সোমবার, ১৬ অক্টোবর, ২০২৩ ০০:০০ টা

মেঘনার দুই পয়েন্টে অবাধে চলছে মা ইলিশ নিধন

রাহাত খান, বরিশাল

মেঘনার দুই পয়েন্টে অবাধে চলছে মা ইলিশ নিধন

নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে বরিশালের হিজলা উপজেলার মেঘনা নদীর ছোট মেঘনা, গঙ্গাপুর ও আবুপুর এলাকায় দেদার চলছে ইলিশ শিকার। প্রতিদিন দুই বেলা জোয়ার শুরুর সময় থেকে প্রায় সারা দিনই ওইসব এলাকায় অবাধে ইলিশ নিধন চলছে। উপজেলা প্রশাসন, মৎস্য বিভাগ, নৌ-পুলিশ, কোস্টগার্ড এবং নৌবাহিনী ওইসব এলাকায় তেমন টহলে যায় না বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা অভিযান চালাতে গিয়ে জেলেদের সঙ্গে প্রতিরোধের মুখে পড়ার কথা জানিয়েছেন। ইলিশ নিধন হচ্ছে বলে স্বীকার করেছেন জেলা মৎস্য কর্মকর্তা। তবে অভিযান জোরদার করার কথা বলেন তিনি। হিজলার মেঘনা, ছোট মেঘনা, গঙ্গাপুর ও আবুপুর এলাকার নদীতীরের বাসিন্দারা জানিয়েছেন, প্রতিদিন বিকাল ৩টা এবং রাত ৩টার দিকে দুইবার নদীতে জোয়ার হয়। ওই সময় নদীতে প্রচুর ইলিশ ধরা পড়ে। দুই জোয়ারসহ সব সময় মেঘনা, ছোট মেঘনা, গঙ্গাপুর ও আবুপুর এলাকার ইলিশ শিকার করছেন জেলেরা। পেছন থেকে শক্তি জুগিয়ে তাদের দিয়ে ইলিশ শিকার করাচ্ছেন মাসুদ লটিয়া, দিদার ব্যাপারী, হালিম মেম্বারের ছেলে বেল্লাল ও তার সহযোগীরা। ধরা পড়া ইলিশ ওইসব এলাকার বিভিন্ন স্থানে রাখা রেফ্রিজারেটরে সংরক্ষণ করা হয়।

মাটির নিচেও রেফ্রিজারেটর পুঁতে রেখে ইলিশ সংরক্ষণ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কর্মকর্তারা। তাদের অভিযোগ, বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহযোগিতা নিয়ে মা ইলিশ রক্ষা অভিযানে অগ্রগামী ভূমিকা রাখার কথা উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তাদের। মৎস্য কর্মকর্তা ছাড়া অভিযান না করার বাধ্যবাধকতা থাকায় তিনি বিনিময় করে একটি বিশেষ গোষ্ঠীকে ছাড় দিতে ওইসব এলাকায় অভিযান শিথিল করেছেন। এ কারণে দিনরাত সব সময় ওইসব পয়েন্টে চলে ইলিশ নিধন।

অভিযোগ অস্বীকার করে হিজলা উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা এম এম পারভেজ বলেন, আমরা অভিযান পরিচালনা করছি। বড় মেঘনায় প্রতিদিন আমাদের সঙ্গে সংঘর্ষ হচ্ছে।  সেখান থেকে জেলে আটক করতেছি। বিশেষ গোষ্ঠীকে সুবিধা দেওয়ার বিষয়ে কিছু জানা নেই। এ পর্যন্ত হিজলায় প্রথম দিন চারজন, দ্বিতীয় দিন সাতজন এবং তৃতীয় দিন ছয় জেলেকে আটক করা হয়েছে। অসংখ্য ট্রলার আটক করেছি, সেগুলো নিলাম হবে।

জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. আসাদুজ্জামান বলেন, মাছ যে একেবারে ধরছে না, সে কথা আমি বলব না। কিছু কিছু জায়গায় অসাধু জেলেরা মাছ ধরছে। যারা প্রকৃতপক্ষে সিজনাল। গঙ্গাপুর আবুপুর ওখানে হয়। ওখানে তো নৌ-পুলিশের ক্যাম্প আছে, সার্বক্ষণিক অস্থায়ী ক্যাম্প আছে। তারপরও যেহেতু তথ্যগুলো এসেছে আমরা অপারেশন জোরদার করার চেষ্টা করছি। তিনি নৌ-পুলিশের অস্থায়ী ক্যাম্পের সঙ্গে কথা বলার পরামর্শ দেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা প্রশাসক শহিদুল ইসলাম বলেন, তারা যাতে কোনোভাবেই মাছ ধরতে না পারে সে জন্য জেলা প্রশাসনের নজরদারি অব্যাহত আছে। ডিমওয়ালা ইলিশ সংরক্ষণে ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা আগামী ২ নভেম্বর শেষ হবে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর