শিরোনাম
শনিবার, ১৪ অক্টোবর, ২০২৩ ০০:০০ টা

চারুকলায় শরৎবরণ

সাংস্কৃতিক প্রতিবেদক

চারুকলায় শরৎবরণ

কাশফুলের স্নিগ্ধতা আর শিউলি ফুলের মাতাল হাওয়ায় প্রকৃতিতে দোলা দেয় ষড়ঋতুর বৈচিত্র্যময় ঋতু শরৎ। অনিন্দ্যসুন্দর এই ঋতু তার রূপ সুষমায় আবহমান বাংলার রূপ-বৈচিত্রে?্য ভিন্নতা এনে দেয়। এখন চলছে শরতের পড়ন্ত সময়। সুরের মূর্ছনা, নৃত্যের ছন্দ ও কবিতার দীপ্ত উচ্চারণে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদে শরৎকে বরণ করেছে রাজধানীর বাসিন্দারা। শিল্পীরা নাচে-গানে ফুটিয়ে তুললেন আবহমান বাংলার অপরূপ ঋতুবৈচিত্র্য। যেখানে লোকজ সংস্কৃতির ধারা অব্যাহত রাখার শপথও ধ্বনিত হলো সম্মিলিত কণ্ঠে। গতকাল সকালে সত্যেন সেন শিল্পীগোষ্ঠীর আয়োজনে চারুকলার বকুলতলায় অনুষ্ঠিত হয় এই আয়োজন। এটি ছিল নিয়মিত আয়োজনের ১৮তম আসর। শরৎ উৎসবের প্রথম পর্বের শেষভাগে অনুষ্ঠানস্থলে আসেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান। এ সময় উপস্থিত ছিলেন সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুছ এবং সত্যেন সেন শিল্পীগোষ্ঠীর সভাপতি নৃত্যজন অধ্যাপক নিগার চৌধুরী। স্বাগত বক্তব্য দেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মানজার চৌধুরী সুইট। আসাদুজ্জামান খান বলেন, বাংলাদেশের সংস্কৃতি অনেক সমৃদ্ধ। সেই সংস্কৃতি, সেই ঐতিহ্য আমরা হারিয়ে ফেলছি। অথচ আমাদের লোকজ সংগীতের টানে কত দেশের মানুষ এ দেশের গ্রামগঞ্জে ঘুরে বেড়ায়। আজ সত্যেন সেন শিল্পীগোষ্ঠী শরৎ উৎসবের আয়োজন করে সেই ঐতিহ্যকে ধরে রাখার প্রয়াস চালিয়েছেন, তাদের এই প্রয়াস সত্যিই প্রশংসনীয়। এর আগে রাগ কোমল ঋষভ আশাবরী পরিবেশনায় উৎসবের সাংস্কৃতিক পর্বের সূচনা করেন শিল্পী অভিজিৎ কুন্ডু। এরপর প্রথিতযশা নজরুলসংগীত শিল্পী সালাউদ্দিন আহমেদ পরিবেশন করেন ‘এসো শারদ প্রাতের পথিক’, শারমিন সাথী ময়না শোনান অতুল প্রসাদ সেনের ‘মেঘেরা দল বেঁধে যায় কোন দেশে’, রবীন্দ্রসংগীত শিল্পী অণিমা রায় শোনান ‘অমল ধবল পালে’ ও ‘নয়ন ভুলানো এলে’। নবীন শিল্পী শ্রাবণী গুহ রায় শোনান বানি কুমারের ‘বাজলো তোমার আলোর বেণু’, নবনীতা জাইদ চৌধুরী অনন্যা শোনান নজরুলসংগীত ‘ভোরের ঝিলের জলে শালুক পদ্ম দোলে’। দলীয় সংগীত পর্বে সত্যেন সেন শিল্পীগোষ্ঠী পরিবেশন করে নজরুলসংগীত ‘নম নম নম বাংলাদেশ মম’ এবং রবীন্দ্রসংগীত ‘শরৎ তোমার অরুণ আলোর অঞ্জলি’, পঞ্চভাস্বরের শিল্পীরা শোনান ‘শরতে আজ কোন অতিথি এলো প্রাণের দ্বারে’। পরে বাফা, সুরবিহারের শিল্পীরা সম্মিলিত কণ্ঠে শরতের গান পরিবেশন করেন। আবৃত্তি পর্বে নায়লা তারাননুম চৌধুরী কাকলি শোনান নির্মলেন্দু গুণের কবিতা ‘কাশবনের কাব্য’। শিশু-কিশোর সংগঠন শিল্পবৃত্তের শিশুশিল্পীদের কণ্ঠে পরিবেশিত হয় শরৎ বন্দনা। দলীয় নৃত্য পর্বে ‘শরৎ আমার স্নিগ্ধতায় অপরূপ তুমি অনন্যা’ গানের সঙ্গে স্পন্দনের শিল্পীরা পরিবেশন করেন সম্মিলিত নৃত্য। রবীন্দ্রসংগীত ‘জয় তব বিচিত্র আনন্দ হে’ গানের সঙ্গে সম্মিলিত নৃত্য পরিবেশন করেন ভাবনার শিল্পীরা।

এছাড়াও বাফা, নৃত্যাক্ষ, কথক নৃত্য সম্প্রদায়, বাংলাদেশ পুলিশ থিয়েটার অ্যান্ড কালচারাল ক্লাবের শিল্পীরা সম্মিলিত নৃত্য পরিবেশন করেন। শরৎ উৎসবের সাংস্কৃতিক পর্বটি শেষ হলে বকুলতলায় অনুষ্ঠিত হয় শিশু-কিশোরদের উন্মুক্ত চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা।

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর