শনিবার, ৭ অক্টোবর, ২০২৩ ০০:০০ টা

সবজি ও মাছের দাম বেড়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক

সবজি ও মাছের দাম বেড়েছে

সরকার আলু, পিঁয়াজ ও ডিমের দাম বেঁধে দিলেও বাজারে এসব নিত্যপণ্য বিক্রি হচ্ছে বাড়তি দামেই। এরই মধ্যে গত দুই সপ্তাহ রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেছে জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর। গত কয়েক দিনের বৃষ্টির কারণে সরবরাহ কমায় সপ্তাহের ব্যবধানে নতুন করে বেড়েছে কাঁচামরিচ, বিভিন্ন সবজি ও মাছের দাম। এদিকে গরুর মাংস মিলছে ৫৮০ টাকা কেজিতে। গতকাল রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।

রাজধানীর রায়েরবাগ এলাকায় দেখা যায়, মেরাজনগর, মোহাম্মদবাগ, মদিনাবাগ, রায়েরবাগ কাঁচাবাজার এলাকায় গরুর মাংস মিলছে ৫৮০ টাকায়। ব্যবসায়ীরা বলছেন, নিম্ন আয়ের মানুষের কথা চিন্তা করে এই এলাকার ব্যবসায়ীরা মিলে গরুর মাংসের দাম কমানো হলো। এ সপ্তাহ ৬০০ টাকার ভেতরে থাকবে বলে জানান তারা। তারা জানান, ৫৮০ টাকা বিক্রি করলেও তাদের লাভ হয় তবে আগের তুলনায় কম হয়। দাম কমায় বিভিন্ন এলাকা থেকে মাংস কেনার জন্য দোকানে দোকানে ভিড় করছেন ক্রেতারা। মাসরুর নামের এক ক্রেতা বলেন, অনেক দিন ধরে মানুষ নিত্যপণ্য বেশি দামে কিনতে অভ্যস্ত হয়ে পড়ছি। সেখানে আশার আলো ৫৮০ টাকায় গরুর মাংস পাওয়া যাচ্ছে। আশা করি শহরের অন্য ব্যবসায়ীরাও কম দামে গরুর মাংস বিক্রি করবেন।

রামপুরা বাজার ঘুরে দেখা গেছে, সপ্তাহের ব্যবধানে কাঁচা বাজারগুলোতে সব ধরনের সবজির দাম কেজিতে ৫ থেকে ১০ টাকা বেড়েছে। বড় আকারের গোল বেগুন বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ৯০ টাকায়, যা আগে ছিল ৬০ থেকে ৮০ টাকা। করলা, বরবটির দাম ছুঁয়েছে ১০০ টাকা। দরদাম করে নিলেও ৮০ টাকার কমে পাওয়া যাচ্ছে না। নতুন শিম বিক্রি হচ্ছে ১৮০ থেকে ২০০ টাকা কেজি দরে। ছোট ফুলকপি ৬০ টাকার কমে মিলছে না। এ ছাড়া ঝিঙে, চিচিঙ্গা ও ধুন্দলের কেজিও ৬০ থেকে ৮০ টাকা। পটোল, ঢেঁড়সের কেজিও ৬০ টাকা। তবে সস্তার সবজি হিসেবে পেঁপে বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা কেজি দরে। অন্যদিকে গত কয়েক দিন ধরেই কাঁচামরিচের দাম বড় ব্যবধানে ওঠানামা করছে। গতকাল বিভিন্ন বাজারে কোথাও ২৪০ টাকা আবার কোথাও ২৮০ টাকা কেজি দরে এ পণ্যটি বিক্রি হতে দেখা গেছে।

মাছের বাজারগুলো ঘুরে দেখা গেছে, আগে এক কেজি ছোট ও মাঝারি আকারের পাঙ্গাশের দাম ছিল ১৮০ থেকে ২২০ টাকা, একই মাছ এখন বিক্রি হচ্ছে ২২০ থেকে ২৫০ টাকায়। দাম বেড়ে তেলাপিয়ার কেজি ২৫০ টাকা ছাড়িয়েছে। চাষের কই, পাবদা বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ৪৫০ টাকার বেশি দরে। ৬০০ থেকে ৭০০ গ্রাম ওজনের চাষের রুই-কাতলার দাম হাঁকানো হচ্ছে ৩০০ টাকা কেজি। এক কেজির বেশি ওজনের হলে ৪০০ টাকা চাওয়া হচ্ছে। আর বড় মাছের কেজি ছুঁয়েছে ৫০০ টাকা পর্যন্ত।

এদিকে চট্টগ্রামের নিজস্ব প্রতিবেদক জানান, চট্টগ্রামে স্থিতিশীল রয়েছে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের বাজার। গত সপ্তাহের দামেই বিক্রি হচ্ছে আলু, ডিম ও অন্যান্য মৌসুমি সবজি। মুরগির প্রতি কেজি কমেছে ১০ টাকা করে। তবে আলুর দাম এখনো প্রতি কেজি রয়ে গেছে ৪৫-৫০ টাকার মধ্যে। আমদানি অনুযায়ী স্বল্প মুনাফায় আলু বিক্রি করা হচ্ছে বলে জানান ব্যবসায়ীরা। নগরের কাজীর দেউড়ি কাঁচা বাজার, চকবাজার ও বহদ্দারহাট কাঁচা বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ব্রয়লার ডিমের ডজন বিক্রি হচ্ছে ১৪৫-১৫০ টাকায়। হাসের ডিম বিক্রি হচ্ছে ২১০ টাকা। ব্রয়লার মুরগি গত সপ্তাহে ১৯০ টাকা বিক্রি হলেও এ সপ্তাহে বিক্রি হচ্ছে কেজি ১৮০ টাকা করে। এ ছাড়াও দেশি মুরগি ৫০০ টাকা ও সোনালি মুরগি ৩০০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে।

অন্যদিকে পেঁপে প্রতি কেজি ৪০ টাকা, শীতকালীন সবজি শিম বিক্রি হচ্ছে ১৬০ টাকা, বরবটি ১২০ টাকা, ঢেঁড়স ৬০ টাকা, লাউ ৫০ টাকা, করলা ৯০ টাকা, ধুন্দল ৭০ টাকা, পটোল ৬০ টাকা, বেগুন ৭০ টাকা, টমেটো ৮০ থেকে ১০০ টাকা, ঝিঙে ৮০ টাকা, কাঁকরোল ৮০ টাকা, শসা ৭০ টাকা, নতুন আলু ৮০ ও পুরাতন আলু ৫০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে।

চকবাজারের ব্যবসায়ী মজিদুল ইসলাম বলেন, গত সপ্তাহের মতো এ সপ্তাহেও দাম স্থিতিশীল রয়েছে। আমদানিতে খরচ বেশি পড়লে আমরা দাম বাড়াতে বাধ্য হচ্ছি। তবে আমরা বেশি মুনাফা করছি না, ৫-১০ টাকা মুনাফা হলেই আমরা বিক্রি করে দিচ্ছি। পণ্য আনা-নেওয়ার খরচ বাড়ছে। যার কারণে তার প্রভাব পড়ছে বাজারে।

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর