বৃহস্পতিবার, ১৯ অক্টোবর, ২০২৩ ০০:০০ টা

চাঙা হওয়ার চেষ্টায় চট্টগ্রাম জাপা

সম্মেলন নিয়ে নেতা-কর্মীদের অসন্তোষ কাটেনি

আজহার মাহমুদ, চট্টগ্রাম

চাঙা হওয়ার চেষ্টায় চট্টগ্রাম জাপা

আগামী সংসদ নির্বাচন ঘিরে চাঙা হওয়ার চেষ্টা করছে দীর্ঘদিন ঝিমিয়ে থাকা চট্টগ্রাম মহানগর জাতীয় পার্টি (জাপা)। ইতোমধ্যে সম্মেলনের মাধ্যমে চট্টগ্রাম জাপার নতুন কমিটি গঠন করা হয়েছে। আগামী নির্বাচনে অংশ নিতে নগর ও উপজেলার কয়েকটি আসনে দলটির সম্ভাব্য প্রার্থীদের তৎপরতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। যদিও সদ্য অনুষ্ঠিত সম্মেলন ঘিরে সংগঠনের একাংশের নেতা-কর্মীদের মধ্যে অসন্তোষ রয়েছে। চট্টগ্রাম নগর জাপার সর্বশেষ কমিটি হয় ২০১৮ সালে। এরপর কিছুদিন দলের কার্যক্রম চোখে পড়লেও তিন বছর ধরে নগরে সংগঠনটির কার্যক্রম ছিল না বললেই চলে। এর মধ্যে প্রায় পাঁচ বছর পর গত ১৪ অক্টোবর সোলায়মান আলম শেঠকে পুনরায় সভাপতি এবং আবু জাফর মাহমুদ কামালকে সাধারণ সম্পাদক করে চট্টগ্রাম নগর জাপার নতুন কমিটি গঠন করা হয়। দলের নেতা-কর্মীর একাংশের ভাষ্য, ওই সম্মেলন ছিল দীর্ঘদিন পর অনুষ্ঠিত সংগঠনটির বড় কোনো আয়োজন। ওই আয়োজনে দলের চেয়ারম্যান জি এম কাদের, সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ এমপি, মহাসচিব মো. মুজিবুল হক চুন্নু এমপিসহ বেশ কয়েকজন নেতা উপস্থিত ছিলেন। মূলত এর পর থেকে নেতা-কর্মীদের মধ্যে কিছুটা চাঙাভাব লক্ষণীয়। সম্মেলন ঘিরে নগর জাপার আরেকটি পক্ষের মধ্যে বিতর্ক ও অসন্তোষ রয়েছে বলে জানা গেছে। ওই পক্ষের নেতারা সম্মেলন বর্জন করেছেন। জানতে চাইলে নগর জাপার আগের কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক রেজাউল করিম রেজা বলেন, ‘ওটা একপেশে সম্মেলন হয়েছে। অনেক নেতা-কর্মী দাওয়াতও পাননি। তবু কেন্দ্রীয় নেতাদের সিদ্ধান্তের বাইরে আমরা যেতে পারি না। নির্বাচন নিয়ে প্রস্তুতি নিচ্ছি। যেসব আসনে আমাদের প্রার্থী থাকবে তাদের বিজয়ী করতে আমরা মাঠে আছি।’ এদিকে দলের চেয়ারম্যান জি এম কাদের আগামী নির্বাচনে ৩০০ আসনে প্রার্থী দেওয়ার কথা বললেও চট্টগ্রামের ১৬ আসনের মধ্যে মিরসরাই, সীতাকুণ্ড, সন্দ্বীপসহ বেশ কয়েকটিতে জাপার অস্তিত্ব বিলীন হওয়ার পথে।

যদিও হাটহাজারী ও নগরীর কয়েকটি আসনে বেশ কয়েকজন কেন্দ্রীয় নেতা নির্বাচনে অংশ নেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। এর মধ্যে চট্টগ্রাম-৫ আসনে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন বর্তমান এমপি ও দলের সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান সাবেক মন্ত্রী ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ। এ আসন থেকে টানা তিনবারের এই এমপির মনোনয়ন অনেকটা নিশ্চিত বলেই মনে করেন নেতা-কর্মীরা।

এ ছাড়া চট্টগ্রাম-৯ আসনে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন দলের চেয়ারম্যানের বিশেষ উপদেষ্টা ব্যারিস্টার সানজিদ রশিদ চৌধুরী। ঐতিহ্যবাহী রাজনৈতিক পরিবারের সন্তান ব্যারিস্টার সানজিদের মা প্রয়াত প্রফেসর ড. মাসুদা এম রশিদ চৌধুরী সংরক্ষিত আসনের এমপি ছিলেন। বাবা প্রয়াত অ্যাডভোকেট এ বি এম ফজলে রশিদ চৌধুরী ছিলেন জাপার প্রতিষ্ঠাতা প্রেসিডিয়াম সদস্য। রাউজানের বর্তমান এমপি এ বি এম ফজলে করিম চৌধুরী তাঁর চাচা।

জানতে চাইলে তরুণ এই নেতা বলেন বলেন, ‘আমার পরিবারের সবাই আজীবন মানুষের জন্য কাজ করেছেন। আমি তাঁদের ধারাবাহিকতা রক্ষা করতে চাই। চট্টগ্রাম-৯ আসনে আমার আত্মীয়স্বজন অনেকের বাস। আমি এ আসনের মানুষের জন্য কিছু করতে চাই। একটি শিক্ষিত প্রজন্ম এবং আধুনিক, দুর্নীতিমুক্ত ও পরিচ্ছন্ন নগরী তৈরিতে কাজ করতে চাই।’

চট্টগ্রাম-১০ আসনের উপনির্বাচনে অংশ নেওয়া মো. শামসুল আলম একই আসন থেকে আগামী নির্বাচনেও প্রার্থী হতে চান। তিনি বলেন, ‘আমরা সার্বিক প্রস্তুতি নিচ্ছি। তবে দল কী সিদ্ধান্ত নেয়, কোন পথে নির্বাচন হচ্ছে সবকিছুর ওপর প্রার্থী হওয়া-না হওয়া নির্ভর করছে।’

এ ছাড়া এ আসন থেকে চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা মোরশেদ মুরাদ ইব্রাহিম, চট্টগ্রাম-১১ আসন থেকে নগর সভাপতি সোলায়মান আলম শেঠ, চট্টগ্রাম-৮ আসনে এয়াকুব হোসেন, চট্টগ্রাম-১২ আসনে সাবেক এমপি সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, চট্টগ্রাম-১৬ আসনে সাবেক সিটি মেয়র মাহমুদুল ইসলাম চৌধুরী নির্বাচনে অংশ নেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে জানান নেতা-কর্মীরা।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর