উদ্বেগ ছড়াচ্ছে।

এরই মধ্যে পুলিশ গত দুই মাসের অভিযানে ১২টি অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র ও প্রায় ৬০ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করেছে।

সর্বশেষ গতকাল নগরীর গোবরচাকা গাবতলা মোড়ে ইমন শেখ (২২) হত্যা মামলায় একটি ওয়ান শুটার গান ও এক রাউন্ড গুলিসহ পাঁচজন গ্রেফতার হয়। গ্রেফতারকৃতরা হচ্ছে- আকাশ হাওলাদার (২০), আপন খাঁ (২২), রিয়াজ (৩২), নাজমুস সাকিব (২৮) ও বুলু পাটোয়ারী (৩২)।

খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের ডেপুটি কমিশনার (দক্ষিণ) মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম জানান, এলাকায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দ্বন্দ্বে ৫ অক্টোবর রাতে মোটরসাইকেলে করে ২০-২২ জন গোবরচাকার গাবতলা মোড়ে এলোপাতাড়ি গুলি করে। এ সময় ইমন শেখ বুকের বামপাশে গুলিবিদ্ধ হন। নিহতের পিতা সানোয়ার হোসেন বাদী হয়ে ১৭ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাতনামা ৪-৫ জনকে আসামি করে মামলা করেন।

বাংলাদেশ মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থা খুলনার সমন্বয়কারী অ্যাডভোকেট মোমিনুল ইসলাম বলেন, কিশোর ও উঠতি বয়সী অপরাধীর অনেকেই মাদক কারবার, অস্ত্র ব্যবসা, হত্যা, ছিনতাই ও চাঁদাবাজির মতো ঘটনায় জড়িয়ে পড়ছে। তাদের হাতে আগ্নেয়াস্ত্র থাকায় চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

জানা যায়, এর আগে ১৭ সেপ্টেম্বর দৌলতপুরে চিহ্নিত চাঁদাবাজ মমি বাহিনী প্রধান মেহেদী হাসান মমিকে গ্রেফতারের পর তার কাছ থেকে ব্যাগের মধ্যে থাকা একটি ওয়ান শুটারগানসহ ৫ রাউন্ড গুলি উদ্ধার হয়।

১১ সেপ্টেম্বর লবণচরা থেকে হত্যাচেষ্টা ও চাঁদাবাজি মামলার পলাতক আসামি দুলাল তালুকদার একটি দেশি ওয়ান শুটারগান ও তিন রাউন্ড গুলিসহ গ্রেফতার হয়।

৮ সেপ্টেম্বর নগরীর ডালমিল মোড় থেকে অস্ত্র ব্যবসায়ী শরিফুল ইসলাম সোহাগকে একটি রিভলবার, একটি পিস্তল, দুটি ওয়ান শুটারগান ও বিভিন্ন ধরনের তিন ডজন গুলিসহ গ্রেফতার করা হয়। ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের আড়ালে তিনি দীর্ঘদিন অবৈধ অস্ত্রের ব্যবসা করতেন।

মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো. মোজাম্মেল হক বলেন, পুলিশ আইনশৃঙ্খলা রক্ষা, অপরাধ দমন, মাদক কারবারি-সন্ত্রাসী গ্রেফতার, কিশোর গ্যাং নির্মূলে কাজ করছে। এর মধ্যে খুলনায় বিভিন্ন অভিযানে বেশকিছু অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র গুলি উদ্ধার হয়েছে। সন্ত্রাসীরা অপরাধ করে এখানে পার পাবে না।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর