রবিবার, ৮ অক্টোবর, ২০২৩ ০০:০০ টা

নানামুখী প্রতিবন্ধকতায় এসএমই খাত

চাহিদার তুলনায় কম অর্থ দিচ্ছে ব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠান

নিজস্ব প্রতিবেদক

জিডিপিতে এসএমইদের অবদান প্রায় ৩০ শতাংশ হলেও নানামুখী প্রতিবন্ধকতার মুখোমুখি হচ্ছে এ খাত। দেশের অনেক ব্যাংক ও নন-ব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠান ক্ষুদ্র ও মাঝারি আকারের উদ্যোগে (এসএমই) অর্থায়ন করে। তবে এখনো চাহিদার তুলনায় খাতটিতে অনেক কম অর্থের জোগান দেওয়া হয়। গতকাল রাজধানীর একটি হোটেলে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) আয়োজিত ‘এসএমইদের রপ্তানির সক্ষমতা বৃদ্ধি; এলডিসি উত্তরণ পরবর্তী বৈশি^ক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা’ শীর্ষক সেমিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন।

ঢাকা চেম্বারের সভাপতি ব্যারিস্টার মো. সামীর সাত্তারের সভাপতিত্বে সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী। অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত কানাডার হাইকমিশনার ড. লিলি নিকোলাস এবং সৌদি আরবের রাষ্ট্রদূত ইসা বিন ইউসুফ আল দুহাইলান। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, জিডিপিতে এসএমইদের অবদান প্রায় ৩০%, যদিও তারা নানামুখী প্রতিবন্ধকতার মুখোমুখি হচ্ছে। এ সমস্যা নিরসনে আমাদের নীতিনির্ধারকদের নীতি সহায়তা নিশ্চিত করা প্রয়োজন। তিনি উল্লেখ করেন, এসএমইদের জামানতবিহীন ঋণ সহায়তা দেওয়ার লক্ষ্যে বর্তমান সরকার বেশ কিছু উদ্যোগ নিয়েছে। এ বিষয়ক তথ্যাদির যথাযথ প্রচার-প্রচারণার অভাবে কাক্সিক্ষত সুফল পাওয়া যাচ্ছে না। তিনি বলেন, এসএমইদের সার্বিক সহায়তা নিশ্চিতকল্পে ‘ওয়ানস্টপ সার্ভিস’-এর উদ্যোগ গ্রহণ করা প্রয়োজন এবং সংশ্লিষ্ট সবার সমন্বিত উদ্যোগ জরুরি। এছাড়াও এসএমইদের রপ্তানি পণ্যের কাঁচামাল আমদানিতে বিদ্যমান নির্ধারিত শুল্ক হার হ্রাসের বিষয়টি বিবেচনা করা যেতে পারে বলে তিনি মত প্রকাশ করেন। ড. লিলি নিকোলাস বলেন, বাংলাদেশের এসএমই খাতের উদ্যোক্তাদের আর্থিক, প্রযুক্তিগত ও দক্ষতার অভাব রয়েছে। এসএমই উদ্যোক্তাদের পণ্য বহুমুখীকরণ, বাজার সম্প্রসারণ এবং সক্ষমতা বৃদ্ধিতে আরও বেশি করে গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনার ওপর তিনি জোরারোপ করেন। ইসা বিন ইউসুফ আল দুহাইলান বলেন, কভিড মহামারীর সময় সৌদি সরকার এসএমই উদ্যোক্তাদের সুরক্ষায় বেশ কিছু উদ্যোগ গ্রহণ করে।

যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো সহায়ক নতুন নীতিমালা প্রণয়ন, নীতি সংস্কার ও আর্থিক সহায়তা নিশ্চিতকরণ। তিনি জানান, বাংলাদেশের রয়েছে বহুমুখী ও শক্তিশালী রপ্তানিমুখী পণ্য সম্ভার এবং এ দেশের উৎপাদিত পাটজাতপণ্য, চিংড়ি, ওষুধ, তৈরি পোশাক প্রভৃতির বহিঃবিশ্বে যথেষ্ট সুনাম রয়েছে। বাংলাদেশের এলডিসি উত্তরণ সময়ে শিক্ষা তথ্য-প্রযুক্তি ও উদ্ভাবন খাতে আরও বেশি হারে বিনিয়োগ বাড়ানোর ওপর রাষ্ট্রদূত জোরারোপ করেন।

মোৎ. সামীর সাত্তার বলেন, বাংলাদেশের এলসিডি উত্তরণ পরবর্তী সময়ে ২০২৬ সাল থেকে আমাদের এসএমইসহ রপ্তানিকারকদের পণ্য রপ্তানিতে অধিক শুল্ক দিতে হবে, যা ৮-১৬ শতাংশ পর্যন্ত হতে পারে। তিনি জানান, দেশের ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের জিডিপিতে অবদান ২৮ শতাংশ এবং বেসরকারি খাত স্থানীয় কর্মসংস্থানের প্রায় ৯০ শতাংশের সুযোগ সৃষ্টি করে থাকে।

সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সানেমর নির্বাহী পরিচালক ড. সেলিম রায়হান। তিনি বলেন, এলডিসি পরবর্তী সময়ে আমাদের এসএমই খাতের উদ্যোক্তারা প্রধানত সক্ষমতার সীমাবদ্ধতা, আর্থিক ও নীতি সহায়তা, যথাযথ অবকাঠামো এবং দক্ষ মানবসম্পদের স্বল্পতার মুখোমুখি হবেন।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর