সোমবার, ৯ অক্টোবর, ২০২৩ ০০:০০ টা
ঢাবি গ্রন্থাগার

গল্প উপন্যাস পড়ার পাঠক নেই

নাসিমুল হুদা, ঢাবি

গল্প উপন্যাস পড়ার পাঠক নেই

ছুটির দিনগুলো ছাড়া প্রতিদিন সকাল ৮টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় গ্রন্থাগারের প্রবেশ পথে শিক্ষার্থীদের ভিড় বাড়তে থাকে। ভোর থেকে লাইব্রেরির সামনে ব্যাগের সিরিয়াল দেখা যায়, সময়ে সময়ে তা পৌঁছে যায় প্রায় ১০০ মিটার দূরে ডাকসু ক্যাফেটেরিয়া পর্যন্ত। শিক্ষার্থীরা প্রবেশের পর গ্রন্থাগারের ধারণ ক্ষমতার কোনো আসনই ফাঁকা থাকে না। এতসব কসরত তার কোনোটিই লাইব্রেরিতে সংরক্ষিত বই পড়ার নয়। বরং শিক্ষার্থীদের আগ্রহ বিসিএস প্রস্তুতি। গ্রন্থাগার সূত্রে জানা গেছে, কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারে বইয়ের সংগ্রহ ৭ লাখের বেশি। এ ছাড়া বিশ্বখ্যাত স্যাজ পাবলিকেশন, টেইলর অ্যান্ড ফ্রান্সিস, ¯িপ্রংগার, এলসেভিয়ের, পিয়ারসন, ম্যাকগ্রিউ হিল, ক্যামব্রিজ ই-বুক অনলাইনসহ ই-বুক সাবস্ক্রিপশন আছে ৫০ হাজারেরও বেশি। ৩৫ হাজারের বেশি অনলাইন জার্নালের সাবস্ক্রিপশন আছে। গ্রন্থাগারের তথ্যপ্রযুক্তি শাখা থেকে প্রাপ্ত ইউজারনেম ও পাসওয়ার্ড নিয়ে ক্যাম্পাসের বাইরে থেকে ইন্টারনেটে এগুলো ব্যবহারের সুবিধা আছে। এ ছাড়াও গ্রন্থাগারে বিভিন্ন ধরনের ডেটাবেজ, দুর্লভ পান্ডুলিপি সংগ্রহ ও পুরনো পত্রিকাসহ নানা রিসোর্স রয়েছে।

গ্রন্থাগারের ই-জোনের এক কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্ভারে নানা ধরনের অনলাইন রিসোর্স থাকলেও কদাচিৎ শিক্ষার্থীরা সেসব ব্যবহার করেন। চাহিদা কম থাকায় ই- জোনের কম্পিউটারের সংখ্যাও কমিয়ে ফেলা হয়েছে। বর্তমানে সেখানে ১০টি কম্পিউটার আছে। অধিকাংশ ফাঁকা থাকে বলে জানা গেছে। শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তাদের অধিকাংশই এসব সুবিধা সম্পর্কে জানেন না। প্রথম বর্ষের ওরিয়েন্টেশন অনুষ্ঠানে এসব সম্পর্কে জানানো হয়। কিন্তু শুরুতেই এর গুরুত্ব বুঝতে পারেন না শিক্ষার্থীরা। ফলে প্রয়োজন হলেও গ্রন্থাগারে এসে খুঁজে দেখার আগ্রহ হয় না। অন্যদিকে, গ্রন্থাগারে নিয়মিত পড়তে আসেন এমন কয়েকজন শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বিসিএস প্রস্তুতি নিতে আসা শিক্ষার্থীদের অধিকাংশেরই ছাত্রত্ব নেই। তাদের ধারণা, গ্রন্থাগারের মোট ধারণ ক্ষমতার ৫ ভাগের ৪ ভাগই দখল করে বিসিএস প্রস্তুতি নেন ছাত্রত্ব শেষ হয়ে যাওয়া এসব শিক্ষার্থী। ফলে বর্তমান শিক্ষার্থীদের কেউ যদি গ্রন্থাগারের বই নিয়ে পড়তেও চান, লাইব্রেরিতে সে সুযোগ খুব কম। কেননা লাইব্রেরিতে ‘আসন দখলে’র জন্য ভোর থেকে যে অপেক্ষা করতে হয়, সেটি বর্তমান শিক্ষার্থীদের অনেকেই করতে চান না। জানতে চাইলে গ্রন্থাগারিক অধ্যাপক নাসির উদ্দীন মুন্সী বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, নানান সীমাবদ্ধতা থাকলেও গ্রন্থাগারে নানান ধরনের রিসোর্স আছে। কিন্তু শিক্ষার্থীদের খুব কম সংখ্যকই সেগুলো ব্যবহার করে। লাখ লাখ টাকা খরচ করে এসব রিসোর্স সংগ্রহ করা হলেও ব্যবহারকারী খুবই সীমিত।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর