রবিবার, ১৫ অক্টোবর, ২০২৩ ০০:০০ টা

শ্রমিকদের সামাজিক নিরাপত্তায় প্রয়োজন সমন্বিত উদ্যোগ

কালের কণ্ঠ ও জিআইজেড-এর গোলটেবিল

নিজস্ব প্রতিবেদক

একটা বয়সে এসে শ্রমিকরা কর্মক্ষমতা হারাচ্ছে। ফলে তাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে এক প্রকার শঙ্কা দেখা দিচ্ছে। এই শঙ্কা দূরীকরণে তথ্য ঘাটতি বা কোনো যথাযথ ডেটা না থাকায় শ্রমিকদের জন্য সামাজিক সুরক্ষা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। পাশাপাশি পেশাগত কারণে শ্রমিকরা যে অসুস্থ হচ্ছে সে বিষয়ে সরকার ঠিকমতো সুরক্ষা দিতে পারছে না। যার ফলে শ্রমিকদের সুরক্ষার বিষয়টি সংবিধানে থাকলেও এটি বাস্তবায়ন হচ্ছে না বলে মনে করছেন বিশিষ্টজনেরা। তাই শ্রমিকদের সামাজিক নিরাপত্তায় সমন্বিত উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন মনে করছেন তারা।

গতকাল রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় ইস্ট ওয়েস্ট মিডিয়া লিমিটেড (ইডব্লিউএমজিএল) কনফারেন্স হলে ‘শ্রমিকদের সামাজিক সুরক্ষা বাংলাদেশের শ্রম খাতের সুষম উন্নয়ন’ শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনা সভায় এ মতামত দেন বক্তারা। গোলটেবিল আলোচনা সভাটি যৌথভাবে আয়োজন করে দৈনিক কালের কণ্ঠ ও জিআইজেড।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের শ্রম অনুবিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. তৌফিকুল আরিফ, অ্যাকশন এইড বাংলাদেশের উইমেন রাইটস অ্যান্ড জেন্ডার ইকুইটি ম্যানেজার মরিয়ম নেছা, বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব হেলথ অ্যান্ড সায়েন্সের অধ্যাপক ড. মাহমুদ ফারুকী, সোশ্যাল প্রোটেকশন পলিসি সাপোর্ট ইউএনডিপি প্রোগ্রাম ম্যানেজার আমিনুল আরিফীন, আইএলওর সোশ্যাল প্রোটেকশনের ন্যাশনাল প্রোগ্রাম অফিসার ফারজানা রেজা, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের সভাপতি রাজেকুজ্জামান রতন, বাংলাদেশ এমপ্লয়ার্স ফেডারেশনের মহাসচিব ফারুক আহমেদ, বিলসের নির্বাহী কমিটির সম্পাদক সাকিল আখতার  চৌধুরী প্রমুখ। অতিরিক্ত সচিব মো. তৌফিকুল আরিফ বলেন, সামাজিক সুরক্ষা বলতে আমরা বুঝি একটা দেশের জনগণের সুরক্ষার বিষয়। আর এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে শ্রমিকের সুরক্ষার বিষয়। আমাদের শ্রম আইনে শ্রমিকের সুরক্ষার বিষয়ে অনেক কিছুই আছে। আমাদের এখানে এককভাবে সিদ্ধান্ত দেওয়ার সুযোগ নেই। মালিক ও শ্রমিক প্রতিনিধির সঙ্গে আলোচনা করতে হয়। ন্যূনতম মজুরি পুনর্নির্ধারণ করতে এখানে যখন কোনো শ্রমিক প্রতিনিধি বা মালিক প্রতিনিধির নাম চাওয়া হয় তখন তা এক বছরেও পাওয়া যায় না। তথ্য ঘাটতির কারণে শ্রমিকদের জন্য সামাজিক সুরক্ষা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, রপ্তানিমুখী শিল্পের কর্মহীন হয়ে পড়া শ্রমিক এবং দুস্থ শ্রমিকদের জন্য সুরক্ষা কার্যক্রম এবং নীতিমালা নেওয়া হয়েছে। সেখানে বাস্তবিক অর্থে তথ্যের ঘাটতি থাকার কারণে, যে সব শ্রমিকদের এই সহায়তার প্রয়োজন ছিল। তাদেরকে আমরা তা দিতে পারিনি। একটা বয়সে শ্রমিকদের কর্মক্ষমতা হারানোর ফলে তাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে যে শঙ্কা, সেটা দূরীকরণে নিশ্চিত ভবিষ্যৎ প্রদান করতে সরকার কাজ করছে উল্লেখ করে সোশ্যাল প্রোটেকশন পলিসি সাপোর্ট ইউএনডিপি প্রোগ্রাম ম্যানেজার আমিনুল আরিফীন বলেন, গার্মেন্টের যারা টেকনিক্যাল এক্সপার্ট তারা অন্য চাকরিজীবীদের মতো দীর্ঘ সময় ধরে করতে পারে না। কারণ তার বয়স যখন ৩৫ বছরের বেশি হয়ে যায়, তখন সে আর আগের মতো পরিশ্রম করতে পারে না। তাই দেখা যায় একটা সময় তার আয়ের ক্ষেত্রে এক ধরনের অনিশ্চিয়তা দেখা দেয়। বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব হেলথ অ্যান্ড সায়েন্সের অধ্যাপক ড. মাহমুদ ফারুকী বলেন, শ্রমিকরা পেশাগত কারণে যে অসুস্থ হয়। সে বিষয়ে সুরক্ষা দিতে পারি না। বাংলাদেশ এমপ্লয়ার্স ফেডারেশনের মহাসচিব ফারুক আহমেদ বলেন, সবারই অধিকার আছে সামাজিক সুরক্ষা পাওয়া। তবে শ্রমিকদের ক্ষেত্রে এটা আরও ভালোভাবে বাস্তবায়ন করার প্রয়োজন। প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদেরও সামাজিক সুরক্ষার প্রয়োজন আছে। জাতীয় সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের সভাপতি রাজেকুজ্জামান রতন বলেন, শ্রমিকরা কোনো কিছুই ফ্রিতে নেয় না। সমাজে তাদের কোনো না কোনো অবদান থাকে।

 

 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর