সোমবার, ৯ অক্টোবর, ২০২৩ ০০:০০ টা

খুলনার জলাবদ্ধতা কাটবে এবার?

কেসিসি-ওয়াসার মধ্যে সমন্বয়, ২৩৩৪ কোটি টাকার পয়ঃনিষ্কাশন প্রকল্পে গতি ফিরেছে

সামছুজ্জামান শাহীন, খুলনা

খুলনার জলাবদ্ধতা কাটবে এবার?

প্রায় পাঁচ মাস বন্ধ থাকার পর খুলনা নগরীতে ওয়াসার ২ হাজার ৩৩৪ কোটি টাকার পয়ঃনিষ্কাশন প্রকল্পের কাজ পুনরায় চালু হয়েছে। সিটি করপোরেশনের সঙ্গে সমন্বয়ের ভিত্তিতে প্রথম ধাপে ২৭টি সড়কে ম্যানহোল তৈরি ও পাইপলাইন বসানোর কাজ শুরু করেছে খুলনা ওয়াসা। বর্তমানে নগরীর টুটপাড়া, নিরালা, হাসানবাগ, হাজী মহসিন রোডে ম্যানহোল তৈরির কাজ চলছে পুরোদমে।

জানা যায়, সড়কে খোঁড়াখুঁড়ি ও পাইপ বসানো কাজে ধীরগতিতে নাগরিক ভোগান্তির অভিযোগে ৩ এপ্রিল থেকে নগরীতে ওয়াসার পয়ঃনিষ্কাশন প্রকল্পের কাজ  বন্ধ করে দেয় কেসিসি। দীর্ঘদিন প্রকল্পের কাজ  বন্ধ থাকায় নির্দিষ্ট সময় তা বাস্তবায়ন নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়।

ওই সময় পর্যন্ত প্রকল্পে ২৬৯ কিলোমিটার পাইপ লাইনের মধ্যে মাত্র ২০ কি.মি. পাইপলাইন বসানো সম্ভব হয়েছিল। পরে দুই পক্ষের মধ্যে সমন্বয়ে নতুন এমইউ (সমঝোতা) তৈরি হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে প্রথম ধাপে ২৭টি সড়কের তালিকা দিয়েছে কেসিসি। অগ্রাধিকার ভিত্তিতে যতদ্রুত সম্ভব সড়কগুলোতে ম্যানহোল তৈরি ও পাইপলাইন বসানোর কাজ করতে বলা হয়েছে ওয়াসাকে।

খুলনা ওয়াসার তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী ও প্রকল্প ব্যবস্থাপক খান সেলিম আহম্মদ জানান, চলতি মাসে একই সঙ্গে কয়েকটি সড়কে ম্যানহোল তৈরি, পাইপলাইন বসানো ও হাউস কানেকশন দেওয়ার কাজ শুরু হয়েছে। তিনি বলেন, যেটুকু সময় নষ্ট হয়েছে তা পুষিয়ে নিতে দ্বিগুণ গতিতে কর্মযজ্ঞ শুরু করা হয়েছে। কেসিসি যেসব সড়কের তালিকা দিয়েছে তাতে পুরোদমে কাজ চলছে। দ্বিতীয় ধাপে আরও কয়েকটি সড়কের তালিকা তৈরি করা হচ্ছে। একই সড়কে একই সঙ্গে উন্নয়ন কাজ হলে সময়ও  বাঁচবে, ভোগান্তিও কমবে। ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আবদুল্লাহ বলেন, কেসিসির সড়ক মেরামত প্রকল্পে ঠিকাদার এরই মধ্যে যেসব সড়কে আংশিক বা পুরোপুরি সংস্কার কাজ করেছে সে সব সড়কে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ওয়াসা কাজ করছে। ২০২৫ সালের ডিসেম্বরে পয়ঃনিষ্কাশন প্রকল্পের কাজ শেষ করতে ওয়াসার ১৭-১৮টি টিম মাঠে একই সঙ্গে কাজ করছে।

তবে নগরীর গগন বাবু রোড ও সামছুর রহমান রোডে ওয়াসার ৫০ শতাংশ ম্যানহোল তৈরির কাজ হলেও ব্যস্ততম সড়ক হওয়ায় সেখানে নতুন করে খোঁড়াখুঁড়ি করবে না ওয়াসা। সড়কের ওপর অংশে খোঁড়াখুঁড়ি না করে ২০-২৫ ফুট পরপর গর্ত করে ‘মাইক্রো ট্যানেল’ বিকল্প পদ্ধতিতে মাটির নিচে থেকে গর্ত করার পরিকল্পনা হচ্ছে। কর্মকর্তারা জানান, এরই মধ্যে শেখপাড়া রোড, আহসান আহমেদ রোড, সাউথ সেন্ট্রাল রোড, টিবি ক্রস রোড, সামছুর রহমান রোড, দারোগাপাড়া, প্রান্তিকা আবাসিকে ৬-৭টি রাস্তা, ফায়ারব্রিগেড রোড, মির্জাপুর রোডে পাইপ বসানো ও ম্যানহোল নির্মাণ শেষ করেছে ওয়াসা। কেসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা লস্কার তাজুল ইসলাম জানান, পয়ঃনিষ্কাশন প্রকল্পে ওয়াসার একটি রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ি, ম্যানহোল তৈরিতে এক বছরের বেশি সময় লাগছে। এর ফলে কেসিসির ৬০৭ কোটি টাকার রাস্তা মেরামত প্রকল্প বাস্তবায়ন কাজে বিলম্ব হচ্ছে। এ কারণে দুই পক্ষের কাজে সমন্বয় করা হচ্ছে।

জানা যায়, নগরীর ৭০ ভাগ বাড়ির সেপটিক ট্যাংক সরাসরি ড্রেনের সঙ্গে সংযুক্ত। সেপটিক ট্যাংক থেকে বর্জ্য পানি বাড়ির পাশের ছোট ড্রেন, সেখান থেকে বড় ড্রেন, এরপর খাল দিয়ে নদীতে চলে যায়। এতে বড় ধরনের স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে থাকে নগরবাসী। এ অবস্থা থেকে উত্তোরণে পয়ঃনিষ্কাশন প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে ওয়াসা।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর