বৃহস্পতিবার, ১২ অক্টোবর, ২০২৩ ০০:০০ টা

এমপি হতে চান তৃণমূল নেতারাও

চট্টগ্রামে থানা থেকে শুরু করে ওয়ার্ড পর্যায়ে অনেক নেতা চেয়েছেন নৌকার মনোনয়ন

আজহার মাহমুদ, চট্টগ্রাম

টানা তিন মেয়াদে আওয়ামী লীগের ক্ষমতায় থাকা এবং নির্বাচনে প্রার্থী মনোনয়নে নানামুখী চমকের ফলে দলটির তৃণমূলের নেতারাও এখন সংসদ সদস্য হওয়ার স্বপ্ন দেখেন। সময় সংসদ নির্বাচনে দলের মনোনীত প্রার্থী হওয়াটা একদা অনেক কঠিন ব্যাপার মনে করা হলেও বর্তমানে অনেকেই মনোনয়ন প্রাপ্তি সহজ মনে করছেন। চট্টগ্রামের সাম্প্রতিক দুটি উপনির্বাচন পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, থানা থেকে শুরু করে ওয়ার্ড পর্যায়ে পর্যন্ত তৃণমূলের অনেক নেতা নৌকার মনোনয়ন চেয়েছেন। আবার আওয়ামী লীগের সহযোগী একাধিক সংগঠনের তৃণমূলের নেতা এবং উপকমিটির সদস্যরাও দলীয় মনোনয়ন চেয়েছিলেন। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও চট্টগ্রাম-১৬ আসনে তৃণমূলের দুই শতাধিক প্রার্থী দলীয় মনোনয়ন চাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। চলতি বছরের ২৭ এপ্রিল অনুষ্ঠিত চট্টগ্রাম-৮ আসনের উপনির্বাচনে ক্ষমতাসীন দলের মনোনয়নপ্রত্যাশী ছিলেন ২৭ জন। যাদের অর্ধেকের বেশি থানা ও ওয়ার্ড পর্যায়ের ছোট পদধারী। এদের মধ্যে চারজন ওয়ার্ড পর্যায়ের, একজন থানা পর্যায়ের নেতা। এ ছাড়া নগর, দক্ষিণ, বোয়ালখালী উপজেলা আওয়ামী লীগ এবং আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কয়েকটি উপ-কমিটির সাবেক ও বর্তমান নেতারাও মনোনয়ন চেয়েছেন। অনেকে প্রাথমিক সদস্যপদ ধারণ করে মনোনয়ন চেয়েছেন। আগামী নির্বাচনেও তারা নৌকার মনোনয়ন চাইবেন। তেমনি একজন হচ্ছেন নগরীর ৫ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সদস্য সুকুমার চৌধুরী। আলাপকালে তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ অনেক বড় দল। এখানে নানা পর্যায়ের নেতা আছেন। সবার মনোনয়ন চাওয়ার অধিকার আছে। আমরা তৃণমূলকে সঙ্গে নিয়ে রাজনীতি করি। আমাকে দল মনোনয়ন দিলে জয় উপহার দেব। অন্য কাউকে দিলেও তার জন্য কাজ করব।’ আওয়ামী লীগের প্রয়াত বর্ষীয়ান নেতা সেকান্দার হায়াত খানের ছেলে আশেক রসুল খানও ওয়ার্ড পর্যায়ের রাজনীতি করে নৌকার মনোনয়ন চেয়েছিলেন। দল চাইলে আগামী নির্বাচনেও তিনি প্রার্থী হতে আগ্রহী। এ প্রসঙ্গে আশেক রসুল বলেন, ‘আমি ওয়ার্ডে রাজনীতি করি ঠিক। কিন্তু আরও অনেকগুলো সামাজিক সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত।

বাবা বর্ষীয়ান নেতা ছিলেন। মানুষ আমাদের ভালোবাসে। বাবার ধারাবাহিকতা রক্ষায় দলের হয়ে কাজ করতে চাই।’

আহমেদ ফায়সাল চৌধুরী ২২ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সদস্য। উপনির্বাচনে তিনি মনোনয়ন চেয়েছেন। আগামী সংসদ নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘তৃণমূলে রাজনীতি করার কারণে মানুষের সুখ-দুঃখ, এলাকার সুবিধা অসুবিধা জানি। তৃণমূল থেকে কেউ যদি সংসদে যেতে পারে, এটা রাজনীতির জন্য ইতিবাচক।’

এই আসনের মতো একই অবস্থা দেখা গেছে গত ৩০ জুলাই অনুষ্ঠিত চট্টগ্রাম-১০ আসনের উপনির্বাচনে। এই আসনে যিনি নৌকা প্রতীক নিয়ে এমপি নির্বাচিত হয়েছেন তিনিও অপেক্ষাকৃত তরুণ ও তৃণমূল থেকে উঠে আসা নেতা। এই আসনের নির্বাচনে নৌকার মনোনয়ন চেয়েছিলেন ২৩ জন প্রার্থী। তাদের মধ্যে আছেন আগ্রাবাদ ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক মোহাম্মদ রেজওয়ান, পাহাড়তলী থানা আওয়ামী লীগের সদস্য মো. এরশাদুল আমীন, উত্তর আগ্রাবাদ ওয়ার্ডের প্রাথমিক সদস্য মো. জাবেদ নজরুল ইসলাম, পাহাড়তলী থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. আসলাম হোসেন, সদরঘাট থানা আওয়ামী লীগের সদস্য মো. রাশেদুল হাসানসহ বেশ কয়েকজন তৃণমূলের নেতা।

তৃণমূলের একাধিক নেতা বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়নের ব্যাপারটা এখন দলীয় প্রধানের সদিচ্ছার ওপর নির্ভর করে। তিনি চাইলে যে কেউ মনোনয়ন পেতে পারেন। তিনি ইতোমধ্যে অনেক আসনে চমক দেখিয়েছেন। অনেক এমপি ইতোমধ্যে বিতর্কিত। সুতরাং আগামী নির্বাচনেও নানা চমক থাকবে। তাছাড়া সিনিয়র নেতাদের চেয়ে তৃণমূলের নেতাদের সঙ্গে ভোটারদের সরাসরি যোগাযোগ বেশি। তৃণমূলের নেতারাই বড় নেতা-এমপি তৈরি করেন। তাহলে তৃণমূলের কেউ মনোনয়ন পেলে ভোটাররা বরং খুশি হবেন।’

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর