শুক্রবার, ১৩ অক্টোবর, ২০২৩ ০০:০০ টা
রায়হান হত্যা মামলা

আরেক সাক্ষীকে জেরা, ২০ লাখ টাকায় আপসের প্রস্তাব

নিজস্ব প্রতিবেদক, সিলেট

সিলেট নগরীর বন্দরবাজার ফাঁড়িতে পুলিশি নির্যাতনে যুবক রায়হান আহমদ হত্যা মামলায় আরেক সাক্ষীকে আবার জেরা করেছেন আসামি পক্ষের আইনজীবী। গতকাল দুপুরে মহানগর দায়রা জজ এ কিউ এম নাসির উদ্দিনের আদালতে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শাহরিয়ার আল মামুনকে জেরা করা হয়। এর আগে শাহরিয়ার আল মামুনসহ মামলার ৫৬ জন সাক্ষী সাক্ষ্য দিয়েছিলেন। কিন্তু আসামি পক্ষের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সাত সাক্ষীকে আবার জেরার অনুমতি দেন আদালত। এদিকে, মামলা আপসের জন্য সিটি করপোরেশনের স্থানীয় এক কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে ২০ লাখ টাকার প্রস্তাব দেওয়ার অভিযোগ তুলেছেন রায়হানের মা সালমা বেগম। বাদী পক্ষের আইনজীবী মো. আবুল ফজল চৌধুরী বলেন, ‘বৃহস্পতিবার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শাহরিয়ার আল মামুনকে আবার জেরা করেছেন আসামিপক্ষের আইনজীবী। দ্রুততম সময়ের মধ্যে বাকি সাক্ষীদেরও জেরা শেষ হবে বলে আমরা আশাবাদী।’ এদিকে, রায়হানের মা সালমা বেগম অভিযোগ করেছেন, মামলার আসামিরা আপস করার জন্য বিভিন্নভাবে চাপ সৃষ্টি করছে। সিলেট সিটি করপোরেশনের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মখলিছুর রহমান কামরানের মাধ্যমে ২০ লাখ টাকায় আপসের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। শওকত নামের স্থানীয় আরেক ব্যক্তির মাধ্যমেও ২০ লাখ টাকায় আপসের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। সবশেষ জেলগেটে মামলার প্রধান আসামি এসআই (বরখাস্ত) আকবর হোসেন রায়হানের চাচাকে ৫০ লাখ টাকার বিনিময়ে আপসের প্রস্তাব দেয়। কিন্তু আমরা তাতে রাজি হইনি। সালমা বেগম বলেন, তিনি টাকা নয়, ছেলে হত্যার সঙ্গে জড়িতদের সর্বোচ্চ শাস্তি ফাঁসি দেখতে চান।

তবে আপস প্রস্তাবের অভিযোগ অস্বীকার করে সিসিক কাউন্সিলর মখলিছুর রহমান কামরান বলেন, ‘রায়হানের মায়ের বক্তব্য সঠিক নয়। শুনেছি শওকত নামের স্থানীয় একজনের মাধ্যমে এ প্রস্তাব দিয়েছিল আসামিরা, আমার মাধ্যমে নয়।’

প্রসঙ্গত, ২০২০ সালের ১০ অক্টোবর রাতে নগরের আখালিয়ার নেহারীপাড়ার বাসিন্দা রায়হান আহমদকে বন্দরবাজার ফাঁড়িতে ধরে আনে পুলিশ। ১০ হাজার টাকা উৎকোচের জন্য ভোর পর্যন্ত তাকে নির্যাতন করা হয়। সকাল ৬টা থেকে তাকে ফাঁড়ি থেকে ওসমানী হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সকাল ৭টা ৫০ মিনিটে রায়হান হাসপাতালে মারা যান। এ ঘটনায় রায়হানের স্ত্রী তাহমিনা আক্তার তান্নি বাদী হয়ে হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইনে কোতোয়ালি থানায় মামলা দায়ের করেন। শুরুতে কোতোয়ালি থানার এসআই আবদুল বাতেন মামলাটি তদন্ত করেন। পরে তদন্তভার পিবিআইর কাছে স্থানান্তর করা হয়।

 

এদিকে, ঘটনার পর প্রধান অভিযুক্ত বন্দরবাজার ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই আকবর হোসেন ভূঁইয়া ভারতে পালিয়ে যায়। ঘটনার ২৮ দিন পর ৯ নভেম্বর কানাইঘাটের ডনা সীমান্ত এলাকায় ভারতের অভ্যন্তরে খাসিয়াদের হাতে আটক হয় আকবর। পরে তাকে গ্রেফতার করে সিলেটে নিয়ে আসা হয়।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর